চলমান সংবাদ

সিপিবি কোতোয়ালি থানা সম্মেলন

-দুঃশাসন হটিয়ে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের সংগ্রাম গড়ে তোলার আহবান

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার সম্মেলনে বক্তব্য প্রদান করছেন কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়ামের সদস্য ডাঃ শাহিন রহমান

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার কোতোয়ালি থানার সম্মেলন গতকাল ১ মার্চ  সকাল ১০ টায় আন্দরকিল্লাস্থ অস্থায়ী কার্যালয়ে কাউন্সিল অধিবেশন এবং বিকাল ৪ টায় আন্দরকিল্লা মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সিপিবি কোতোয়ালি থানার সভাপতি কমরেড প্রদীপ ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে  এবং সিপিবি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাবেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহিন রহমান, সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা,  সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভুঁইয়া প্রমুখ। সম্মেলনের শুরুতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা করেন সিপিবি সংস্কৃতিক শাখা।

সম্মেলনে বক্তারা বলেন,  মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর অতিক্রম করেছে। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জণগণ যে ধরনের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন, দেশ আজ তার উল্টোপথ ধরে চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-ধারা ও রাষ্ট্রীয় চার মূলনীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে ক্ষমতাসীন সরকার গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করে সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বায়নের অধীনস্থ পুঁজিবাদের বাজারি ধারায় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। উন্নয়ন এর গলা ফাটানো প্রচারণা চালালেও, দেশের সামগ্রিক সামাজিক-অর্থনৈতিক-রাজনৈতিক অবস্থা দিনদিন শুধু খারাপই হচ্ছে। মানুষের জীবন সংকট তীব্রতর হচ্ছে। নুন থেকে পেঁয়াজ, নিত্য ব্যবহার্য সকল দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। গ্যাস-পানির দাম বৃদ্ধি, চাকরিবিহীন উন্নয়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্য নিয়ে ব্যবসা, সামাজিক নৈরাজ্য, ধর্ষণ-খুন, শিশু ও নারী হত্যা-পাচার, সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গী তৎপরতা চলছে। রাষ্ট্র প্রশাসন, বিচার বিভাগ, এমনকি সংসদের উপর ও কতৃত্ব করছে লুটেরা শ্রেণী আর আমলাতন্ত্র। রাষ্ট্র প্রচণ্ড নিপীড়ণের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে আজ গণতন্ত্র ও সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার ভুলুণ্ঠিত। স্বৈরাচার এরশাদের পতনের মধ্য দিয়ে মানুষ তার ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছিল তা আজ নির্বাসনে চলে গেছে। এরশাদ স্বৈরাচারের পতনের পর গত ৩৩ বছরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি বারবার ক্ষমতায় এসেছে কিন্তু গণতন্ত্র আসেনি। এদের অপরাজনীতি, গণতন্ত্র ও গণবিরোধী রাজনীতি দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে রেখেছে। এর থেকে মানুষ মুক্তি চায়।  দুর্নীতি, লুটপাট, সাম্প্রদায়িকতাকে পরাজিত করে গণতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য আওয়ামী ও বিএনপি ধারার বাইরে বাম গণতান্ত্রিক প্রগতিশীলদের বিকল্প শক্তি সমাবেশ গড়ে তুলতে হবে। ‘ভাত ও ভোটের’ সংগ্রামকে অপ্রতিরোধ্য করে তুলে বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির সরকার প্রতিষ্ঠার সুস্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই আজকের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য। সংগ্রামকে এই নতুন পর্বে কমিউনিস্ট পার্টিকেই আরও শক্তভাবে হাল ধরতে হবে।
সম্মেলনে বক্তারা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ডিসি হিলে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড চালু করা, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসন, মরনফাঁদ নালা নর্দমার সংস্কার, নগরীতে পর্যাপ্ত খেলার মাঠের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে স্থানীয় গণ আন্দোলন গড়ে তোলার  ডাক দেন।