শিল্প সাহিত্য

সেলিনা সুমির কবিতা

তোমাকে একটা চিঠি লিখবো ভাবতেই মহাকাব্যের পাহাড়সম পংক্তিমালা এসে হাজির…
এত কথা জমে গেছে এক যুগ সময় ধরে?
শুধু এই টুকুই জানাই আজ তবে,
তোমাকে ছাড়া যাইনি কোন গ্রাম্য মেলায় শখের
যত্তসব বায়না নিয়ে,
একদিনও ইচ্ছে হয়নি পড়ি পাটের শাড়ি,
হাত ভর্তি চুড়ি পড়িনাই বলে আলসেমিতে  চুড়ির আলনায় ঘুন ধরেছে সেই কবে।
বকুল, শিউলী গাছগুলো আজ অনেক বড়
রিতিমতো উঠোন ভরে যায় ফুলে আর
বাড়ি জুড়ে তুমি তুমি একটা ঘ্রাণ,
আমি উঠোনে পা ফেলি খুব যতন করে
নীলকন্ঠি, অপরাজিতার লতা পা জড়িয়ে যায় তবু
আমি পালাতে পারিনা, আমি মরতেও পারিনা।
সন্ধ্যেটা আসে মন খারাপের ঝুড়ি নিয়ে
আমি তাতে কৈশোর, শৈশব আর তারুন্যের স্মৃতি জমাই
তারপরও দেখি কেমন খালি খালি লাগে,
যেইনা আমি তোমার আনা বেলী ফুলের মালা খোপায় জড়ানোর গল্প বলি অমনি ঝুড়ি ভরে ভরে একাকার।
জোনাক জ্বলা রাতটা এখনো কেমন যেন
না বলতে পারা অব্যক্ত কথামালা, ভালবাসা জমছে খুব
নদীর পাড়ে সন্ধ্যা নামে যখন খুব বুঝতে পারি জানো!
আমাদের বিষখালী নদীর ঐ যে বাঁকটা
তোমার আর আমার যেখানে স্বপ্ন বোনার কথা ছিল
একটা ছোট্ট মাটির ঘর, মাটির পিদিম, মাটির আরশি
সেখানে থৈথৈ জোনাক পোকায়, কত কত সাদা আলো
আমি কাদামাটি মেখে ঐ আলোয় তোমায় খুঁজি।
আর কি জানাবো!
না, টিপের পাতাগুলো এখনো শেষ হয়নি
প্রতিদিন নিয়ম করেই পড়ি সব রং, তবুও ঘুরে ফিরে
কালো রংটাই বেশি, কখনো সিঁদূর লাল।
চাঁদের আলোয় সব টিপের রং এক হয়ে যায়, ধুসর কেমন।
আমি এভাবেই আছি,
তোমাকে ভালবাসবার পর আর কিছুই আগের মতন থাকবেনা, তুমি বলেছিলে বারবার।
জেনে কি ভাববে জানিনা, আমার সব কিছুই আমুল
বদলে গেছে, শেষোব্দি আমি ভালবেসেছি তোমাকেই।