un

রোগ নির্ণয় রিপোর্টে ৮ বছর আগে মৃত চিকিৎসকের নাম

রোগ নির্ণয়ের এই রিপোর্টে মৃত চিকিৎসক রেজাউল করিমের নাম ছাপা হয়েছে
রোগ নির্ণয়ের এই রিপোর্টে মৃত চিকিৎসক রেজাউল করিমের নাম ছাপা হয়েছেসংগৃহীত

আট বছর আগে মারা যাওয়া এক চিকিৎসকের নাম–সংবলিত সিল ব্যবহার করে রিপোর্ট প্রদান করে আসছিল শেভরন রোগনির্ণয় কেন্দ্র। দিনের পর দিন এ ধরনের প্রতারণার ঘটনা নজরে এসেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের। এরপর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী শেভরন ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি লিমিটেডকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।

৩ সেপ্টেম্বর দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে মো. রেজাউল করিম নামের ওই চিকিৎসককে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে সশরীর হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয় শেভরন কর্তৃপক্ষকে। পাশাপাশি ওই চিকিৎসকের নিয়োগপত্র, বিএমডিসি নিবন্ধন এবং এমবিবিএস সনদও দেখাতে বলা হয়। তিন কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা প্রদান এবং ওই চিকিৎসককে হাজির করতে বলা হয়েছে।

নোটিশে বলা হয়, ‘২৬ আগস্ট রোকেয়া বেগম (৫৮) নামের এক রোগীকে আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে ইকোকার্ডিওগ্রাফি রিপোর্ট প্রদান করা হয়। রিপোর্টে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে মো. রেজাউল করিমের নাম ব্যবহার করা হয়েছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘মো. রেজাউল করিম নামের চিকিৎসকের নাম ব্যবহার করে সই ব্যতীত রিপোর্ট প্রদান প্রতিশ্রুত সেবা প্রদানকে ব্যাহত করে, যা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯–এর ৪৫ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ছাড়া ভুয়া নাম ও পদবি ব্যবহার বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০–এর পরিপন্থী।’

জানতে চাইলে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেজাউল করিম মারা গেছেন ২০১৫ সালে। মৃত ব্যক্তির নাম–সংবলিত সিল ব্যবহার করে রিপোর্ট প্রদান একধরনের প্রতারণার শামিল। এতে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। শেভরন কর্তৃপক্ষ আমার দপ্তরে এসে মৌখিকভাবে ভুল স্বীকার করে গেছে। আমি বলেছি লিখিত জবাব দিতে।’

রোকেয়া বেগমের ইকোকার্ডিওগ্রাফি রিপোর্টটিতে দেখা যায়, নিচে বাঁ দিকে মো. নুরুল ইসলাম নামের এক হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের নাম, পদবি ও স্বাক্ষর রয়েছে। নিচে ডান পাশে রয়েছে মো. রেজাউল করিমের নাম ও পদবি। তবে ওখানে কোনো সই নেই। উল্লেখ্য, হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ মো. রেজাউল করিম ২০১৫ সালের ২২ জুন মারা যান। বিষয়টি শেভরন কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছে।

জানতে চাইলে শেভরন ল্যাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশ্বনাথ দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই চিকিৎসকের নাম ও স্বাক্ষর ব্যবহার করে একসময় ইকোকার্ডিওগ্রাফির রিপোর্ট দেওয়া হতো। রেজাউল করিম মারা যাওয়ার পরও তাঁর নামটি রিপোর্টের ফরম্যাট প্যাডে রয়ে গেছে। কিন্তু স্বাক্ষর করা হয় না। এটা আমাদের ভুল হয়েছে।’

বিশ্বনাথ দাশ আরও বলেন, ‘সিভিল সার্জন এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়টি বড় করে আমাদের নোটিশ দিয়েছেন। তিনি একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র চেয়েছিলেন সিভিল সার্জন কার্যালয়ের জন্য। সেটি না দেওয়াতে তিনি আমাদের পেছনে লেগেছেন।’

এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।