চলমান সংবাদ

জাহাজ ভাঙ্গা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের সাথে মত বিনিময় ও প্রকল্প পরিচিতি সভা

‘গ্রীন ডেভেলপমেন্ট, জাষ্ট ট্রানজিশন এন্ড ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়নে ডেনিস ট্রেড ইউনিয়ন ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি- ডিটিডিএ’র সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ-বিলস উদ্যোগে এক মত বিনিময় ও প্রকল্প পরিচিতি সভা বিগত ১৭ জুলাই সকাল ১০টায় স্থানীয় এশিয়ান এস আর হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়|

জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের  যুগ্মআহ্বায়ক এ এম নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় জাহাজ ভাঙা শিল্প শ্রমিকদের জন্য গৃহীত কার্যক্রম ও প্রকল্প পরিচিতি বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে আলোচনা উপস্থাপন করেন বিলস এর সম্মানিত পরিচালক কোহিনুর মাহমুদ। অতঃপর প্রকল্প কার্যক্রম বাস্তবায়নে দিকনির্দেশনা ও মতামত প্রদান করেন জাতীয় শ্রমিক লীগের শফি বাঙালি, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের শ ম জামাল, ফোরামের কোষাধ্যক্ষ রিজওয়ানুর রহমান খান, বিএমএসএফ এর মোঃ নুরুল আফসার, বিএফটিউসির কে এম শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের রবিউল হক শিমুল, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ ইদ্রিছ, মানিক মণ্ডল প্রমুখ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, জাহাজ ভাঙা শিল্প একদিকে দুর্ঘটনা প্রবণ ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্র অন্যদিকে ভাঙ্গার জন্য যে জাহাজগুলো আনা হয় সেগুলোতে বিভিন্ন হ্যাজার্ড এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ বিদ্যমান থাকায়  তা পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই জাহাজ ভাঙা শিল্পকে পরিবেশ বান্ধব এবং  দুর্ঘটনা ও ঝুঁকিমুক্ত করা বড় চ্যালেঞ্জ।

সভায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক হংকং কনভেনশন রেটিফাই করায় সন্তোষ প্রকাশ করা হয় তবে হংকং কনভেশনের মান ও গাইডলাইন অনুসরণ শিপ ইয়ার্ড সমূহ পরিচালনা করা না গেলে কোন ইতিবাচক প্রভাব শিল্পে পড়বেনা বলে অভিমত ব্যাক্ত করা হয়।  সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, হংকং কনভেনশনকে কমপ্লাই করার উদ্দেশ্যে ২০১৮ সালে শিপ ব্রেকিং এন্ড রিসাইক্লিং আইন করা হলেও ২০২৩ সাল পর্যন্ত মাত্র ৩টি  ইয়ার্ড গ্রীন শিপ ইয়ার্ডের সনদ পেয়েছে যা খুবই দুঃখজনক।

সভায় শ্রমিকদের নিয়োগপত্র ও পরিচয় পত্র প্রদান, সরকার ঘোষিত ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন, চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ বন্ধ করা, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী রাত্রিকালীন কাজ বন্ধ রাখা এবং অতিরিক্ত কর্মঘন্টা কাজ না করানো, শ্রমিকের পেশাগত ও স্বাস্থ্য নিরাপত্তা এবং কর্ম দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করা, প্রত্যেক ইয়ার্ডে দক্ষ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সনদধারী সেফটি অফিসার নিয়োগ প্রদান, শ্রমিকদের মান সম্পন্ন এবং উপযুক্ত ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জামাদি ব্যবহার নিশ্চিত করার দাবীও জানানো হয়।

সভায় আরো বলা হয়, জাহাজ ভাঙা শিল্পকে “জাহাজ ভাঙা ও রিসাইক্লিং” নামকরন করে অনাহুত বিতর্ক ও জটিলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, এই শিল্পে কেবল জাহাজ ভাঙা হয় তাই এই শিল্পকে শুধুমাত্র ‘জাহাজ ভাঙা’ শিল্প হিসাবে বিবেচনা করতে হবে এবং এখানে রিসাইক্লিং যুক্ত করার কোন সুযোগ নেই।

সভায় জাহাজ ভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামকে পুনর্গঠন করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয় এবং প্রকল্প কার্যক্রম সফলভাবে সম্পাদন করার লক্ষে ২০ জনের একটি স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়।

# ২১/০৭/২০২৩, চট্টগ্রাম