বিজ্ঞান প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ভাবনা (৯৩): পঞ্জিকা বিতর্ক

-বিজন সাহা

বিজন সাহা (ফাইল ছবি)

আগের পর্বে আমরা পঞ্জিকা নিয়ে অনেক কথা বলেছি। সেখানে দেখিয়েছি যে প্রাচীন কাল থেকেই এই ভূখণ্ডে পঞ্জিকা ছিল বা পঞ্জিকা থাকার অবজেক্টিভ রিয়ালিটি ছিল। তাই এখানে বাংলা পঞ্জিকা, বিশেষ করে বাংলা পার্বণ, ঋতু ভিত্তিক বাংলার উৎসব, বাংলার সংস্কৃতিতে আকবরের অবদান খোঁজা ঠিক নয়। এটা অনেকটা এরকম। স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের শুরু ১৯৭১ থেকে, তার মানে এই নয় যে ১৯৭১ সালে আগে এই ভূখণ্ডের, এখানকার মানুষের হাজার বছরের ইতিহাস ছিল না, এই ভূখণ্ডের মানুষ বার মাসে তের পার্বণ পালন করত না, নবান্নের উৎসব, নববর্ষ এসব করত না। আসলে শশাঙ্ক বা আকবরের বিতর্কে আমরা বাঙালির গৌরবময় অতীতকেই অস্বীকার করি, জাতি হিসেবে নিজেদের ছোট করি। মানুষের জাতিগত পরিচয় ধর্মের চেয়ে অনেক মৌলিক, জাতিগত পরিচয় বায়োলজিক্যাল, জন্মগত এবং জিনের মাধ্যমে বংশপরম্পরায় প্রবাহিত – যা মুছে ফেলা যায় না। এমনকি প্রজন্মের পর প্রজন্ম বিদেশে বাস করে ভিন্ন জাতির ছেলেমেয়েদের বিয়ে করে যদি ডিএনএ টেস্ট করেন ঠিকই বাঙালির অস্তিত্ব সেখানে পাবেন, কিন্তু আপনি হিন্দু না মুসলমান, বৌদ্ধ না খ্রিস্টান সেই পরিচয় কোন মেডিক্যাল টেস্ট দেবে না, দেবে আপনার নাম বা পাসপোর্ট। তাই জাতিগত পরিচয় সহজাত, ধর্মীয় পরিচয় আরোপিত। সেদিক থেকে ধর্মীয় পরিচয় পরিবর্তনশীল। আপনারা নিজেরাই তার বড় প্রমাণ কারণ বিশ্বে ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব দেড় হাজার বছর আগে আর বাংলা এলাকার অধিকাংশ মুসলমান ধর্মান্তরিত। এটাই প্রমাণ করে কোনটা মৌলিক – ধর্ম না জাতি। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে আপনারা কেউ কিন্তু আরব হয়ে যাননি। তাই নিজের উৎসকে সম্মান করতে শিখুন, দেখবেন তাহলে এরকম অনেক উটকো সমস্যা এড়িয়ে চলতে পারবেন। আপনি যদি হিন্দু বা মুসলমান বলে গর্বিত বোধ করতে পারেন বাঙালি বলে গর্ববোধ করতে দোষ কোথায়? তাছাড়া চান্দ্র পঞ্জিকা অনেক আগেই পৃথিবীতে ছিল। আরবের লোকজন কৃষিকাজ করত না, ব্যবসা করত, কাফেলা নিয়ে দূরদূরান্তে যেত। মরুভুমিতে রাতই ছিল এ জন্য উপযোগী সময়। ফলে সূর্যের চেয়ে চাঁদ ছিল তাদের জীবনে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই তাদের ক্যালেন্ডার ধর্মীয় কারণে নয়, জীবনের জন্য এভাবে হয়েছে। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেই দেশের ভূগোল বদলে যায় না, ফলে সেই পঞ্জিকা ধরে চলা আমাদের সাজে না। আর এ কারণেই আকবর বাধ্য হন এখানে সৌর পঞ্জিকা অনুসরণ করতে। এটা তাঁর বুদ্ধমত্তার পরিচয়।

কেউ কেউ প্রশ্ন করে সনাতনী পঞ্জিকা নিয়ে, কেননা বাংলাদেশে ১৪ এপ্রিলকে পয়লা বৈশাখ ধার্য করার ফলে এক ধরণের দ্বৈত ব্যবস্থা দেখা দিয়েছে। সরকার চাইলে অনেক ঘোষণাই দিতে পারে, কিন্তু মানুষ তো সেভাবে করে না, মানুষ করে নিজেদের সামাজিক ও ধর্মীয় যুক্তি থেকে। শুনেছি দেশে এখন স্থানীয় ও সৌদি আরবের ধারায় দু’ দিন ঈদ হয়। আমার বন্ধুদের অনেকেই মস্কোয় ঈদ করে দেশে যায় পরের দিন সেখানে ঈদ করার জন্য। কথা হল, যে ক্যালেন্ডার আমাদের সরকারি কাজে ব্যবহার করা হয় না, যে ক্যালেন্ডার ধরে মূলত হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের লোকজন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান করে সেটা কি বদলানোর আদৌ দরকার ছিল? কই, চীনে নববর্ষ তো একেক বছর একেক সময়ে আসে, এ নিয়ে তাদের তো কোন সমস্যা নেই, বরং পশ্চিমা বিশ্ব চীনের পঞ্জিকাকে সম্মান দেয়। আমাদের দেশে এখনও ঈদ হয় আকাশে চাঁদ দেখে, পঞ্জিকা ধরে নয়। তাহলে আমরা কেন পারি না গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের সাথে খাপ না খাইয়ে নিজেদের মত পথ চলতে? পারি না নিজেদের হীনমন্যতার জন্য নিজেদের রীতিনীতি, সংস্কৃতি প্রমোট না করে তাকে বিতর্কিত করে তুলি বলে।

যদি একটু খেয়াল করেন দেখবেন বাংলা মাসের নামগুলো বিভিন্ন নক্ষত্রের (বৈশাখ – বিশাখা, জ্যৈষ্ঠ – জ্যেষ্ঠা, আষাঢ় – আষাঢ়া, শ্রাবণ – শ্রবনা, ভাদ্র – ভদ্রপদ, আশ্বিন – অশ্বিনী, কার্তিক – কৃত্তিকা, অগ্রহায়ণ – মৃগশিরা, পৌষ – পুষ্যা, মাঘ – মঘা, ফাল্গুন – ফাল্গুনী, চৈত্র – চিত্রা) সাথে আর বারের নাম সূর্য (রবি) চন্দ্র (সোম) ও গ্রহের (মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি) সাথে জড়িত। একই ভাবে খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার বিভিন্ন দেবদেবী বা ধর্মীয় উৎসবের সাথে সম্পৃক্ত, যদিও জুলাই থেকে ডিসেম্বর পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম (সেপ্টেম্বর), অষ্টম (অক্টোবর), নবম (নভেম্বর), দশম (ডিসেম্বর) নামে পরিচিত। পরে পঞ্চম মাস (কুইন্টিলস) জুলিয়াস সিজারের নামানুসারে জুলাই আর ষষ্ঠ মাস (সিক্সটিলস) অগাস্টাস সিজারের নামানুসারে পরিবর্তন করা হয় অগাস্টাস সিজারের শাসন কালে। এখানে ছোট্ট একটা কথা। আজ আমরা লিখি অ্যালেক্সান্ডার দ্য গ্রেট খ্রিস্টপূর্ব ৩৩৬ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। কিন্তু তখন কি কেউ জানত সেদিন থেকে ৩৩৬ বছর পরে যীশুর জন্ম হবে? এর মানে এমন কি খ্রিস্টের জন্মের পূর্বেও ক্যালেন্ডার ছিল। কিন্তু পরে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের প্রয়োজনে নতুন পঞ্জিকার প্রবর্তন করে। তাই যদি সত্যকে আবিষ্কার করতে চান প্রথমেই নিজেকে পক্ষপাত মুক্ত করুন। আপনি যদি ধরেই নেন যে শশাঙ্ক বা আকবর বাংলা সালের প্রবর্তক – তাহলে আপনি শুধু নিজের মতের পক্ষে যুক্তি খুঁজবেন। সত্য নয় নিজেকে সঠিক প্রমাণ করাই হবে আপনার লক্ষ্য। এটা উকিলের নিজের মক্কেলকে বাঁচানোর চেষ্টার মত, সত্যিকারের অপরাধী খুঁজে বের করা তার কাজ নয়। কিন্তু আপনি যদি খোলা মনে সত্যের সন্ধানে নামেন তাহলে ঠিকই সত্যের সন্ধান পাবেন, সেটা নিজের বিশ্বাসের সাথে মিলতে পারে আবার নাও মিলতে পারে। কিন্তু মনে রাখবেন বিশ্বাসের চেয়ে সত্য বড়। আর সত্যটা হচ্ছে যখন থেকে এই অঞ্চলের মানুষ চাষাবাদ শুরু করে তারা নিজেদের প্রয়োজনে পঞ্জিকার প্রচলন করে। তখন হয়তো এর লিখিত রূপ ছিল না, যেমন লিখিত রূপ ছিল না রামায়ণ, মাহাভারত থেকে শুরু করে অনেক গ্রন্থের। অনেক দিন সেসব কাহিনী মৌখিক ভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয় গায়কেরা, পরে তা লিপিবদ্ধ করা হয়। তারপরেও আমরা বাল্মিকী বা বেদব্যাস বা হোমারকে রামায়ণ, মহাভারত, ইলিয়াড বা অডিসির লেখক বা রচয়িতা হিসেবে মেনে নেই। ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রে তাহলে কেন শশাঙ্ক বা আকবরকে নিয়ে বিবাদ করতে হবে?  করতে হবে কারণ তাঁদের একজন হিন্দু আরেকজন মুসলমান। শশাঙ্ক যখন গৌড়ের রাজা ছিলেন তখন এদেশে সুলতানি আমল শুরু হয়নি। তাঁর সমস্ত যুদ্ধ ছিল বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে বিশ্ব রাজনীতিতে ইসলামের সাথে ইহুদিদের বিবাদই প্রধান যদিও খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধেও তাদের জিহাদ চলেছিল একসময়। তিনটি আব্রাহামিক ধর্মের মধ্যে খ্রিষ্টান ধর্মের উৎপত্তি ইহুদি ধর্ম থেকে। যিশু নিজেও ইহুদি ছিলেন। অন্যদিকে ইসলাম অনেক ধর্মীয় রীতিনীতি ইহুদি ধর্ম থেকে গ্রহণ করেছে। ভারতীয় উপমহাদেশে হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন প্রথার প্রতিবাদে গড়ে ওঠে বৌদ্ধ, জৈন, শিখ এসব ধর্ম। ইসলামের আগমনের পূর্বে বৌদ্ধ ধর্ম ছিল হিন্দু ধর্মের জন্য হুমকি স্বরূপ। ফলে সে সময় ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক কলহটা ছিল হিন্দু ও বৌদ্ধদের মধ্যে। এক সময় ভারতবর্ষ থেকে বৌদ্ধ ধর্ম প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেলে আর ইসলামি শাসন শুরু হলে সেই সাথে চলে আসে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব। বর্তমানে ক্যালেন্ডার বিতর্ক আসলে সেই সাম্প্রদায়িক কলহের ভিন্ন রূপ। আমার বিশ্বাস শশাঙ্ক বা আকবর যদি ইহুদি বা খ্রিষ্টান হতেন তাহলে এই বিতর্ক জন্ম নিত না। আমরা পশ্চিমা বিশ্বের অনেক কিছুই বিনা দ্বিধায় মেনে নিতে পারি কিন্তু এসবের অনেক কিছুই যে এক সময় ভারতবর্ষে সৃষ্টি হয়েছিল আর তা আরব স্কলারদের মাধ্যমে ইউরোপে পৌঁছেছিল সেটা স্বীকার করতে পারি না। এটা শুধু ইসলামের ক্ষেত্রেই নয় হিন্দু ধর্মের ক্ষেত্রেও সত্য। আর্যরা উপমহাদেশে আসার অনেক আগেই যে এখানে স্থানীয় সভ্যতা ছিল আর হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো সভ্যতা যে সেই প্রমাণই দিয়ে যাচ্ছে সেটা আমরা সবাই গ্রহণ করতে পারি না। এক শ্রেণির হিন্দু যেমন প্রাকআর্য ইতিহাস মেনে নিতে চায় না, তেমনি মুসলমানও ইসলামের আগের ইতিহাস, ঐতিহ্য এসব মেনে নিতে চায় না। কিন্তু ধর্মের ইতিহাস দেখায় সেটা শূন্য থেকে আসেনি, প্রচলিত বিভিন্ন বিশ্বাসকে গ্রহণযোগ্য রূপ দিয়েই ধর্ম গড়ে উঠেছে। ইসলাম ধর্ম ইহুদি ধর্ম থেকে অনেক প্রথা গ্রহণ করলেও সেটা নিজদের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে আর সেটা করেছে আরবের ভৌগলিক, সামাজিক ও ঐতিহাসিক পটভূমিকে মাথায় রেখেই। বাইবেলের ভাষ্য অনুযায়ী ঈশ্বর নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী সাত দিনে জল, স্থল, আকাশ, জীবজন্তু, মানুষ এসব তৈরি করেন। কিন্তু কোন মানুষের পক্ষে আর শূন্য থেকে কিছু গড়া সম্ভব নয়। সব কিছুর পেছনেই বিভিন্ন কারণ থাকে, ইচ্ছেটাই যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পেছনে শুধু বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা বা ঘোষণাই যথেষ্ট ছিল না, এর পেছনে ছিল পাকিস্তানি শোষকদের অত্যাচার, বাঙালি জাতির দীর্ঘ ২৪ বছরের লড়াই। একই ভাবে শশাঙ্ক বা আকবর – যেই পঞ্জিকার প্রবর্তন করুন না কেন এর পেছনে ছিল মানুষের শিকারি থেকে কৃষিজীবী হবার দীর্ঘ ইতিহাস, আর সেটাই চরম সত্য। আমাদের কাছে যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন প্রকৃতির কাছে পঞ্জিকার কোনই গুরুত্ব নেই। সে জানে না এখন কোন বার, কোন মাস বা কোন বছর। বিজ্ঞানীদের হিসেব মতে প্রায় ১৩৮০ কোটি বছর আগে সময়ের শুরু, এরপর থেকে সে অবিরাম বয়ে চলছে সামনের দিকে। মানুষ বাদে অন্য কোন প্রাণীর এসবের দরকার আছে বলে মনে হয় না। তারা সূর্যের অবস্থান আর বাতাসের তাপমাত্রা থেকে বুঝে নেয় সেসব। আমাদের কাছে যেমন মাসের হিসেবে শীত বসন্ত আসে, ওদের কাছে আসে তাপমাত্রা থেকে। অনেক বার দেখেছি শীতের মাঝে গাছে পাতা গজাতে। কেমনে? ডিসেম্বরের শেষ বা জানুয়ারির শুরুতে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আমরা শীতের পোশাক না ওঠালেও অনেক গাছপালা বসন্ত এসে গেছে মনে করে ডানা মেলে দেয়। আমাদের কাজকর্মের সুবিধার জন্যই পঞ্জিকা, বার, মাস এসব দরকার। অনেকে যারা এসবের ধার না ধেরে বলে গণ্ডগোলের আগের বছর বা দুর্ভিক্ষের পরের বছর এর জন্ম, অমুক হাটের দিন ইত্যাদি। এই না জানা কিন্তু তার জীবনের জন্য সরাসরি হুমকি নয়, কিন্তু মানুষ এ জন্যেই মানুষ যে সে সব কিছু নিজের সুবিধা মত করে গড়ে তোলে। সে অর্থে পঞ্জিকাটাও এক ধরণের অস্ত্র – মূলত প্রকৃতির বিরুদ্ধে বা বলা চলে বিরূপ প্রকৃতির সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকার অস্ত্র। তাই বাংলা পঞ্জিকা বা বঙ্গাব্দ নিয়ে বিতর্ক এটা বাঙালিকে ছোট করার বিতর্ক – বাঙালি নয় হিন্দু না মুসলমান আগে এটা প্রতিষ্ঠা করার বিতর্ক, জাতি নয় ধর্মই আসল সেটা প্রমাণ করার বিতর্ক। ধর্মীয় বিবেচনা নয় জীবিকা অর্জনের বিবেচনা থেকেই আরবে চান্দ্র পঞ্জিকা এসেছে ঠিক যেমন অন্য সব দেশে এসেছে সৌর পঞ্জিকা। তাই বাংলা পঞ্জিকাকে যারা ধর্মীয় বা রাজনৈতিক টিকি বা টুপি দাড়ি পরাতে চায় তারা হয় কমন সেন্সের দারিদ্র্যে জর্জরিত অথবা দুরাভিসন্ধির ক্যান্সারে আক্রান্ত।

পড়ুন:  বিজ্ঞান ভাবনা (৯৪): লেনিন -বিজন সাহা  

পিকাসোকে একদিন এক ভদ্রমহিলা ছবি এঁকে দিতে বলেন। পিকাসো দ্রুত সেটা করে দিয়ে পয়সা চাইলে মহিলা বলেন মাত্র আধা ঘণ্টার কাজের জন্য এই পারিশ্রমিক খুব বেশি। উত্তরে পিকাসো বলেন – এটা তাঁর তিরিশ বছরের পরিশ্রমের ফল। আমাদের দেশেও অনেকেই ডাক্তারের কাছ থেকে ফিরে «মাত্র পাঁচ মিনিট দেখে এত ভিজিট নিলেন» বলে অভিযোগ করে। তারা ভুলে যায় মাত্র পাঁচ মিনিট দেখে রোগ নির্ণয় করার দক্ষতা অর্জন করার জন্য তাঁকে অনেক অনেক বছর পড়াশুনা করতে হয়েছে। জমির ফসল এক দিনেই কাটা যায়, কিন্তু সেই ফসল যাতে ফলে সেজন্যে মাসের পর মাস মাঠে কাজ করতে হয়। মানে এক দিনে কিছু হয় না। এটা বুঝলেই ক্যালেন্ডার বিতর্ক বিদায় নেবে আর বাঙালি হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মঙ্গল শোভাযাত্রায় বের হবে সব বাঙালির, সব মানুষের মঙ্গল কামনা করে।

গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ, দুবনা
শিক্ষক, গণ মৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয়, মস্কো, রাশিয়া