ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন।

আগামী ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলাদেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে এক ছাতার নিচে এনে কেন্দ্রীয়ভাবে শুধুমাত্র একটি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন- ইউজিসি।

এ লক্ষ্যে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) নামে আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনেরও পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

সেখানে ইউজিসির কর্মকর্তাসহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা থাকবেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে।

এ পরিকল্পনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েট ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্ত করার বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে।

শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সোমবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভায় এসব তথ্য জানা যায়। সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও ছিলেন।

তবে এনটিএ কোন ফর্মুলায় কাজ করবে, এর কার্যপরিধি কেমন হবে, কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে, ফলাফল নিরূপণ করা হবে কিভাবে- এসব প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির বিষয়েএখনও আলোচনা চলছে এবং এ নিয়ে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে ইউজিসি।

কর্মকর্তারা বলছেন, ইউজিসি, বিভিন্ন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রতিথযশা শিক্ষকরা একটি কমিটি গঠন করবে। সেই কমিটি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে।

তবে নতুন এই পদ্ধতি চালু হলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভোগান্তি কমবে, অর্থ সাশ্রয় হবে বলে মনে করছে ইউজিসি।

সংস্থাটি বলছে, উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তি এই নিয়মেই হয়। শুধু বাংলাদেশে আলাদা পরীক্ষা হয়ে আসছে। নতুন এই কর্তৃপক্ষ (এনটিএ) হলে ভর্তি পরীক্ষা শৃঙ্খলার মধ্যে আসবে।

শিক্ষার্থী
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরে ঘুরে একাধিক পরীক্ষা দিতে হয়।

একটি ভর্তি পরীক্ষার সুবিধা কী

বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট ১৫৬টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। এরমধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৬টি।

এসব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্যে প্রতিবছর গড়ে প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থীকে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে ঘুরে একাধিক পরীক্ষা দিতে হতো।

একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে আলাদা করে ফরম কেনা বাবদ খরচ কম নয়।

আবার নতুন শহরে গিয়ে হোটেলে থাকা, বাবা-মায়ের মধ্যে কে নিয়ে যাবেন, ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা দেয়ার ঝামেলা তো আছেই।

সবমিলিয়ে অর্থের পাশাপাশি সময়েরও অপচয় হতো।

শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদেরকে যাতে আর এ ধরনের হয়রানি পোহাতে না হয় সেজন্যে এই একটি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা।

এই পদ্ধতির সবচেয়ে বড় সুবিধা হবে, শিক্ষার্থীরা দেশের যেকোনো প্রান্তের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে, একই সময়ে এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। কোথাও আর আলাদা আলাদা পরীক্ষা দিতে হবে না।

ওই পরীক্ষায় পাওয়া ফলাফলের ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত যেকোনো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পাবেন।

যেমন: খুলনার কোন শিক্ষার্থী যদি বুয়েটে পড়াশোনা করতে চান তাহলে তাকে ঢাকায় গিয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে হবে না।

কুমিল্লারই কোন একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বসে তিনি এই পরীক্ষা দিতে পারবেন এবং বুয়েটের চাহিদা অনুযায়ী স্কোর বা নম্বর অর্জন করতে পারলে বুয়েটেও ভর্তি হতে পারবেন।

কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্যে কতো স্কোর থাকতে হবে সেটা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ই নির্ধারণ করবে।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিবিসি বাংলাকে জানান, “এনটিএ’র লক্ষ্য সব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষা হলে, এইচএসসি পাস করার পরে শিক্ষার্থীদের আর বসে থাকা লাগবে না। সুনির্দিষ্ট সময়ে পরীক্ষা হবে। সুনির্দিষ্ট সময়ে ক্লাস শুরু হবে।”

“এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের বাছাই করা সহজ হওয়ায় ফলাফল দিতেও দেরি হব না। বিভিন্ন পর্যায়ে অনেকগুলো পরীক্ষা দেয়ার ভোগান্তি এবং অভিভাবকদের আর্থিক চাপ থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে।” তিনি বলেন।

বুয়েট ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষার দিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড়।
বুয়েট ক্যাম্পাসে ভর্তি পরীক্ষার দিন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ভিড়।

গুচ্ছ পদ্ধতি কাজ করছে না

বাংলাদেশে একসময় একেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আলাদা আলাদা ভর্তি পরীক্ষা দিতে হতো।

কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগীয় পর্যায়েও আলাদা ভর্তি পরীক্ষা দিতে হতো।

এতে শিক্ষার্থীদের একদিকে যেমন ফরম কেনা, নতুন শহরে থাকা খাওয়া বাবদ অর্থ ব্যয় হতো পাশাপাশি নানা ভোগান্তি পোহাতে হতো।

শিক্ষার্থীদের এমন ভোগান্তি থেকে রেহাই দিতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনা চলে আসছে। যেটি কিনা বিশ্বের অন্যান্য দেশেও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির প্রচলিত পদ্ধতি।

এমন অবস্থায় প্রথম গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেয়া শুরু হয় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে সে সময় শুধুমাত্র সাতটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এই গুচ্ছ পদ্ধতিতে বা সমন্বিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।

পরবর্তীতে অন্যসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একই প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে আলোচনা শুরু হয়।

এরপর ২০২০ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় তিনটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়।

গুচ্ছ তিনটি হল: ১. সাধারণ, ২. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি/প্রকৌশল এবং ৩. কৃষি ও কৃষি প্রধান।

বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এই তিনটি গুচ্ছে নেওয়া হচ্ছে।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনে রাজি হয়নি।

এদিকে শুরুতে গুচ্ছ ভর্তিতে অংশ নিলেও পরবর্তীতে নানা জটিলতার অভিযোগ তুলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এতে গুচ্ছের আসল উদ্দেশ্য ভেস্তে যেতে বসেছে।

এই অবস্থায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং ন্যাশনাল টেস্টিং অথরিটি (এনটিএ) গঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের একজন সদস্য মোহাম্মদ আলমগীর বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন,

“বাংলাদেশের ৮০% বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় আওতায় আনা হলেও সেটি ফলপ্রসূ হয়নি। শতভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে আনতে না পারায় সমস্যার কোন উত্তরণ হয়নি। এজন্য সামনের শিক্ষাবর্ষ থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান

পরীক্ষার ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা চলমান

গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষাগুলোর প্রশ্নপত্র মূলত তৈরি হতো বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য এই তিনটি বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যসূচির ওপর ভিত্তি করে।

যে শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে যে বিষয়ে পড়েছেন তাকে শুধু সেই বিষয়েই পরীক্ষা দিতে হয়েছে।

তবে নতুন পদ্ধতিতে কোন ফর্মুলায় পরীক্ষা নেয়া হবে, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে কিভাবে সেটি এখনও বিচার বিশ্লেষণের পর্যায়ে আছে।

এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইউজিসির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন গঠন করার কথা রয়েছে।

“কিভাবে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে এক ছাতার নীচে আনা যাবে, কোন নিয়মে পরীক্ষা হবে, প্রশ্নপত্র একই হবে নাকি ডিসিপ্লিন অনুযায়ী আলাদা হবে, একক ভর্তি পরীক্ষার স্কোরের সাথে শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল মিলিয়ে মূল্যায়ন করা হবে কিনা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে, এছাড়া এনটিএ গঠন করা, এর আইন ও বিধিমালা তৈরি করা এবং নতুন পদ্ধতির বিষয়ে আস্থা তৈরি করার লক্ষ্যে কমিটি কাজ করবে। এজন্য সময় লাগবে।” বলেন মি. আলমগীর।

নতুন এই পদ্ধতিতে এখনও যে সব বিশ্ববিদ্যালয় সম্মতি জানিয়েছে সেটি বলা যাবে না। কমিটি কাজ করার পর ভবিষ্যতে হয়তো তারা এক হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এদিকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় নেয়ার বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাজি না হলেও নতুন এই এক পরীক্ষা পদ্ধতিকে বেশ ইতিবাচকভাবেই দেখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “এনটিএ গঠন হলে নিঃসন্দেহে একটি ভালো ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ হবে। বিশ্বের কোথাও আলাদা আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হয় না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে মিল রেখে আমাদের দেশেও ভর্তি পরীক্ষা সহজীকরণের প্রয়োজন আছে। তবে এখনও কোন কিছু বিস্তারিত বলার অবস্থায় আসেনি।”

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বিবিসি বাংলাকে জানান, “আমরা আপাতত বড় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করছি। ছোট সূক্ষ্ম বিষয়গুলো এখনও বিচার বিশ্লেষণের মধ্যে আছে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বতন্ত্রতা রক্ষা জরুরি

এনটিএ গঠনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা একমত দিলেও। এটি কিভাবে গঠন হবে, কাদের মাধ্যমে পরিচালিত সেই বিষয়গুলো আরও বিস্তারিত আলোচনা করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।

তবে এই পদ্ধতিতে বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্বতন্ত্রতা যেন বজায় থাকে সেদিকেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির নজর দেয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “এনটিএ এর আওতায় পরীক্ষা নেয়ার মেকানিজম কি হবে সেটা নির্ধারণ যেমন জরুরি তেমনি এই ভর্তি পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ কিভাবে নিশ্চিত হবে সেটা নির্ধারণ করাও জরুরি। যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্রতা বজায় থাকে। কিন্তু ইউজিসির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়নি। আবার তারা আমাদের এই দাবিকে অগ্রহণযোগ্যও বলেনি।”

তার মতে, শিক্ষার্থী নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেছে নেয়ার স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দেয়া বাঞ্ছনীয়।

মি. কামাল জানান, উন্নত দেশগুলোয় এনটিএ যেমন থাকে তেমনি বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব একটি চয়েসও থাকে। তারা অনেক শিক্ষার্থীদের পুনরায় পরীক্ষা নিয়ে মূল্যায়ন করতে পারে।

ওই বৈঠকে বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্রতা বা শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে এই বেছে নেয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়ার কথা জানানো হয়েছে।

ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি বিবেচনায় রাখবে বলে তারা আশা করছেন।

“আমরা চাই, এনটিএ যেন যেকোনো ভর্তি পরীক্ষার আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে এর সুবিধা অসুবিধাগুলো পর্যালোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে আরও সভা, আলোচনা ও বিচার-বিশ্লেষণের প্রয়োজন আছে।” বলেন মি. কামাল।

এদিকে বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়ের বড় উৎস হল ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি। নতুন পদ্ধতি চালু হলে সেদিকে কোণঠাসা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর।

তবে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজ একটি প্রস্তাবনায় বলেছেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে আর্থিক সহায়তা পায়। নতুন পদ্ধতিতে যে মেকানিজমেই পরীক্ষা হোক না কেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রীক যে সহযোগিতা আগে পেতো সেটি তারা পরবর্তীতেও পাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে ডিনস কার্যালয়।

পরীক্ষা পরিচালনা শেষে যে অর্থ থেকে যায় সেটি ডিন অফিসের সারা বছরের কার্যক্রম যেমন: ডিনস অ্যাওয়ার্ডস, গরিব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা ইত্যাদি পরিচালনার কাজে ব্যয় হয়। কারণ মঞ্জুরি কমিশনের কোন বাজেট সেখানে নাই। এমনটাই জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য।

সানজানা চৌধুরী, বিবিসি নিউজ বাংলা