চলমান সংবাদ

আন্দোলনের মাধ্যমেই চা শ্রমিকদের পূর্ণ বকেয়া মজুরি আদায় করতে হবে -১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি


আন্দোলন ছাড়া চা-শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের বিকল্প নেই, আন্দোলনের মাধ্যমেই পূর্ণ বকেয়া মজুরি আদায় করতে হবে- চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটি।
চা-শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি ৩০ হাজার টাকার পরিবর্তে ১১ হাজার টাকা প্রদানের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং পূর্ণ বকেয়া মজুরি পরিশোধের দাবিতে চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে আজ ৬ মার্চ ২০২৩ বিকাল ৫ টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চা-শ্রমিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য এবং গাজীপুর চা-বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শ্রমিকনেতা অশোক কুমার গোয়ালার সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য কৃষ্ণ দাস অলমিক এর সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, কুলাউরা উপজেলা কমিটির সভাপতি কমরেড আব্দুল লতিফ, সাধারণ সম্পাদক কমরেড সৈয়দ মোশাররফ আলী, চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এস এম শুভ, গাজিপুর চা-বাগানের সাবেক পঞ্চায়েত কমিটির নেতা বেনু সবর, চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন কমিটি, কুলাউড়া উপজেলা কমিটির আহবায়ক বিশ্বজিত দাস, সদস্য পূরণ ওরাং প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, চা-শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা বকেয়া মজুরি থেকে শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে চা-বাগান মালিকরা পায়তারা করছেন। আর তাতে মালিকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে সরকার। দীর্ঘ ৬ মাস অতিবাহিত হওয়ার পর এখন ৩০ হাজার টাকা বকেয়া মজুরির পরিবর্তে ১১ হাজার টাকা প্রদানের ঘোষণা শ্রমিকরা মানেন না। বহু বাগানের শ্রমিকরা এই সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই প্রত্যাখ্যান করেছেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ২০২১-২০২২ সালের নতুন মজুরি কার্যকর হয় ২০২২ সালের ২৮ আগস্ট। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত শ্রমিকরা পুরাতন মজুরি ১২০ টাকা পেয়ে এসেছেন নতুন মজুরি কার্যকর না হওয়ায়। ২৮ আগস্ট থেকে ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে নতুন মজুরি ১৭০ টাকা কার্যকর হয়। ফলে পূর্বের প্রায় ১৯ মাসের এবং ৬০৪ দিনের ৫০ টাকা হারে অর্থাৎ প্রায় ৩০ হকজার ২০০ টাকা বকেয়া মজুরি বা এরিয়ার পাওনা হয় শ্রমিকদের মালিকদের কাছে। বকেয়া মজুরি কোন ভিক্ষা করতে কিংবা অনুদান নয়, চা-শ্রমিকদের রক্ত পানি করা পরিশ্রমের উপার্জন। সেই উপার্জনের অর্থ পরিশোধ নিয়ে চলে মালিকপক্ষের টালবাহানা। চলে মালিকপক্ষের সাথে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের দফায় দফায় গোপন বৈঠক। বৈঠকে কি নিয়ে এত আলোচনা হয় তা জানানো হয় না শ্রমিকদের। অবশেষে ১ মার্চ ২০২৩ ঢাকায় সরকার, মালিক আর চা-শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ১১ হাজার টাকা পরিশোধের সিদ্ধান্ত জানায় শ্রম অধিদপ্তর। কেন পুরো বকেয়া মজুরি পরিশোধ করা হবে না, তা ব্যাখ্যা করারও প্রয়োজন মনে করেন নি সরকার, মালিক কিংবা চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেউ। চা-শ্রমিকদের সাথে এই স্বেচ্ছাচারিতা চলতে দেয়া যায় না।
সভাপতির বক্তব্যে অশোক কুমার গোয়ালা বলেন, আন্দোলন ছাড়া চা-শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের বিকল্প নেই। তাই কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমেই চা-শ্রমিকদের পূর্ণ বকেয়া মজুরি আদায় করা হবে।