চলমান সংবাদ

চীনের ২০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প

-দেড়শ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট ৬ তলা ভবনে থাকছে ১০ আইসিইউ, ২৫ এইচডিইউ ২টি অত্যাধুনিক অপারেশন থিয়েটার

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট স্থাপনের লক্ষ্যে ৫ সদস্যের চীনা টিম ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় আসে। ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে তারা চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। এর মাঝে প্রত্যেকদিনই হাসপাতালে গিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সাথে মতবিনিময় করছেন। বিশেষায়িত বার্ন ইউনিটের জন্য চূড়ান্ত করা গোঁয়াছি বাগানেও কয়েক দফা পরিদর্শন করেছেন। এর মাঝে স্থাপত্য অধিদপ্তরের এক স্থপতিসহ (আর্কিটেক্ট) গতকাল (৩ মার্চ) চট্টগ্রামে আসেন

সারাদেশে বার্ন চিকিৎসা সম্প্রসারণের দায়িত্ব পাওয়া ডা. সামন্ত লাল সেন। চট্টগ্রাম এসে সকালেই হাসপাতালের কনফারেন্স হলে চীনা টিমের সাথে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসেন। পরে চূড়ান্ত করা স্থান গোঁয়াছি বাগান পরির্দশনে যান। এসময় চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম

আহসান, চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার, হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ, গণপূর্ত বিভাগের (চট্টগ্রাম–১) নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ, নির্বাহী প্রকৌশলী (ইএম) মইনুল হক, স্থাপত্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী স্থপতি সিদ্দিকা নাসরিন সুলতানা, হাসপাতালের সহকারী

পরিচালক ডা. রাজিব পালিত, ডা. রুমা ভট্টাচার্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট স্থাপনে চীনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন চায়না কিউয়ান ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশনের বিজনেস ম্যানেজার (সাউথ এশিয়া) লিও বো।

প্রস্তাবনা অনুযায়ী, বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিট হবে দেড়শ শয্যার। এর মাঝে ১০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টিসহ মোট ২৫টি এইচডিইউ এবং অত্যাধুনিক দুটি অপারেশন থিয়েটার থাকবে। জরুরি বিভাগের পাশাপাশি বর্হিঃবিভাগও থাকবে। প্রাথমিকভাবে ৬ তলা ভবন নির্মাণের কথা বলা হয়েছে প্রস্তাবনায়। ভবনের

প্রতি ফ্লোরে স্পেস থাকবে ১৬ হাজার বর্গফুট। বার্ন ইউনিটের ৬ তলা এই ভবনের পাশাপাশি ইক্যুইপমেন্ট (সরঞ্জাম) স্থাপনের জন্য একতলা বিশিষ্ট আলাদা আরেকটি ভবন নির্মাণের প্রস্তাবনা রয়েছে জানিয়ে গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ বলেন, একতলা ভবনটিতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট, সাব–স্টেশন ও

জেনারেটরসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। প্রায় এক একর জায়গার উপর বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিট গড়ে তোলা হবে বলেও জানান নির্বাহী প্রকৌশলী রাহুল গুহ।

পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার (চীনা টাকায় প্রায় ১২০ মিলিয়ন ইউয়ান) ব্যয় নির্ধারণ করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এর শতভাগই অনুদান সহায়তা। অর্থাৎ সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিট করে দেবে চীন।

বিশেষায়িত এই বার্ন ইউনিট স্থাপনে আগামী ১০ মার্চ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ইআরডির সাথে চীনা কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক চুক্তি স্বাক্ষরের কথা রয়েছে বলে জানান ডা. সামন্ত লাল সেন। চুক্তি স্বাক্ষরের পরপরই তারা কাজ শুরু করতে আগ্রহী। এজন্য চূড়ান্ত করা স্থানে থাকা বিদ্যমান বিভিন্ন স্থাপনা সরাতে এরইমাঝে চীনা

প্রতিনিধি টিম অনুরোধ করেছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, তারা (চীনা টিম) যত দ্রুত সম্ভব জায়গাটি প্রস্তুত করে দিতে বলেছে। তারা কাজ শুরু করতে চায়। আমরা জায়গাটি বুঝিয়ে দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি। এদিকে, আগামী ২ বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করে বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিটের সেবা চালুর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সফররত চীনা টিমের প্রতিনিধিরা।