চলমান সংবাদ

পাহাড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ

বান্দরবানে সূর্যমুখী ফুল চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। স্বল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে পার্বত্য জেলায়ও। এর বীজ থেকে উৎপাদিত তেল কোলেস্টেরল মুক্ত ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়ায় বাজারে এ তেলের চাহিদাও বেশি। কৃষি বিভাগের মতে, জেলায় বান্দরবান সদর, লামা, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি, রোয়াংছড়িসহ সাতটি উপজেলায় দুই শতাধিক কৃষক সূর্যমুখী ফুলের চাষের সঙ্গে জড়িত।

জেলায় সাড়ে একত্রিশ হেক্টরের অধিক জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। বীজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে প্রণোদনার মাধ্যমে চাষ বাড়াতে দুইশ কৃষককে এক কেজি করে বীজ, ১০ কেজি ডিএমপি, ১০ কেজি এমপি সারসহ বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে প্রায় সাতমণ পর্যন্ত বীজ পাওয়া যায়। এককেজি বীজ থেকে উৎপাদন করা যায় কমপক্ষে আধা লিটার পর্যন্ত তেল। শতকপ্রতি জমিতে আট কেজি পর্যন্ত বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। এতে তেল উৎপাদন হবে কমপক্ষে সাড়ে তিন থেকে চার লিটার পর্যন্ত। ফুল থেকে উৎপাদিত তেলের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা লাভের স্বপ্ন দেখছেন। সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তৈরি তেল বাজারের অন্যান্য তেলের চেয়ে ভালো মানের। কোলেস্টেরলমুক্ত হওয়ায় এটির পুষ্টিগুণও বেশি। যে কারণে বাজারে এর চাহিদাও বেশি। 

লামার গজালিয়ার চাষি জাফর আলম ও আমতলী পাড়ার চাষি জগতিশ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সূর্যমুখী ফুলের বীজ থেকে তেল ও খৈল হয়। ফুলের ক্ষেতে মৌচাক বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মধুও সংগ্রহ করা যায়। এছাড়া শুকিয়ে যাওয়া গাছ জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। সূর্যমুখী বীজ বপণের ৯০ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যেই ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারেন। এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে প্রায় সাত মণ বীজ পাওয়া যায়। অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী ফুল চাষে খরচ কম। এতে সার ও ওষুধ কম লাগে। খুব বেশি পরিচর্যাও করতে হয় না। তাছাড়া অন্যান্য তেলবীজের তুলনায় বেশি তেল পাওয়া যায়।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম শাহনেওয়াজ বলেন, পুষ্টিচাহিদা পূরণে সূর্যমুখী তেলের বীজ আমদানি করতে হয়। আমদানি নির্ভরতা কমাতে সূর্যমুখী চাষ বাড়াতে কৃষকদের প্রণোদনার আওতায় বীজ, সার এবং প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। স্বল্প খরচে স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখী চাষ জনপ্রিয় হচ্ছে পাহাড়ে। এবার জেলায় শতাধিক একরের মত জমিতে সূর্যমুখীর চাষ হয়েছে। আগাম চাষ করা জমির অধিকাংশ গাছেই ফুল এসেছে। ভালো ফলনে বিক্রি করে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা।