চলমান সংবাদ

মস্কোতে রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়টি বিচ্ছিন্ন ঘটনাঃ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় থাকা রাশিয়ার ৬৯ জাহাজকে বাংলাদেশে ভিড়তে না দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর মস্কোতে রাষ্ট্রদূত কামরুলকে তলবের ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বিষয় হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেছেন, জাহাজ সম্পর্কিত এই সমস্যাটি কিন্তু তৈরি হয়েছিল আরও ৬ সপ্তাহ আগে। কিন্তু আমাদের রাষ্ট্রদূতকে আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখে। সুতরাং আমরা মনে করি যে, আমাদের দুদেশের বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না। খবর বিডিনিউজের।

গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়ার ভূমিকার কথা তুলে ধরে সেহেলী সাবরীন বলেন, আমরা কোভিড পরবর্তী সময়ে, এই রাশিয়া–ইউক্রেনের যে অস্থিতিশীল অবস্থা, সেই সময়ে অর্থনৈতিক মন্দা, তখনও আমাদের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপেও কিন্তু বাংলাদেশ–রাশিয়া একযোগে কাজ করে যাচ্ছে এবং আমাদের বোঝাপড়াটা এতটা ভালো যে আমরা মনে করি না যে জাহাজের একটি বিষয় নিয়ে দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সে ক্ষেত্রে কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম নিয়ে আসা রুশ জাহাজ ‘উরসা মেজর’ অনুমতি না পাওয়ায় পণ্য খালাস না করেই ভারতীয় জলসীমা থেকে ফিরে যায় গত জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই রাশিয়ার যেসব জাহাজ মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে, সেসব নৌযানের বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় প্রবেশে গত ১৬ জানুয়ারি নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। ওই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে গত মঙ্গলবার মস্কোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে তলব করা হয় বলে খবর দেয় দেশটির সংবাদসংস্থা তাস। তার দুদিন বাদে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই বক্তব্য এল।

রাষ্ট্রদূতকে তলবের বিষয়ে লিখিত বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, নিষেধাজ্ঞাভুক্ত রাশিয়ার ৭টি কোম্পানির ৬৯টি মাদার ভেসেলকে বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সরকারি নির্দেশনার প্রেক্ষিতে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুদেনকো আন্দ্রে ইউরেভিচ গত ২১ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসানকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানান। এ সময় রাশিয়ার উপ–পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা বিবেচনায় রাখার অনুরোধ জানান। এছাড়াও তিনি এ ঘটনায় রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়টি বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছে দেবার জন্য রাষ্ট্রদূতকে অনুরোধ করেন। আলোচনাকালে রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান করোনাভাইরাস মহামারী ও রাশিয়া–ইউক্রেন বিরোধের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক মন্দার কথা তুলে ধরেছেন উল্লেখ করে সেহেলী সাবরীন বলেন, পাশাপাশি তিনি রাশিয়ার ৬৯টি মাদার ভেসেলকে বাংলাদেশের বন্দরে ভিড়তে না দেওয়ার সরকারি নির্দেশনার প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থানও তুলে ধরেন।

তলবের সময় কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের প্রতিবেদন এসেছে কিনা এবং সরকারের প্রতিক্রিয়া কী– এমন প্রশ্নে মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ওই রিপোর্টে তিনি যা যা লিখেছেন, সেই সম্পর্কে আমাদের মন্ত্রণালয় এখন কাজ করছে এবং সে সম্পর্কে বিশ্লেষণও করা হচ্ছে এবং পরবর্তীতে আমরা কী পদক্ষেপ নিব বা কী করব, সেটা পরবর্তীতে আপনাদেরকে জানানো হবে।