চলমান সংবাদ

৮৭ বছর বয়সী আম গাছে ৪ তলা বাড়ি!

আমাদের সুস্থ ও সতেজ জীবন দিতে উদ্ভিদের অবদান অপরিসীম। গাছপালা আমাদের জীবনে খাদ্য এবং জলের মতোই গুরুত্বপূর্ণ, যা ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি না। গাছ লাগানো এবং গাছ কাটা থেকে বিরত থাকা পৃথিবীতে বসবাসকারী প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব, কিন্তু অনেকেই তা উপেক্ষা করেন। এদিকে রাজস্থানের হ্রদের শহর উদয়পুরে একজন প্রকৌশলী, গাছ না কেটে একটি সুন্দর বাড়ি তৈরি করেছেন, যার কিছু ছবি প্রতিনিয়ত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। গাছের উপর নির্মিত চারতলা বাড়িটি আজকাল আলোচনার বিষয় এবং সবাই তাঁর বাড়ির প্রশংসা করছে। কেপি সিংহের এই বাড়িটি পরিবেশ সুরক্ষার এক অনন্য উদাহরণও উপস্থাপন করে।


আসুন জেনে নেওয়া যাক বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত। রাজস্থানের হ্রদের শহর উদয়পুরে নিজের স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করেছেন প্রকৌশলী কেপি সিংহ। একটি আম গাছে তাঁর স্বপ্নের বাড়ি তৈরি করেছেন। এই অনন্য বাড়ির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হচ্ছে। আসলে গাছের ওপর তৈরি এই চারতলা বাড়িটি আশেপাশের মানুষের মধ্যে কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।এই চারতলা বাড়িটি গত ২০ থেকে ২২ বছর ধরে আম গাছে দাঁড়িয়ে আছে। কেপি সিংহ আজ পর্যন্ত এই আম গাছের একটি ডালও কাটেননি। এই বাড়িটি ‘ট্রি হাউস’ নামে পরিচিত। বিশেষ বিষয় হল উদয়পুরে আসা পর্যটকরাও এই বাড়ির প্রতি আকৃষ্ট হন।


ওয়ান ইন্ডিয়ার এক রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বাড়ির বিশেষত্ব হলো, গাছের উপর তৈরি হওয়া সত্ত্বেও এই বাড়িতে সমস্ত সুবিধা রয়েছে। এতে বসবাসের সময় প্রকৃতির কাছাকাছি থাকার অনুভূতি থেকে যায়। আসলে কেপি সিংহ চেয়েছিলেন প্রকৃতির মাঝে থাকতে এবং তাঁর বাড়ির উঠানে যাতে গাছের ছায়া থাকে।

কেপি সিংহ যখন ২০০০ সালে এই বাড়িটি তৈরি করতে শুরু করেছিলেন, তখন তিনি এই গাছের একটি ডাল না কেটে এই বাড়িটি তৈরি করেছিলেন। এই আম গাছের বয়স ৮৭ বছর। চারতলার এই বাড়িটি পরিবেশ রক্ষার অনন্য নজিরও উপস্থাপন করে চলেছে। এই ট্রি হাউসের সবচেয়ে বিশেষ বিষয় হল এই বাড়িটি স্টিলের কাঠামো এবং ফাইবার সিট দিয়ে তৈরি।


এই বাড়ির উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। এই বাড়িটি মাটি থেকে ৯ ফুট উপরে থেকে শুরু হয়। প্রকৃতি ও গাছের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে পূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। গাছের বৃদ্ধির জন্য বাড়িতে বড় বড় গর্ত তৈরি করা হয়েছে, যাতে গাছের অন্যান্য শাখাগুলি সূর্যের আলো পায় এবং তারা বাড়তে পারে। এই কারণেই গাছটি প্রচুর সূর্যালোক পায় এবং অবিরত সবুজ থাকে। প্রচণ্ড বাতাস এলে সারা বাড়ি দুলতে থাকে।

গাছের ডাল সুন্দরভাবে ব্যবহার করে কোনো কোনো স্থানে সেগুলোকে সোফার রূপ দেওয়া হয়েছে, আবার কোনো কোনো স্থানে টিভি স্ট্যান্ড হিসেবে দেখা যায়। গাছের ডালের আকৃতি অনুযায়ী এই বাড়ির নকশা করা হয়েছে। এই ট্রি হাউসে বাথরুম, রান্নাঘর, বেডরুম ইত্যাদির মতো সমস্ত সুবিধা রয়েছে। ট্রি হাউসের নাম ‘লিমকা বুক অফ রেকর্ডসেও’ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।