বাংলাদেশের একটি মন্দির (ফাইল ফটো)
বাংলাদেশের একটি মন্দির (ফাইল ফটো)

বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের সড়কের পাশে অবস্থিত ১২টি মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা রাতের আঁধারে ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় অজ্ঞাতদের আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খায়রুল আনাম বলেন, গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি রাতে অজ্ঞাতরা এসব প্রতিমা ভাংচুর করেছে।

এ ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

কী ঘটেছে

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার জানান, ৬-৭ কিলোমিটার লম্বা একটি সড়ক যেটি মোট তিনটি ইউনিয়নের উপর দিয়ে গেছে এমন একটি সড়কের পাশে থাকা ছোট ছোট মন্দিরে প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে।

এসব মন্দির অরক্ষিত ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।

মন্দিরগুলো আকারেও বেশ ছোট বলে উল্লেখ করেন মি. কুমার।

পুলিশ কর্মকর্তা খায়রুল আনাম বলেন, মন্দিরগুলো উল্লেখযোগ্য তেমন কোন বড় মন্দির নয়। বরং রাস্তার পাশে যেখানে বড় গাছ কিংবা বাঁশ ঝাড় বা পরিত্যক্ত জায়গায় এসব ছোট ছোট মন্দির ছিল।

রাতের আঁধারে কে বা কারা এগুলো ভেঙেছে। “কোনটার হাত, কোনটার মাথা ভেঙেছে,” বলেন তিনি।

এসব মন্দিরে তেমন কোন পূঁজা হয় না বলেও জানানো হয়।

সবচেয়ে বেশি ধনতলা ইউনিয়নে মোট আটটি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মি. কুমার জানান, তারা ধারণা করছেন যে, রাতের বেলা হয়তো মোটর সাইকেলে করে কেউ এ ধরণের ভাংচুর চালিয়ে থাকতে পারে।

“মোটরসাইকেল নিয়ে একটা রড দিয়ে খোঁচা মেরে মেরে গেছে আরকি।”

তিনি বলেন, “ওই ধরণের ত্রাস বা সদলবলে লোক এসে.. এরকম কিছু না। ”

তার মতে, গত প্রায় একশ বছরের মধ্যে ওই এলাকায় এ ধরণের ঘটনা এই প্রথম ঘটলো। স্থানীয়রা মনে করছেন, বাইরের কোন লোক এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল কুমার জানিয়েছেন এসব মন্দির যাতে আর অরক্ষিত না থাকে তার জন্য অবকাঠামো নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তারা।

সবচেয়ে বেশি যে ইউনিয়নে প্রতিমা ভাঙা হয়েছে সেই ধনতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সমর কুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনা এলাকায় বাসিন্দাদের মধ্যে কোন আতঙ্ক নেই।

তার ইউনিয়নে সনাতন ধর্মাবলম্বীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ স্বাভাবিক আছে। সোমবারও ওই এলাকায় টহল দিয়েছে পুলিশ।

কারা মন্দির ভাঙতে পারে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন নির্দিষ্ট করে কিছু বলা না গেলেও আন্দাজ করতে পারেন তিনি। তার মতে এটা অনেকটা “ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের মতো”।

অনেকটা একই ধরণের মত দিয়েছেন চারোল ইউনিয়নের চেয়ার‍ম্যান দিলীপ কুমার চ্যাটার্জিও। তিনি জানান তার ইউনিয়নে একটি মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুর করা হয়েছে। তবে বিষয়টি যেহেতু রাতের আঁধারে হয়েছে তাই কারা এর সাথে জড়িত তা তারা ধারণা করতে পারছেন না।

এনিয়ে তার এলাকার মানুষ চিন্তিত নয় বলেও জানান তিনি।