চলমান সংবাদ

ভারতের ট্রানজিট কনটেইনারবাহী জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়েছে

ট্রানজিট চুক্তির আওতায় কলকাতা শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি বন্দর থেকে পণ্যের চালান নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা ভারতীয় প্রথম জাহাজটি পণ্য খালাসের পর চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়েছে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর ছেড়ে যায়। এরআগে ভারতের পরীক্ষামূলক ২৫ টন রডসহ ১২০টি কনটেইনার নিয়ে গত মাসের ৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছেছিল ভারতীয় জাহাজ ‘এমভি ট্রান্স সমুদেরা’। কার্গো জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি (নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনাল) ১ জেটিতে ভিড়িয়ে খালাসের পর শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষ করে। এরপর পণ্যগুলো সড়ক পথে শ্যাওলা (সিলেট) স্থলবন্দরের পথ হয়ে সুতারকান্দি (ভারত) স্থল বন্দরের মাধ্যমে ভারতের আসামে গিয়ে পৌঁছাবে। ডাউকি-তামাবিল-চট্টগ্রাম রুটের এ ট্রায়াল পরিচালনা করে টাটা স্টিল ও সিজে দারসেল লজিস্টিকস লিমিটেড। এমভি ট্রান্স সমুদেরা থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস ট্রান্স-শিপমেন্টের শুল্ক বাবদ ৭ হাজার ৭৫৪ টাকা এবং পণ্য খালাসের জন্য প্রায় ৭০ ডলার আয় করবে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এই দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে যে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছিল তা বাস্তবায়নে এটি একটি অগ্রসর পদক্ষেপ। এই চালানের পাশাপাশি ট্রানজিট চুক্তির আওতায় ভারতের মেঘালয় থেকে সড়ক পথে চায়ের একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। চালানটি ভারতের মেঘালয় থেকে ডাউকি (ভারত)-তামাবিল (বাংলাদেশ) স্থলবন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছাবে। এরপর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে জাহাজযোগে সেটি নিয়ে যাওয়া হবে কলকাতায়। এই দুটি চালান আনা নেওয়ার মাধ্যমে ৫ টি ট্রানজিট রুটের পরীক্ষামূলক ব্যবহার কার্যক্রম শেষ হবে। ট্রানজিট রুট ব্যবহারে কোনো প্রতিবন্ধকতা থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধান করা হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট পণ্য পরিবহন শুরু হবে। চুক্তির অধীনে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনের জন্য আটটি অনুমোদিত রুট রয়েছে। এগুলো হলো আখাউড়া হয়ে আগরতলা, তামাবিল হয়ে ডাউকি, শেওলা হয়ে সুতারকান্দি, বিবিরবাজার হয়ে শ্রীমন্তপুর এবং এর বিপরীতে চারটি রুট। ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে চুক্তিটি কার্যকর করার জন্য একটি এসওপি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ওই চুক্তির অধীনে চট্টগ্রাম-আখাউড়া-আগরতলা রুটে প্রথম ট্রায়াল মুভমেন্ট ২০২০ সালের জুলাইয়ে পরিচালিত হয়েছিল। যেখানে দুটি টিএমটি স্টিল এবং দুটি শস্যদানা ভর্তি কনটেইনার কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আইসিপি আগরতলায় পৌঁছে। এই ট্রানজিট বা ট্রান্সশিপমেন্ট ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহনের খরচ ও সময় উভয়ই কমিয়ে দেবে। এ ট্রান্সশিপমেন্টে বাংলাদেশের ট্রাক ব্যবহার হবে। চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য ২০১৫ সালে ভারতের উদ্যোগে ঢাকা ও দিল্লি মাঝে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এরপর ২০১৮ সালে দুই পক্ষ একটি চুক্তি ও স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতিতে (এসওপি) স্বাক্ষর করে। এসওপি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দরে পণ্য পৌঁছানোর জন্য সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪টি রুট ব্যবহার করা হবে। রুটগুলো হলো- আখাউড়া-আগরতলায় (ত্রিপুরা), ডাউকি (মেঘালয়)-তামাবিল, সুতারকান্দি (আসাম)-শেওলা এবং শ্রীমন্তপুর (ত্রিপুরা)-বিবিরবাজার। এর আগে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে প্রথম চালান আনা হয়। # ২১.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #