চলমান সংবাদ

বিরিয়ানির লোভ দেখিয়ে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে রিকশাচালক

বিরিয়ানি কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাত বছরের কন্যা শিশুকে পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে ধর্ষণ, এরপর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মিন্টু (৪৬) নামে এক রিকশাচালক। নিজের সন্তানের চেয়েও বয়সে ছোট কন্যা শিশুকে পাশবিক কায়দায় খুন করলেও এলাকায় থেকে দিব্যি রিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। অবশেষে ঘটনার প্রায় ২৪ দিনের মাথায় বুধবার (১২ অক্টোবর) নগরীর আগ্রাবাদের ছোটপোল এলাকা থেকে খুনের ঘটনায় জড়িত ওই রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে বন্দর থানার পোর্ট কলোনি এলাকার সরকারি পরিত্যক্ত একতলা পাকা ভবন থেকে শিশু কন্যা সুরমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সেসময় পরিবারের পক্ষ থেকে একজন রিকশা চালককে সন্দেহ করার কথা বলা হয়েছিল। শিশু সুরমা হত্যাকাণ্ডে জড়িত মিন্ট কে গ্রেপ্তারের কথা নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান। বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) এ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, ১৭ সেপ্টেম্বর রাতে বিরিয়ানি খাওয়ানোর কথা বলে নোয়াখালীর বাসিন্দা রিকশা চালক মিন্টু সুরমা আক্তারকে রিকশায় করে পোর্ট কলোনির একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে পাশবিক কায়দায় ধর্ষণ করে। এসময় সুরমা চিৎকার করলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ রেখে পালিয়ে যায় মিন্টু। মরদেহ উদ্ধারের পর পরিবার থেকে এক রিকশা চালককে সন্দেহের যে কথা জানানো হয়েছিল সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে প্যাডেল চালিত একটি রিকশার সন্ধান পায় পুলিশ। পরবর্তীতে সেই রিকশার খোঁজ নিতে গিয়ে ছোটপোল এলাকার একটি গ্যারেজ থেকে বুধবার রিকশাটির চালক মিন্টুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত পুলিশের কাছে স্বীকার করে নিয়েছে মিন্টু। গ্রেপ্তার ৪৬ বছর বসয়ী মিন্টু পরিবার নিয়ে ছোটপোল এলাকায় থাকে। তার আগের ঘরে ১৬ বছর বয়সী একজন ছেলেও আছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরেও মেয়ে সন্তান রয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলায়। সুরমা নিখোঁজের পর তার পরিবার জানিয়েছিল, হালিশহর থানার এলাকার বুইল্ল্যা পাড়ার ওই বস্তির পাশেই নিহত সুরমার খালার বাসা। সন্ধ্যায় খালার বাসায় ভাত খেতে বের হয়েই সে নিখোঁজ হয়। পরে প্রতিবেশি আরেক শিশু মেয়ে থেকে সুরমার পরিবার জানতে পারেন কীভাবে নিখোঁজ হয় সুরমা। সুরমার খালা জ্যোৎস্না বেগম জানান, তার বাসায় রাতের ভাত খাবার জন্য বের হলে বড়পোল এলাকায় এক রিকশাচালক সুরমা ও তার সাথে থাকা প্রতিবেশি এক মেয়েকে দুই প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে দেয়ার প্রলোভন দেখায়। এসময় সুরমাদের প্রতিবেশি ওই মেয়ে যেতে রাজি না হওয়ায় রিকশাচালক শুধু সুরমাকে রিকশায় তুলে দ্রুত চলে যায়। ওই মেয়েটি বাসায় ফিরে সুরমার মাকে ঘটনাটি জানায়। তখন তারা সুরমার খোঁজে নামেন। পুরো এলাকায় খোঁজাখুঁজির পর শনিবার রাত ৯টার দিকে সন্ধান চেয়ে মাইকিং শুরু করা হয়। কিন্তু রাতভর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে রবিবার সকালে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে একটি মেয়ের লাশ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন নিমতলা পোর্ট কলোনিতে গিয়ে সুরমার মরদেহ দেখতে পান।

# ১৪.১০.২০২২ চট্টগ্রাম #