চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের বাড়তি দামে, নাজেহাল ক্রেতা

চট্টগ্রামে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। সপ্তাহের ব্যবধানে চাল-ডাল, তেল-চিনি, আদা-রসুনসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০-১৫ টাকা বাড়তি দরে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অসহায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ। বাড়তি দামের চাপে চেপ্টা হয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। নিন্ম ও মধ্যবিত্ত মানুষ কোনো হিসাবই মেলাতে পারছেন না। প্রতি সপ্তাহেই হু হু করে বাড়ছে বিভিন্ন পণ্যের দাম।

বাজারে চালের দাম আরেক দফা বেড়েছে। পাইকারিতে বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম বেড়েছে অন্তত ১শ টাকা। এর প্রভাবে খুচরায় প্রতিকেজি চাল ২ থেকে ৩ টাকা বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে আরও দুই টাকা বেড়ে প্রতি কেজি সরু চাল কিনতে হচ্ছে ৭৪ থেকে ৭৫ টাকায়। কেজিতে দুই টাকা বেড়ে মাঝারি আকারের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৬০ টাকায়। মোটা চাল ব্রি-২৮ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, চিকন চাল ৭৫ টাকা ও নাজিরশাইল কেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা।

খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯৫ টাকা, প্যাকেট চিনি ১০০ টাকা এবং লাল চিনি ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি মসুরের ডাল ১৩০ টাকা ও ভারতীয় মসুর ডাল ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহে সয়াবিন তেল ১৯৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকায় এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা আটা বিক্রি হয়েছে ৫৫ টাকা, যা সাতদিন আগে ছিল ৫২ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে ৫ টাকা বেড়ে ময়দা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫ টাকা।

চট্টগ্রামে বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আদার দাম। আদা কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়ে এখন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদার দামও কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। আমদানি করা রসুন কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে এখন ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। অন্যদিকে দেশি রসুন কেজিতে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর বেশি থাকায় লোকসান আতঙ্কে দেশের আমদানিকারকরা পণ্যটির আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। তাই দেশীয় বাজারে আদার দাম বেড়ে গেছে বলে জানালেন আড়তদাররা। খাতুনগঞ্জে পাইকারি দোকানগুলোতে গত সপ্তাহে চায়না থেকে আমদানি করা আদা ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন পণ্যটির দাম ঠেকেছে ১৩৫ টাকায়।

আদার দাম বৃদ্ধির বিষয়ে খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ইদ্রিস আলী বলেন, ডলারের দাম বাড়ার কারণে আমদানিকারকরা লোকসান আতঙ্কে চায়না থেকে আদার আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। সে কারণে এখন পণ্যটির সরবরাহ কমে গেছে। তাই দাম কিছুটা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বুকিং দর কমে গেলে আমদানিকারকরা বেশি পরিমাণে পণ্য আমদানি করবেন। সরবরাহ বাড়লে দাম এমনিতেই কমে যাবে।

এদিকে এক সপ্তাহের ব্যাবধানে আবারও বেড়েছে ডিমের দাম। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ডিম ডজনে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর আগে পাইকারি বাজারে ডিম বিক্রি হয়েছে ডজন প্রতি ১২৫ টাকায়। পাইকারিতে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। হাঁসের ডিম ১৯০ থেকে ২১০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। দাম তো কমছেই না, উল্টো এখন নতুন করে বাড়ছে সবজির দাম। ফলে বেশিরভাগ সবজি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। বাজারে প্রতি কেজি শসার দাম ৯০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি করলা ও বরবটি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি কেজি মুলা ও কাঁকরোল ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা এবং পেঁপে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। টমেটো ও গাজর যথাক্রমে ১৪০ ও ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল ৬০ টাকা এবং লাউ আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারে প্রতিকেজি রুই ২২০, তেলাপিয়া ২শ, পাঙাশ ১৬০, শিং ৩৫০, কই ২শ থেকে ২৫০ টাকা ও পাবদা ৫শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া বড় সাইজের ইলিশ এক হাজার ২০০ টাকা, মাঝারি আকারের ইলিশ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় ও ছোট সাইজের ইলিশ ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ছাড়া প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা এবং সোনালি মুরগির দাম ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫শ’ টাকা দরে। বাজারে ৭০০ টাকা কেজি গরুর মাংস এবং ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে খাসির মাংস।

# ২৩.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #