চলমান সংবাদ

জঙ্গল সলিমপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক

-সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে চলবে সাঁড়াশি অভিযান, ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করা হবে

সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য খ্যাত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুর ও আলীনগরে ঘাঁটি গেড়ে বসা সন্ত্রাসীদের সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে অবৈধ দখলমুক্ত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে এ বৈঠকে। বৈঠকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সেখানে উচ্ছেদ কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রামের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগকে নিয়ে একটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া জঙ্গল সলিমপুরের ৩ হাজার ১শ’ একর খাস জায়গা উদ্ধারকল্পে এবং সেখানের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় আরও নানা সিদ্ধান্ত হয়েছে। সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সরকারের উচ্চপর্যায়ের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ নাজমুল আহসান জানান, সভায় সিদ্ধান্তসমূহ হচ্ছে- জঙ্গল সলিমপুরে ৩১০০ একর জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা এবং জমি উদ্ধারের পর সেখানে জীব-বৈচিত্র্য ও পরিবেশ-প্রতিবেশ অক্ষুন্ন রেখে সরকারের পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে কয়েকটি টাস্কফোর্স কমিটি গঠিত হয়। গঠিত টাস্কফোর্স কমিটিসমূহ ১ মাসের মধ্যে উচ্ছেদ পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন এবং উদ্ধারকৃত সরকারি খাস জমিতে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করবে। জঙ্গল সলিমপুরে যারা প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন রয়েছে তাদেরকে স্থায়ী ঠিকানায় স্ব স্ব উপজেলায় আশ্রয়ণ প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের মাধ্যমে আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সন্ত্রাসী-আসামীদের গ্রেপ্তারে অবিলম্বে সাঁড়াশি চিরুনি অভিযান পরিচালনা করা হবে। সভায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে ডিআইজি চট্টগ্রামের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্ট সকল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের নিয়ে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তহবিল হতে দ্রুততম সময়ে সলিমপুর এলাকায় পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি অফিস নির্মাণ করতে বলা হয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের সময় স্থানীয় সরকার বিভাগের ব্যবস্থাপনায় একটি ব্যারাক স্থাপন করা হবে। স্থানীয় সরকার, সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন ও ইসিবি প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি নিয়ে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। সভায় উপস্থিত ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সুরাহা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ, সিনিয়র সচিব ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগসহ আরও অনেকে। এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের মেয়র এম. রেজাউল করিম, চউক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রসঙ্গত সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য খ্যাত এই জঙ্গল সলিমপুর ঘিরে নানা উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা করে সরকার। সেখানে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শুরু করে নাইট সাফারি পার্ক, স্পোর্টস ভিলেজসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা প্রতিষ্ঠারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে অবৈধ বাসিন্দাদের ওপর ভর করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে সেখানে ঘাঁটি গেড়ে বসা সন্ত্রাসীরা। বিভিন্ন সময় প্রশাসনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে মামলার আসামিও হতে হয়ে জেলেও যেতে হয়েছে তাদের। # ১৩.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #