মতামত

সীমাহীন কষ্টে আছে শ্রমিকেরা

-শাহাদাত হোসেন

 এক

আমার এক সহকর্মী বললো, তার আপন ভগ্নিপতি মারা গেছে গতকাল রাতে।কিন্তু তার কাছে টাকা নেই।ধার চেয়েও কারো কাছে টাকা পাওয়া যায়নি। শেষ দেখা বা জানাজায় তার যাওয়া হয়নি। আত্মীয় স্বজনের কাছে তার মুখ ছোট হয়ে গেলো।

দুই

আমার আরেক সহকর্মী বললো তার ছোট বোনের বিয়ে। কিন্তু সে বাড়িতে যেতে পারছেনা! কারন,টাকা নেই। বোনের বিয়ে মানে শতভাগ দায়িত্ব তার। সেটা পারিবারিক, সামাজিক এবং ব্যাক্তিগত দায়বদ্ধতা থেকে খুই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কিন্তু কী নিদারুণ দুর্ভাগ্য তার। বোনের বিয়েতে দায়িত্ব পালনতো দূরের কথা -তার বাড়ি যাওয়ার সুযোগও হলো না।

তিন

আমার প্রায় দশদিন ধরে কোমর ব্যথা জনিত অসুস্থতা।বাড়িতে আমার স্ত্রীরও একই সমস্যা! প্রপার টিটম্যান্ট দরকার।কিন্তু কীভাবে? টাকাই যে নেই! যা আয় করি তা দিয়ে দুই বেলা দুই মুটো ভাত খেতে পারাও দুস্কর। চিকিৎসাতো বিলাসিতা।

শ্রমিকেরা ভালো নেই। খরচ বেড়েছে, কিন্তু শ্রমিকের বেতন বাড়েনি। বাড়তি খরচ মেটাতে গিয়ে শ্রমিকদের নাভিশ্বাস উঠছে। দেশের সরকার মালিকদেরকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর মজুরি বাড়ানোর আইন করে দিয়েছে! মুলত এই আইনের মাধ্যমে শ্রমিকের মুখে তালা এবং হাতে হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে দেয়া হয়েছে!
বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে, বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। তেলের দাম বেড়েছে, গাড়ি ভাড়া, ঔষধ, নিত্য পণ্যের দাম বেড়েছে। সব ক্ষেত্রে যে যার মতো দাম বাড়িয়ে নিতে পারার সুযোগ থাকলেও একমাত্র শ্রমিকের বেলায় সে সুযোগ একেবারেই নেই!!
বাজার দরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বেতন চাওয়ার অধিকারও শ্রমিকের নেই!
সব মিলিয়ে, সীমাহীন এক দুর্গতিতে পড়েছে শ্রমিক।

লেখক: পোশাক শ্রমিকনেতা