চলমান সংবাদ

কৌশল না করে চা শ্রমিকদের দৈনিক ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরির দাবি মেনে নিন


কৌশল না করে চা শ্রমিকদের দৈনিক ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরির দাবি মেনে নিন
চাল-ডাল-তেলসহ নিত্য প্রয়োজনিয় পণ্যের দাম কমাও, মহার্ঘ্য ভাতা ও ভর্তুকি মূল্যে রেশন দাও, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণা কর
কৌশল না করে চা শ্রমিকদের দৈনিক ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরিসহ ন্যায্য দাবি সমুহ মেনে নেওয়া, চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনিয় পণ্যের দাম কমানো, সকল শ্রমিক কর্মচারীকে বাজারমূল্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ভাবে মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান, সকল শ্রমজীবী মানুষ কে ভর্তুকি মূল্যে রেশন প্রদান এবং জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণার দাবিতে ২৩ আগষ্ট ২০২২, সকাল ১১ টায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।
শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এর অন্যতম শীর্ষ নেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী’র সভাপতিত্বে এবং অপর যুগ্ম সমন্বয়কারী আহসান হাবিব বুলবুল এর সঞ্চালনায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন স্কপ নেতা আনোয়ার হোসেন, রাজেকুজ্জামান রতন, সাইফুজ্জামান বাদশা, কামরুল আহসান, আজিজুন নাহার, নঈমুল আহসান জুয়েল, শাকীল আক্তার চৌধুরী, বাদল খান, নুরুল আমিন, কামাল সিদ্দিকী, আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, চা শ্রমিকরা বর্তমানে যে মজুরির জন্য আন্দোলন করছে সেই চুক্তির মেয়াদ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের জানুয়ারীতে অর্থাৎ চুক্তির মেয়াদ ১৯ মাস আগে অতিক্রান্ত হয়েছে অথচ নতুন চুক্তি হয়নি। উৎসবের আগে চা শ্রমিকদের অভাবের সুযোগ নিয়ে সামান্য কিছু মজুরি বাড়িয়ে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত করার জন্যই দরকষাকষির নামে সময়ক্ষেপনের কৌশল নেওয়া হয়েছিল। চা শ্রমিকরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হওয়ার আগে চা বাগান মালিকদের অপকৌশল বন্ধের জন্য রাষ্ট্রের করিতকর্মা কর্মকর্তাদের কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে শ্রম দপ্তরসহ স্থানীয় প্রশাসন বাগান কর্তৃপক্ষের অনিয়ম আর অমানবিক শোষণ কে প্রশ্রয় দিয়েছে। শ্রমিকদের আইনসিদ্ধ সুবিধাগুলি বাস্তবায়নে কল কারখানা পরিদর্শন পরিদপ্তর কার্যকর ভুমিকা রাখেনি। ফলে মালিকরা আবাসন, চিকিৎসা ব্যায়সহ অন্যান্য সুবিধার বর্ণনা দিয়ে ৪০৩ টাকা মজুরি দেওয়ার হিসাব দিলেও তা বর্তমান মাথাপিছু আয়ের হিসাবের মতই অলিক বাস্তবে যার কোনো প্রতিফলন নেই। চা শ্রমিক পরিবারের প্রতিটি সদস্যের পুষ্টিহীন শরীর মালিকদের দাবির অসারতার প্রমাণ। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, নিত্যপণ্যের বর্তমান বাজার দরে ন্যূনতম মানবিক জীবনের জন্য দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিও যথেষ্ট নয়। কর্মক্ষেত্রের শ্রম বিরোধ নিরষণে চা বাগান মালিকরা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহীকে টেনে এনেছেন। আমরা প্রত্যাশা করি চা শ্রমিকদের ন্যূনতম জীবনমান নিশ্চিত করতে দৈনিক নগদ মজুরি ৩০০ টাকাসহ চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিসমুহ মেনে নেওয়া হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, ২৫ আগষ্টের মধ্যে চা শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে যৌক্তিক সমাধান করা না হলে ২৬ আগষ্ট বিক্ষোভ এবং পরবর্তীতে আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে স্কপ।
নেতৃবৃন্দ জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা ঘোষণাসহ প্রতিটি খাতের শ্রমিক কর্মচারীদের জন্য নতুন মজুরি কাঠামো নির্ধারণ এবং অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য নিত্যপণ্যের বাজারমূল্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ভাবে মহার্ঘ্য ভাতা চালুর দাবি জানিয়ে বলেন, মজুরি বোর্ডের অন্তর্ভূক্ত খাতগুলির কোনোটির মজুরিই বর্তমান বাজারদরের সাথে সঙ্গতিপূর্ণতো নয়ই বরং সর্বশেষ জ্বালানী তেলের মূল্যবৃদ্ধি এবং পরিবহন ভাড়া বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে চাল-ডাল-তেলসহ প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য অসহনিয় মাত্রায় বেড়েছে ফলে শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরি অর্ধেকের নিচে নেমে গেছে। শ্রমিকদের জীবনধারণ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। শ্রমজীবীদের মধ্যে খাদ্য অনিশ্চয়তা আর অপুষ্টির মাত্রা বাড়ছে। যা একদিকে সুস্থ শ্রম সরবরাহের স্বাভাবিক প্রবাহ কে ক্ষতিগ্রস্থ করা অপরদিকে অর্থনৈতিক ভাড়সাম্যহীনতার কারণে সামাজিক অস্থিরতার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। নেতৃবৃন্দ, ও.এম.এস বা ট্রাক সেল কার্যক্রমের পরিবর্তে সকল শ্রমজীবীদের ভর্তুকি মূল্যে রেশনের মাধ্যমে নিত্যপণ্য সরবরাহ করার জোর দাবি জানান এবং অবিলম্বে শ্রমজীবীদের জন্য রেশন চালু করা না হলে খাদ্য মন্ত্রণালয় ঘেড়াও করা হবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।
২৩/০৮/২০২২, প্রেস বিজ্ঞপ্তি