চলমান সংবাদ

জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ বসতি উচ্ছেদ ও বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ বিচ্ছিন্নের প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ, ব্যাপক যানজট-ভোগান্তি

 কিছুদিন আগ পর্যন্ত অপরাধীদের ‘অভয়ারণ্য’ হিসেবে পরিচিত চট্টগ্রামের জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় অবৈধ বসতি উচ্ছেদের প্রতিবাদে এলাকার লোকজন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে। সরকারি পাহাড় দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ বসতিতে বিদ্যুৎ-পানির লাইন বিচ্ছিন্ন করার প্রতিবাদে ওই এলাকার বাসিন্দারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। প্রায় চারঘণ্টা ধরে নগরের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়ক আটকে বিক্ষোভ করে তারা। এসময় ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। তাদের দাবি, পানি-বিদ্যুতের সংযোগ দিতে হবে এবং উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন করতে হবে। মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ লিংক সড়কে অবস্থান নেয় তারা। পরবর্তীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোড ও ফৌজদারহাট-বন্দর সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। এতে চার লেনের মহাসড়কের দুইপাশ অবরোধের ফলে ঢাকা ও চট্টগ্রামমুখী যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক, লরি, ব্যক্তিগত বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়। বায়েজিদ থানার ওসি ফেরদৌস জাহান বলেন, জঙ্গল সলিমপুরে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে জেলা প্রশাসনের অভিযানে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে বায়জিদ লিংক রোডে বিক্ষোভ করে আন্দোলন করে অবৈধ বাসবাসকারীরা। তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সড়কে এসেছিল। যার কারণে সড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। পরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সীতাকুণ্ড এলাকায় চলে যায়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জসিম উদ্দীন নামে এক আন্দোলনকারী জানান, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় উচ্ছেদ করা বসতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়া এবং উচ্ছেদের শিকার হওয়াদের জমি সরকারিভাবে বন্দোবস্তি দেওয়ার দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধ করেছি। এর আগে, সরকারি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরে সরকারি পাহাড় দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ বসতি ও স্থাপনা মঙ্গলবার থেকে উচ্ছেদ শুরু করে জেলা প্রশাসন। অভিযানে পানির লাইন ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তবে প্রথমদিনেই উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসন যাদের অবৈধ দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করেছে তারা উচ্ছেদে বাধা দেয়ার পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টা করেন। প্রসঙ্গত, জঙ্গল সলিমপুর এলাকায় সরকারি খাস জমিতে প্রশাসনের উদ্যোগে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার, স্পোর্টস ভিলেজ, ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আইকনিক মসজিদ, নাইট সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন স্থাপনা করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। এর অংশ হিসেবে জঙ্গল সলিমপুর এলাকার বিভিন্ন অংশে প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এরপর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী ও উচ্চপদস্ত কর্মকর্তারা জঙ্গল সলিমপুরের খাস জমিগুলো পরিদর্শন করেন। ২০ আগস্টের মধ্যে দখল করা খাস জমি ছেড়ে দেওয়ার জন্য গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিচ্ছিন্ন করা হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। গত রোববার (২১ আগস্ট) স্থানীয় সাংসদ দিদারুল আলম, উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আল মামুন, সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, রেঞ্জ ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, র‌্যাব-৭’র অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমএ ইউসুফ, পুলিশ সুপার, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক সলিমপুরে আলীনগর এলাকায় পরিদর্শনে যান। # ২৩.০৮.২০২২ চট্টগ্রাম #