চলমান সংবাদ

চবিতে ছাত্রলীগের একাংশের ডাকা অবরোধ প্রত্যাহার

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি পুনর্গঠনের দাবিতে গত রবিবার মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ছাত্র সংগঠনটির একাংশের ডাকা অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাসে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অবরোধ তুলে নেন ছাত্রলীগের একাংশের নেতাকর্মীরা। অবরোধের কারণে গতকাল মঙ্গলবারও বন্ধ ছিল শাটল ট্রেন, শিক্ষক বাস ও ক্লাস-পরীক্ষা। সোমবার রাতে প্রধান গেট খুলে দেয়া হলেও গতকাল সকালে তারা আবার আন্দোলন করে। এরপর এক সংবাদ সম্মেলন করে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে।

এদিকে আন্দোলনের নামে চবি’র শাটন ট্রেন বন্ধ, ভাঙচুরসহ ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। সাম্প্রতিক ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হবে বলে জানান তিনি।

জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী একটি ফেসবুক পোস্ট শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ছাত্র সংগঠনের পদপদবীর বিষয়ে কোনো দাবি-দাওয়া থাকলে সংগঠনের যেকোনো কর্মী, নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। কোনো সাংগঠনিক দাবি থাকলে সেটি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে সমাধান করা যায়।

কিন্তু সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করা, ভাংচুর করা, অপহরণ করা, অপরাধের হুমকি দেয়া, হত্যার হুমকি দেয়া কোনোভাবেই ছাত্র সংগঠনের আদর্শিক কর্মীর কাজ হতে পারেনা। যারা এসব করছে তারা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থেই অরাজকতা করছে, এদের কাছে সংগঠন বা শিক্ষার মূল্য আছে বলে মনে হয় না। নিজেদের সাংগঠনিক দাবিতে অপরাধমূলক সহিংসতা যারা করছে, তাদের বিষয়ে সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অত্যন্ত কঠোর হওয়া প্রয়োজন।থ এর কিছুক্ষণ পরই অবরোধ প্রত্যাহার করে আন্দোলনকারীরা।

আন্দোলনকারী ছাত্রলীগ নেতা মো. দেলোয়ার বলেন, আমরা আমাদের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিয়েছি। আমাদের নেতা শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী যেহেতু আমাদের পদবঞ্চিত হওয়ার বিষয়ে জানতে পেরেছেন সেহেতু আমাদের আর চাওয়ার কিছু নেই। উনি যেটা ভালো মনে করেন সেটা আমরা মেনে নিব। আমরা ভবিষ্যতে আর আন্দোলন করব না।

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) চবি উপাচার্যের সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার জানান, ছাত্র সংগঠনের কমিটিতে পদ পদবি না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে শুরু থেকেই আলোচনা করেছি। আলোচনা সাপেক্ষে তারা অবরোধ থেকে সরে এসেছে। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

শাটল ট্রেন ও বাস চলবে। বুধবার থেকে অনুষ্ঠিত হবে ক্লাস-পরীক্ষা। শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌগোলিক অবস্থানের সুযোগ নেয়। কিছু হলেই শাটল বন্ধ করে দেয়। সাম্প্রতিক ঘটনায় আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করব। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী কক্ষ ভাঙচুর, শাটল ট্রেন বন্ধ এবং এর চালককে অপহরণসহ অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, তাদের সাথে আমরা আলোচনা করেছি। তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেছে। অতীতেও শৃঙ্খলা পরিপস্থি কাজে লিপ্ত থাকায় অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ ঘটনায়ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার মধ্যরাতে শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কমিটি ঘোষণার পর পরই পদ বাণিজ্য ও অছাত্রদের রাখার অভিযোগে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করে পদবঞ্চিতরা। পরবর্তীতে তারা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়।

## ০২.০৮.২০২২ চট্টগ্রাম ##