মতামত

বিশ্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সংকটকালীন সময়ে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কি টিকে থাকতে পারবে?

-ডাঃ আরিফ বাচ্চু

বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশই ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেও করোনা মহামারি এবং ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবাই। অপ্রত্যাশিত এই ঘটনা দুটি, বিশ্বকে অর্থনৈতিক এক বিশৃঙ্খলার দিকে নিয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সংকটের মূলে রয়েছে চাহিদা ও জোগানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পার্থক্য।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে প্রায় দুই বছর বিভিন্ন দেশে লকডাউনসহ অন্যান্য বিধিনিষেধ ছিল। ঐ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত বেশির ভাগ কর্মী বাড়ি থেকে কাজ করায় বিদ্যুতের ব্যবহার কমে যায় ৩ শতাংশের বেশি।

ব্রুকিংস ইনস্টিটিউটের এনার্জি সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্লাইমেট ইনিশিয়েটিভের পরিচালক সামান্থা গ্রসের বলেন, করোনা মহামারি কাটিয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের পাশাপাশি বেড়েছে জ্বালানির চাহিদা। আকস্মিক এই প্রতিযোগিতা, কয়লা, তেল এবং গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যেই সংকট আরও বাড়িয়েছে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ।

সারা বিশ্বে জ্বালানি আমদানির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম এক বছর আগের তুলনায় পাঁচ গুণ এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম গত বছরের তুলনায় বেড়েছে ১০ গুণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে এশিয়ার কিছু অর্থনীতি, বিশেষ করে আমদানিনির্ভর, উন্নয়নশীল দেশগুলোর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইউরোপে চাহিদার ৪০ শতাংশের বেশি গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। দেশভেদে তা শতভাগ পর্যন্ত। ফলে চলমান সংকটে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ ব্যাহত হলে সেই গ্যাসের জন্য ইউরোপের দেশগুলোর নির্ভরতা বাড়বে এশিয়ার ওপর। অন্যদিকে, গ্যাসের জন্য বাংলাদেশের আমদানি নির্ভরতা এশিয়া, মূলত কাতার এর ওপর। সেই কাতারকেই ইউরোপে সরবরাহ বাড়াতে নির্দেশনা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। এর ফলে দামের চেয়েও বাংলাদেশের জন্য এখন বড় দুশ্চিন্তা, প্রয়োজনীয় গ্যাসের প্রাপ্তি নিয়েই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে গ্যাসের সংকট সৃষ্টি হলে তেল বা কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বাড়ানো হতো। এবার তা হতে দেখা যাচ্ছে না। কারণ হচ্ছে, গ্যাসের সাথে সাথে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।

তেল উৎপাদকদের জোট ওপেকের বাইরে সবচেয়ে বড় তেলের জোগানদাতা রাশিয়া। তা ছাড়া, যুদ্ধকৌশলের অংশ হিসেবে তেল নিষেধাজ্ঞার ফলে সমুদ্রপথে রাশিয়ার, তেল রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে ইউরোপে।

এ বিষয়ে মার্কিন অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্ডি বলেন, ‘আপনি যদি এমন কোনো দেশ হন, বিশেষ করে শ্রীলংকার মতো উদীয়মান অর্থনীতির, যেখানে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কিনতে হয়; তাহলে বর্তমান পরিস্থিতি আপনার জন্য সংগ্রামের। কারণ, আপনি আপনার প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর জন্য অনেক বেশি অর্থ দিচ্ছেন। কিন্তু যা রফতানি করছেন তার দাম বাড়েনি। সুতরাং অর্থনীতি চালু রাখতে অন্য সময়ের তুলনায় এখন অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।’

কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির সেন্টার অন গ্লোবাল এনার্জি পলিসির সহকারী সিনিয়র রিসার্চ স্কলার অ্যান্টোইন হালফ মনে করেন, ধনী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কম উন্নয়নশীল বা নতুন শিল্পোন্নত দেশগুলোর। ফলে এসব দেশ যত বেশি আমদানি করবে, তাদের সমস্যা তত বড় হবে। যার বড় উদাহরণ শ্রীলংকা ও পাকিস্তান।

ইউক্রেইনে রাশিয়ার অভিযানের পর থেকে জ্বালানি নিয়ে অস্থিরতার কারনে বেশকিছু দেশ সমস্যা মোকাবেলা করছে।  অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলংকায় পেট্রল, ডিজেলের জন্য দেখা দিয়েছে হাহাকার। সম্প্রতি বাংলাদেশে রাত ৮টার পর থেকে সারা দেশে দোকানপাট, বিপণিবিতান, মার্কেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যার অন্যতম উদ্দেশ্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়। তীব্র গরমের মধ্যেও বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন রাজ্যে বন্ধ থাকছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এগুলো চোখে পড়ার মতো কিছু ঘটনার উদাহরণ মাত্র, যেখানে বিভিন্ন দেশ কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ জ্বালানি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে অসন্তোষ, লড়তে হচ্ছে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার সঙ্গেও।

শ্রীলংকা ও পাকিস্তানে সংকট পুরোপুরি স্পষ্ট। জনরোষ থেকে সৃষ্ট রাজনৈতিক দোলাচলে সম্প্রতি পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। দেশে সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাকিস্তানেও বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য করেছেন পিটিআই নেতা ইমরান খানকে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বিদ্যুৎ বা জ্বালানি সংকট থেকে বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা মাত্র শুরু হয়েছে, বিশেষ করে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। এর বড় উদাহরণ শ্রীলংকা ও পাকিস্তান, যারা সংকট মোকাবিলার জন্য আর্থিক সহায়তা চেয়ে বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সহ বিভিন্ন সংস্থার দ্বারস্থ হচ্ছে। এমনকি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য কর্মঘণ্টা কমানোসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছে দেশ দুটি। সম্প্রতি শ্রীলংকার নতুন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, শ্রীলংকার অর্থনীতি ভেঙে পরেছে। এ অঞ্চলের অন্য দেশগুলোতে সংকটের লক্ষণ এখনো তেমন স্পষ্ট না হলেও কমবেশি সব দেশই বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এমনকি অস্ট্রেলিয়ার মতো তুলনামূলক ধনী দেশগুলোতেও, অর্থনৈতিক উদ্বেগ প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। কারণ, অস্ট্রেলিয়ায় ২০২২ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে পাইকারি বিদ্যুতের দাম গত বছরের তুলনায় ১৪১ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া জনগণকে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর অনুরোধ করা হয়েছে। এমনকি বিদ্যুতের দাম কমাতে, শক্তি সরবরাহ চেইনের ওপর চাপ কমাতে এবং ব্ল্যাকআউট রোধে গত ১৫ জুন প্রথমবারের মতো জাতীয় বিদ্যুতের বাজার অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়ান সরকার।

এদিকে ভারতেও বিদ্যুতের চাহিদা সম্প্রতি রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মধ্য দিয়ে যাওয়া বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম কার্বন নিঃসরণকারী এ দেশটির সরকারি খাতের কয়লা উত্তোলন ও পরিশোধন কোম্পানি কোল ইন্ডিয়া ২০১৫ সালের পর সম্প্রতি প্রথমবারের মতো কয়লা আমদানি করার কথা জানায়।

 কার্যদিবস ছয় দিন থেকে কমিয়ে পাঁচ দিন করেছে পাকিস্তানও। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জর্জরিত দেশটির জনগণ। এর পরিপ্রেক্ষিতে জ্বালানি বাঁচানোর জন্য পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচির শপিং মল এবং রেস্তোরাঁগুলো দ্রুত বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে দেশটির বিদ্যুৎ সরবরাহ চাহিদার তুলনায় প্রায় ৫ হাজার মেগাওয়াট কম।

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকটের কারণে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাস দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বলানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ৷ পোস্টে তিনি বলেছেন, “গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে৷ এতে অনেক জায়গাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে৷ গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন পুনরায় স্বাভাবিক হবে৷ যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির উচ্চমূল্য ও সরবরাহ অন্যান্য সব দেশের মতো আমাদেরও সমস্যায় ফেলেছে ৷ এ পরিস্থিতিতে আপনাদের সাময়িক অসুবিধার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি ৷”

জ্বালানি সংকটের কারনে উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায় দেশজুড়ে বিদ্যুতের লোডশেডিং চলছেই। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পথে এগিয়ে চলা বাংলাদেশে লোডশেডিং হারিয়ে গেছে বলেই সরকারের পক্ষ থেকে গত কয়েক বছর দাবি করা হচ্ছিল, এর মধ্যেই গত কয়েকদিন ধরে রাজধানী সহ গ্রামাঞ্চলে ঘোষনা দিয়েই লোডশেডিং করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে পিডিবির হিসাবে, ১৫২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ২২ হাজার মেগাওয়াট। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি করা বিদ্যুৎ রয়েছে ১১৬০ মেগাওয়াট। তবে ক্যাপটিভসহ মোট উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয় সাড়ে ২৫ হাজার মেগাওয়াটের মতো। এর মধ্যে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৫১ শতাংশ, তেলভিত্তিক এইচএফও ও এইচডিও কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩৪ শতাংশ। কয়লা থেকে প্রায় ৮ শতাংশ, আমদানি থেকে ৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে। বাকিটা পূরণ করে সৌর ও পানিভিত্তিক নবায়নযোগ্য জ্বালানি। পেট্রোবাংলার হিসাবে, আমদানি থেকে ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ আসার কথা থাকলেও তা আসছে অর্ধেক।

জ্বালানি সংকটের শিগগিরই কোন সমাধান হওয়ার পূর্বাভাস সরকারি তরফ থেকেও দিতে পারছে না৷ ফলে বিদ্যুতের আসা যাওয়া বা লোডশেডিংও শিগগিরই কমবে এমন কোন আশ্বাসও নেই ৷ তবে উৎস জ্বালানির পর্যাপ্ত জোগান না থাকায় চাহিদানুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের সমাধান চলতি জুলাই মাসে হবে না ৷

দেশে দৈনিক ৪১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে৷ স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে এ গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব নয় বলে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে। কিন্তু প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ৩৮ মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে৷ বাংলাদেশে সর্বশেষ কেনা হয়েছিল ২৫ ডলারে৷ ফলে দেশে দৈনিক ১০০ কোটি ঘনফুট সমপরিমাণ এলএনজি আমদানি ও ব্যবহারের সক্ষমতা থাকলেও তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে৷ বর্তমানে খোলা বাজার থেকে এলএনজি কেনা স্থগিত রয়েছে৷

গ্যাসের দাম যেভাবে বেড়েছে সেটা কিনে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে গেলে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে হবে ৷ সেটা এখন সরকার চাচ্ছে না ৷ ফলে সরকারের তরফ থেকে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে অনুরোধ করা হচ্ছে ৷ এভাবেই কিছুদিন পরিস্থিতি সামলাতে চায় সরকার ৷ এর কোন বিকল্পও সরকারের হাতে নেই।

এক অনুষ্ঠানে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের ব্যাখা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৷ তিনি বলেছেন, বিদ্যুৎ আমরা সবার ঘরে পৌঁছে দিয়েছিলাম এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সবাই পাচ্ছিল৷ কিন্তু রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে, তেলের দাম বেড়েছে, এলএনজির দামসহ সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে৷ কয়লা এখন প্রায় পাওয়াই যায় না৷ তেল, গ্যাসসহ বিদ্যুৎ তৈরির উপকরণের দাম বেড়ে গেছে৷ বিশ্বের অনেক দেশেই বিদ্যুতের জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে৷ এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে মিতব্যয়ী ও সঞ্চয়মুখী হওয়ার আহবান জানান তিনি ৷

জ্বালানি তেল ও গ্যাসনির্ভর বিদ্যুৎ উৎপাদন এখন খুবই সংকটে। সম্প্রতি শ্রীলংকার ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নিয়েই কিনা, বাংলাদেশ সরকার রিজার্ভ সংকট মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। পত্রিকার ভাষ্যমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪০ বিলিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলারের নিচে নেমে গেছে। অথচ করোনাকালের শুরুতেও তা ছিল ৪৮ বিলিয়ন ডলার। রিজার্ভের পরিমাণ এ রকম কমতে থাকলে দুশ্চিন্তা যেমন বাড়বে, তেমনি একধরনের অস্থিরতাও তৈরি হতে পারে দেশজুড়ে।

সরকার এই পরিস্থিতির জন্য ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করলেও, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত নিয়ে কাজ করেন সাংবাদিক অরুণ কর্মকার। তিনি মনে করেন, দেশের অভ্যন্তরীণ গ্যাস অনুসন্ধান এবং উৎপাদনে ব্যর্থতার কারণে তা আমদানি নির্ভর হয়ে পড়ায় এমন পরিস্থিতি হয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি বা যে কোন কারণে যে কোন সময় জ্বালানির বিশ্ববাজার অস্থির হতে পারে। “যেহেতু তেল আমাদের নেই। ফলে তা আমদানি করতে হবে। কিন্তু আমাদের গ্যাস ও কয়লা সম্পদের অনুসন্ধান, উত্তোলন বাড়াতে সরকারের উদ্যোগের ঘাটতি ছিল।” “সেকারণে আমরা গ্যাসের ব্যাপারে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি এবং এখন এই সমস্যা তৈরি হয়েছে” বলেন অরুণ কর্মকার।

অভ্যন্তরীণ গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে রাজি নন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি দাবি করেন, গত চার বছরে এক হাজার ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বেড়েছে। তবে এখন বিশ্ববাজারে দাম চড়া হওয়ায় গ্যাস কেনা বন্ধ করায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমিয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে, “গ্যাস কেনাটা বিশ্ব পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে। গ্যাসের দাম কমলে হয়তো গ্যাস আমদানি করতে পারবো” আর তা না হলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে চুক্তির ভিত্তিতে যে গ্যাস পাওয়া যায়, তার সাথে আভ্যন্তরীণ গ্যাস দিয়ে এভাবেই চলবে। তার কথায় এটা পরিষ্কার, বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম কমার অপেক্ষায় থাকবে সরকার এবং এমুহূর্তে বিকল্প উপায় নেই।

বিদ্যুৎ খাতের মহাপরিকল্পনা অনুসারে এ বছর দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা হওয়ার কথা ১৫ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। আর বছর শেষে উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার ৮৫১ মেগাওয়াট হওয়ার কথা। আগামী পাঁচ বছরে চাহিদার বিপরীতে সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ হবে। এটি অর্থনীতির জন্য বড় বোঝা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিদ্যুৎ খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো দেশে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি সক্ষমতা রাখা যেতে পারে। তবে পিডিবির দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, কিছু কেন্দ্র নিয়মিতই রক্ষণাবেক্ষণে রাখতে হয়। গ্যাস–সংকট নিয়মিত বিষয়। জ্বালানির অনিশ্চয়তা আছে দেশে। তাই ৩০ শতাংশ বাড়তি সক্ষমতা থাকা উচিত। যদিও বর্তমান পরিকল্পনা অনুসারে এগোতে থাকলে সর্বোচ্চ চাহিদার সময়েও ৪৫ শতাংশ সক্ষমতা বসিয়ে রাখতে হবে। আর শীতের সময় বসে থাকবে প্রায় ৭০ শতাংশ সক্ষমতা।

একটি বিশ্লেষনে দেখা গেছে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষমতার পাশাপাশি লোকসানও বেড়েছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, একসময় বিদ্যুতের ঘাটতি ছিল, ক্রেতার ওপর উচ্চ মূল্যের অভিঘাত ছিল না। উৎপাদন সক্ষমতা এবং উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের দাম, লোকসান ও ভর্তুকি বেড়েছে। অথচ ভোক্তা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। উন্নয়ন করতে গিয়ে সর্বনাশ হয়েছে এ খাতে।

দেশের সরকারি ও বেসরকারি সব বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ কিনে নেয় পিডিবি। প্রতিটি কেন্দ্রের সঙ্গে পিডিবির আলাদা চুক্তি আছে। এ চুক্তিতে বিদ্যুৎ কিনে নেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়। চুক্তি অনুসারে বিদ্যুৎ দিতে না পারলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো পিডিবিকে জরিমানা দেয়। আর পিডিবি বিদ্যুৎ কিনতে না পারলেও কেন্দ্র ভাড়া নিয়মিত শোধ করতে হয়। এই কেন্দ্র ভাড়া ক্যাপাসিটি চার্জ নামে পরিচিত। পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, গ্যাসের ঘাটতি থাকায় তেল আমদানি বেড়েছে। গত বছরের জুন থেকে ফার্নেস তেলে সরকার আমদানি শুল্ক কর চালু করেছে। এতে খরচ বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। গত জুলাই থেকে কয়লার ওপর ৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপ করা হয়েছে। কয়লার দামও বেড়েছে বিশ্ববাজারে। জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় কয়েক মাস ধরে পিডিবির উৎপাদন ব্যয় আরও বেড়ে গেছে।

তিন মাস আগেও প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনের গড় খরচ ছিল সাড়ে ৮ টাকা। এখন এটি ৯ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। জ্বালানির বাড়তি দামের সঙ্গে প্রতিবছর বাড়ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সক্ষমতার ভাড়া।

পিডিবি ও বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ করলেও গত মার্চ থেকে বিল পাচ্ছে না অধিকাংশ বিদ্যুৎকেন্দ্র। এতে বকেয়া বিলের পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে ১৬ হাজার কোটি টাকা। বিল চেয়ে ইতিমধ্যে পিডিবিকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (বিআইপিপিএ)। বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী মালিকদের এ সংগঠন বলছে, স্বাভাবিক সময়ে দুই মাসের বিল বকেয়া থাকে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতার ভাড়া নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা আছে। সম্প্রতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে কেন্দ্র ভাড়ার একটি হিসাব দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে দেখা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে কেন্দ্র ভাড়া দিতে হয়েছে ১৮ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকার কিছু বেশি। এর আগের অর্থবছরে দিতে হয়েছিল ১৮ হাজার ১২৩ কোটি টাকার মতো।

আর শেষ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে দিতে হয়েছে প্রায় ১৬ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। সব মিলে ২ বছর ৯ মাসে কেন্দ্র ভাড়া শোধ করা হয়েছে প্রায় ৫৪ হাজার কোটি টাকা। বছর শেষে এটি ৬০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে বলে জানিয়েছেন পিডিবির এক কর্মকর্তা।

তবে বিদ্যুৎ বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলছেন, সক্ষমতার ভাড়ার সঙ্গে অলস বসিয়ে রাখার কোনো সম্পর্ক নেই। অনেকে ভুল ব্যাখ্যা দেন। এটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিনিয়োগের সুরক্ষা। একটি কেন্দ্র থেকে কোনো বিদ্যুৎ কেনা না হলে ওই কেন্দ্রের বিনিয়োগ উঠে আসবে না। ব্যাংকের ঋণ শোধ করা যাবে না। তাই সক্ষমতার ভাড়ার বিষয়টি চুক্তিতে বলা থাকে। অন্য দেশেও এটি আছে। সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলোকে সক্ষমতার ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। শেষ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে সরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি পেয়েছে ৩ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। আর প্রায় ১২ হাজার ৯০০ কোটি টাকা পেয়েছে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) বলছে, শুরু থেকেই চাহিদার প্রক্ষেপণে ভুল থাকায় অতিরিক্ত সক্ষমতা বেড়েছে। আবার উৎপাদন সক্ষমতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন তৈরি করা যায়নি। প্রাথমিক জ্বালানির (গ্যাস, কয়লা, জ্বালানি তেল) সরবরাহও নিশ্চিত করা যায়নি। সরকারি বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র আনতে না পারায় বেসরকারি খাতের স্বল্প মেয়াদের ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র মেয়াদ শেষেও চালু রাখতে হয়েছে। এতে পিডিবির খরচ বাড়ছে।

সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, অতিরিক্ত সক্ষমতার জন্য খরচ করতে হচ্ছে। গ্যাস না থাকায় তেল আমদানি করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালাতে হচ্ছে। এতে ডলারের রিজার্ভে চাপ বাড়ছে।

সরকার যখন সারা দেশে শত ভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার কথা বলছে, তখন আবার লোডশেডিং গ্রাহকদের অতীতের খারাপ পরিস্থিতিকেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের ভেতর উদ্বেগ যে বাড়ছে তার আরো একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায় যখন সব সরকারি অফিসে বিদ্যুতের ব্যবহার অন্তত ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের সাথে বৈঠকে পর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস জানান সাশ্রয় পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তারা সরকারি সব অফিসে বিদ্যুৎ ব্যবহার অন্তত ২৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সাথে মন্ত্রণালয়গুলো কীভাবে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করবে তা নিয়ে একটি কর্মপন্থা প্রণয়ন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে সংকট এড়াতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

তবে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত না হতে জনসাধারণের প্রতি আহবান জানিয়েছে সরকার। আমাদের মনে রাখতে হবে, বিদ্যুৎ স্টোর করে রাখার মতো কোনো ভোগ্যপণ্য নয়। এটি একটি চলমান ব্যবস্থা। চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন করতে হয়। কাজেই উৎপাদন কম হলে লোডশেডিং অপরিহার্য। আপনি যখন অপ্রয়োজনে একটি বাতি, ফ্যান বা এসি চালিয়ে রাখবেন, তখন আপনাকে মনে রাখতে হবে এই বিলাসিতার জন্য অন্য একজনকে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে, গরমে হাঁসফাঁস করতে হচ্ছে। আপনি ভাবছেন, আমার টাকা আছে, আমি ইচ্ছেমতো চালিয়ে রাখব। যত দিন আপনার এই বিলাসিতার সমপরিমাণ উৎপাদন দেশে ছিল, তত দিন পেরেছেন কিন্তু এখন উৎপাদন কম। কাজেই যাঁরা এই বিলাসিতা করবেন, তাঁরাই প্রকারান্তরে অনেকের দুর্ভোগের কারণ হবেন—এটি যেন সবার মাথায় থাকে। এখনো যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে, সঠিক ব্যবস্থাপনা ও অপচয় রোধ করা গেলে জনদুর্ভোগকে কিছুটা সহনীয় মাত্রায় রাখা যাবে। তা না হলে একসময় হাহাকার সৃষ্টি হবে। ক্ষোভ বাড়বে, অসহিষ্ণু হবে আমজনতা। কিংবা কে জানে শ্রীলংকা, পাকিস্তানের মতো অর্ধেক দিন অন্ধকারেও নিমজ্জিত থাকতে হতে পারে!

জনসচেতনতার পাশাপাশি সরকারকে কঠিন ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে। এ ক্ষেত্রে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে যা যা করা দরকার তা করতে হবে। ব্যবস্থা নিতে হবে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সুষমভাবে বণ্টনেরও। বায়োগ্যাসের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারি আনুকূল্যের পাশাপাশি সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়াতে মনোযোগী হতে হবে। এ ছাড়া এনার্জি সেভিংস বাল্ব কমমূল্যে স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে বিতরণ করাসহ সবদিক বিবেচনায় নিয়ে এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজতে ব্যর্থ হলে চড়া মূল্য দিতে হবে জনগণ তথা গোটা দেশকে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

আগামী সেপ্টেম্বরের পর বিদ্যুৎ–ঘাটতি দূর হওয়ার আশা করছে সরকার। এ ক্ষেত্রে তিনটি কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র রামপাল, ভারতের আদানি ও পায়রা দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে বিদ্যুৎ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রামপাল ও ভারতের আদানি থেকে বিদ্যুৎ আসতে পারে আগামী বছরের শুরুতে। আর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কয়েক মাস ধরে উৎপাদনে আছে। এ কেন্দ্রের বিদ্যুৎ মূলত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ব্যবহৃত হচ্ছে। উচ্চপর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, শীতের মৌসুমে অক্টোবর থেকে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। এ সময় বিদ্যুতের চাহিদা কমে যায় দুই হাজার মেগাওয়াটের বেশি। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য তৈরি হলেও রামপাল এবং আদানির বিদ্যুৎ ওই সময় প্রয়োজন হবে না।

এর আগে ৭ জুলাই দেশের বিদ্যুৎ ও গ্যাস পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লোডশেডিং চলতে পারে। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘ওই সময়ের মধ্যে আদানি থেকে কয়লাভিত্তিক ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট এবং পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিট থেকে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে। তখন লোডশেডিং কমে আসবে।’

বাংলাদেশের এই সংকটকালীন পরিস্থিতি উত্তরণে বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ ব্যবহারের কোন বিকল্প এখনো পর্যন্ত নেই, তাই বাংলাদেশের জন্য রিজার্ভ ধরে রাখাটাই মূল চ্যালেঞ্জ। আশাকরি সরকার এ ব্যপারে ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

 

তথ্য সূত্রঃ বিভিন্ন ওয়েবসাইট

লেখকঃ
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
একাডেমিক কোঅর্ডিনেটর
ইমপেরিয়াল হাসপাতাল লিমিটেড
প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক, ক্লিনিকেল মেডিসিন,
মেডিকেল কলেজ অব সিয়ামেন ইউনিভার্সিটি, চীন