চলমান সংবাদ

দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ বিদেশে বসে চাঁদাবাজি করছে

সাজ্জাদকে চাঁদা না দেয়ায় কারখানায় আগুন, গ্রেপ্তার ২ চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ হোসেন খান দীর্ঘদিন ধরে পালিয়ে আছেন বিদেশে। তবে বিদেশ গিয়েও থামেনি তার অপকর্ম। বর্তমানে বিদেশ থেকে ফোনেই চলছে তার চাঁদাবাজি। কিছুদিন পরপরই এই ধরনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এবার চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদে একটি ফোম কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ফের আলোচনায় উঠে এসেছে সেই কুখ্যাত সন্ত্রাসী সাজ্জাদের নাম। আগুনে ক্ষতিগ্রস্তের অভিযোগ, সাজ্জাদকে চাঁদা না দেওয়াতেই তার কারখানাতে আগুন লাগানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওই কারখানা মালিকের দায়ের করা মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাতে নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার হাজীরপুল এলাকা থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার দু’জন হলো- মোবারক হোসেন (১৯) ও মো. জিসান (১৯)। তারা বিদেশে পলাতক সাজ্জাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী সহযোগী সন্ত্রাসী বলে জানিয়েছে পুলিশ। বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান জানান, তানভীর আলম নামে এক ব্যবসায়ী সম্প্রতি নগরীর চালিতাতলী এলাকায় ‘কমফোর্ট হোমটেক্স মেট্রেস অ্যান্ড পিলো ফ্যাক্টরি’ নামে মেট্রেস ও বালিশের কারখানা চালু করেন। গত ১৭ ও ১৮ জুলাই দুই দফায় একটি বিদেশি নম্বর থেকে শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের পরিচয় দিয়ে তাকে ফোন করে চাঁদা দাবি করা হয়। কিন্তু তানভীর আলম চাঁদা না দেননি। এরপর গত ২০ জুলাই ভোরে কারখানার পেছনে গিয়ে বোতল থেকে পেট্রোল ঢেলে কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পরে তানভীর বাদী হয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় মামলা দায়ের করেন। ওসি কামরুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনাস্থলে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং বাদীর মোবাইলে আসা বিদেশি কলের সূত্র ধরে আমরা মোবারক ও জিসানকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা আগুন দেওয়ার কথা স্বীকারও করেছে। গ্রেপ্তার আসামিরা শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের হয়ে দেশে তার চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করে। জানা গেছে, সাজ্জাদ গত ১০ বছর ধরে ভারতে আছে। বিভিন্ন সময় সাজ্জাদ বিদেশ থেকে ফোন করে চাঁদা দাবি করেছে- এমন আরও অভিযোগ আমরা পেয়েছি। সর্বশেষ আগুন দেওয়ার ঘটনাটি আমরা বিস্তারিত তদন্ত করে দেখছি।’ চট্টগ্রামের এক সময়ের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ আলী খান। ২০০০ সালের ১২ জুলাই নগরীর বহদ্দারহাটে দিনদুপুরে ব্রাশফায়ারে খুন করা হয় ছাত্রলীগের ৬ নেতা-কর্মীসহ আটজনকে। যা এইট মার্ডার হিসেবে আলোচিত। এ হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দেন শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ। হত্যাকাণ্ডে সাজ্জাদসহ শিবিরের চার ক্যাডারের ফাঁসির রায় দেন আদালত। ২০০১ সালের ৩ অক্টোবর নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার চালিতাতলী এলাকায় কথিত বন্দুকযুদ্ধের পর সাজ্জাদ ও তার সহযোগী আরেক দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার দেলোয়ার হোসেন ওরফে আজরাইল দেলোয়ারকে একটি একে-৪৭ রাইফেলসহ গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। ২০০৪ সালে জামিনে বেরিয়ে ভারতে চলে যায় সাজ্জাদ। সেখান থেকে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে কিছুদিন অবস্থান করে। পরে আবার ভারতে ফিরে আসে। বর্তমানে সাজ্জাদ ভারতে অবস্থান করছে বলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কাছে তথ্য আছে। অভিযোগ রয়েছে, বর্তমানে বিদেশ থেকেই চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন সাজ্জাদ।
# ২৭.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #