চলমান সংবাদ

আমি নির্দোষ, ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি- রায় ঘোষণার পর প্রদীপ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক’র করা মামলার রায় ঘোষণার পর টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার পাননি বলে অভিযোগ করেন। তিনি এবং তার স্ত্রী কোনো দুর্নীতি করেননি বলেও দাবি করেন প্রদীপ। বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদের আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া সময় বারান্দায় প্রদীপ কুমার দাশ চিৎকার করে সাংবাদিকদের সামনে এই দাবি করেন। আদালত কক্ষ থেকে প্রিজন ভ্যানের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রদীপ সেখানে থাকা সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “আমি কোনো দুর্নীতি করিনি। আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমি ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাব। তিনি বলেন, সিনহা হত্যা মামলায় যে রায় দেওয়া হয়েছে, ওখানেও আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। আপনারা তদন্ত করে দেখেন। আমি শুধুমাত্র মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের জন্য যুদ্ধ করেছি। মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি, যাতে যুবসমাজ ধ্বংস না হয়। প্রদীপের ১০-১৫ মিনিট পর আদালত থেকে চুমকিকে বের করা হয়। বাইরে থাকা সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট নই। আমার স্বামী ভালো কাজ করায় বিভিন্ন মহল তার বিরুদ্ধে লেগেছে। ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে আমাদের সুখের সংসার ধ্বংস করে দিয়েছে।” মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় প্রদীপ-চুমকির আইনজীবী সমীর দাশগুপ্ত বলেন, কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার সেলিম এলাহীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। মামলায় সাক্ষী করা হলেও সেলিম এলাহী সাক্ষ্য দেননি। ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে দুইজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীকে আদালতে জেরা করা হয়। বাকি ২২ জনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করেছে। তারা মামলা সম্পর্কে অবগত নয়। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। ন্যায়বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আপিল করবো। অন্যদিকে দুদক’র পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ বলেন, প্রদীপ কুমার দাশ সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে ঘুষ-দুর্নীতি ও ক্ষমতার ব্যবহার করে যেসব সম্পদ অর্জন করেছেন সেগুলো স্ত্রীর মাধ্যমে বৈধ করার চেষ্টা করেছেন। সেটা আদালতে ২৪ জন সাক্ষীর মাধ্যমে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন, মানি লন্ডারিং এবং সম্পদের অপব্যবহারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রায় দেওয়া হয়েছে। আদালত সবকিছু বিচার বিশ্লেষণ করে বলেছেন, আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে এই অপরাধ করেছেন। সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণ ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে আদালত তাদের শাস্তি দিয়েছেন। রায়ে আমরা সন্তুষ্ট, সেটা কার্যকর চাই। বুধবার (২৭ জুলাই) সকাল সোয়া ১১টায় অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রদীপ কুমার দাশের ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকি কারনকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদ। পাশাপাশি আদালত তাদের স্থাবর অস্থাবর সমস্ত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেন। # ২৭.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #