চলমান সংবাদ

চবিতে ছাত্রী নিপীড়নে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার দাবি সিপিবির

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে ন্যক্কারজনকভাবে নিপীড়নের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। এ ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়েছে সিপিবির পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেছেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একজন ছাত্রীকে রাতের আঁধারে তুলে নিয়ে যৌন নির্যাতনের পর আপত্তিজনক ভিডিও ধারণের তথ্য আমরা গণমাধ্যমে পেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনা আমরা কল্পনাও করতে পারি না। আমরা বিস্মিত, স্তম্ভিত। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়–য়া হাজারো ছাত্রীকে নিয়ে আমরা শঙ্কিত। নিজের ক্যাম্পাসে যদি একজন ছাত্রী নিরাপদ থাকতে না পারেন, তাহলে তার নিরাপত্তা আছে কোথায়? একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে যদি এভাবে হেনস্তা হতে হয়, কয়েকজন দুর্বৃত্ত এভাবে নির্যাতন করার সাহস পায়, তাহলে সারাদেশে আমাদের মা-বোনদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কী, সেটা সহজেই অনুমেয়। বিবৃতিতে বলা হয়, ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা যথাযথ হয়নি বলে আমরা মনে করি। রাত ১০টার মধ্যে ছাত্রীদের হলে প্রবেশের বাধ্যবাধকতা দেওয়া প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের নমুনা বলে আমরা মনে করি। এর প্রতিবাদে এবং ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনার বিচারসহ চার দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা এই আন্দোলনের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি জানিয়ে শিক্ষার্থীদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জেনেছি, ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা ধামাচাপা দিতে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি জোর চেষ্টা চালিয়েছেন। তাহলে কী আমরা ধরে নেব যে, ছাত্রী নিপীড়নের সঙ্গে সরকারি দলের ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত? আমরা তাকে গ্রেপ্তার করে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের দাবি করছি। নিপীড়নের ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী বাদী হয়ে মামলা করেছেন। কিন্তু গত চার দিনেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি। প্রশাসন সময়ক্ষেপণের মধ্য দিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের রক্ষার চেষ্টা করছে বলে আমাদের আশঙ্কা হচ্ছে। আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছাত্রী নিপীড়নে জড়িত দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার দাবি করছি। একইসঙ্গে প্রগতিশীল, নিপীড়ন বিরোধী ছাত্রসমাজকে নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। বিবৃতিতে সিপিবি নেতারা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় একসময় অসাম্প্রদায়িক-প্রগতিশীল মুক্তবুদ্ধি চর্চার প্রাণকেন্দ্র ছিল। আশির দশকে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত ইসলামীর দোসর ছাত্রশিবির সশস্ত্র সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে, যার ফলে মুক্তবুদ্ধি চর্চা অনেকাংশে ব্যাহত হয়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাদের ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাসে নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস, অস্ত্রের ঝনঝনানি কমেনি। তাদের দাপটে অসহায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এর সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে ক্যাম্পাসে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা। অতীতেও এমন ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অবহেলা এবং বিচারহীনতার কারণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এখন সাধারণ শিক্ষার্থী বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য পুরোপুরি অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। আমরা এই দমবন্ধ পরিস্থিতি থেকে শিক্ষার্থীদের মুক্তি চাই এবং শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ চাই। # ২১.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #