চলমান সংবাদ

চসিক-চউক সমন্বয় সভায় জলাবদ্ধার কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন

বন্দরনগরীর জলাবদ্ধতা নিরসণে কয়েকবছর ধরে বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্প চলমান থাকলেও জলজটের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলছে না নগরবাসী। জলাবদ্ধতার এই দুর্ভোগের জন্য সেবা সংস্থাগুলোর সম্বয়হীনতাকে দায়ী করে আসছেন বিশিষ্ট নাগরিক ও নগর পরিকল্পনাবিদরা। নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ঢাকতে সংস্থাগুলো এক অপরের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করে আসছিল। বৃষ্টিতে নগরে দুই দিনের জলাবদ্ধতার পর অবশেষে ঘুম ভাঙলো কর্তৃপক্ষের। এ নিয়ে বুধবার (২২ জুন) জরুরি সমন্বয় সভায় বসেন চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন-চসিক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-চউক। নগরের জলাবদ্ধতার কারণ অনুসন্ধানে এবার চার সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে চউক’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস ও সদস্যসচিব করা হয়েছে চসিক প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামকে। এছাড়া সদস্য হিসেবে থাকবেন জলবাদ্ধতা নিরসণে চউক বাস্তবায়নাধীন মেগা প্রকল্পের পরিচালক লেফটেনেন্ট কর্নেল শাহ আলী ও চসিক’র বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাউন্সিল মোবারক আলীকে। চসিক সম্মেলন কক্ষে জলাবদ্ধতা প্রকোপ নিরসনে করণীয় নির্ধারণ সংক্রান্ত বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি বৃষ্টিতে নগরের বেশকিছু এলাকা হাঁটুপানিতে ডুবে যায়। বৃষ্টিতে নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় মেয়রের বাড়িতেও পানি উঠে যায়। এ নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পর নগরের জলাদ্ধতায় করণীয় ঠিক করতে বিশেষ সভার আয়োজন করে চসিক। সভার শুরুতে চসিক প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম নগরের বিভিন্ন খালের বর্তমান চিত্র তুলে ধরেন। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলা সভা শেষে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, জলাবদ্ধতার প্রকল্পের নিরসনের কাজে কিছু খালে বাঁধ রয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতার ভোগান্তিতে মানুষের ধৈর্য্যরে সীমা রয়েছে। অনেক আলাপ- আলোচনা হয়েছে। মেগা প্রকল্পের কাজ করতে গেলে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হবেই। জলাবদ্ধতার পর খালের বাঁধ অপসারণের পরও কেনো পানি জমে থাকছে এর কারণ খুঁজে বের করতে কমিটি গঠন করেছি। গঠিত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি ৭ দিনের মধ্যে পুরো এলাকা পরিদর্শন করে কী সমস্যা তা খুঁজে বের করে ব্যবস্থা গ্রহণে সুপারিশ করবে। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে পানি উঠবে না এটা বলছি না, পানি উঠবেই। কিন্তু কীভাবে দ্রুত নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা যায় সে বিষয়ে আমরা সবাই পরিকল্পনা নির্ধারণ করেছি। গত ৬ এপ্রিল চসিক’র সমন্বয় সভায় চলতি বছরে জলাদ্ধতার নিরসনে মেগা প্রকল্পের আওতায় চউক থেকে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চান মেয়র রেজাউল করিম। প্রকল্প থেকে অর্থ ছাড়ের জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন। অর্থ ছাড়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চসিক মেয়র বলেন, ১০০ কোটি ১০ কোটি কোনো বিষয় না। এখানে ব্যাপার হলো মানুষের ভোগান্তিটা চরমে পৌঁছেছে। এই বর্ষার মধ্যে মানুষ যাতে কষ্ট না পায় সেই চেষ্টা করছি। প্রকল্পের পুরো অর্থ হাতে না পাওয়া নিয়ে চউক চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা যতটুকু কাজ করেছি তার এখনো বিল দেওয়া হয়নি। আমরা ভূমি অধিগ্রহণের জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। শিগগিরই আমরা তা করে ফেলবো। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ-সিএমপি কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর, বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহজাহান, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল মো. শাহ আলী, চসিক’র প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, চউক প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস প্রমুখ। # ২২.০৬.২০২২ চট্টগ্রাম #