চলমান সংবাদ

জলাবদ্ধতার কারণ প্রসঙ্গে সুর পাল্টালেন মেয়র! খালের বাঁধ নয়, দোষ চাপালেন নগরবাসীরর ওপর

বন্দরনগরীর সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগের কারণ হিসেবে এতদিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-চউক’র ওপর দোষ চাপিয়ে আসলেও এবার সুর পাল্টালেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম। গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে মেয়রের বাড়িসহ নগরীর অধিকাংশ এলাকা কোমর থেকে হাঁটু পানি প্লাবিত হওয়ার কারণ হিসেবে চউক বাস্তবায়নাধীন জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন খালে বাঁধ দেয়াকে চিহ্নিত করেন মেয়র। কিন্তু এবার সুর পাল্টে নগরবাসীর ওপর দোষ চাপালেন তিনি। মানব সৃষ্ট বর্জ্যরে কারণে খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় নগরীতে জলাবদ্ধতা তীব্র আকার ধারণ করেছে অভিযোগ করে মেয়র নালা, খাল ও রাস্তাসহ যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি জানান।

কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাউকে দোষারোপ করা জনগণকে বিভ্রান্ত শামিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। নগরীর বিভিন্ন জলাবদ্ধ এলাকার পানি দ্রুত নামতে না পারার নেপথ্যে কারণ খুঁজতে বিভিন্ন এলাকা পরির্দশনে যান মেয়র। নগরীর তক্তারপুল এলাকার অপসারণকৃত বাঁধ পরিদর্শনকালে তিনি বলেন, চকবাজার, ফুলতলা, বাকলিয়া, বহরদারহাট, খাজা রোড, পাঠানিয়াগোদা এলাকায় পানি না নামার মূল কারণ হচ্ছে মানব সৃষ্ট বর্জ্যরে কারণে খালগুলো ভরাট হয়ে যাওয়া। এসব এলাকায় খালগুলো চউক’র মেগা প্রকল্পের আওতাধীন হওয়া সত্তেও জনদুর্ভোগ লাঘবে চসিক খালগুলো থেকে আবর্জনা ও মাটি উত্তোলন করে পানি চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল। কিন্তুজনগণের অসচেতনতার কারণে বর্ষা শুরু হবার পূর্বেই পরিষ্কার করা এ খালগুলো আবার বর্জ্য ফেলার কারণে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসে। সে কারণে কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতার ভোগান্তি প্রকট আকার ধারণ করে।

তিনি বলেন, সেবামূলক সংস্থাগুলোর নাগরিক সেবা নিশ্চিত করাই মূখ্য কাজ। তবে নগরীতে যেসব সেবা সংস্থাগুলো আছে তাদেরকেও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেষ্ট থাকতে হবে। চউক কর্তৃক জলাবদ্ধতার মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খাল ও মাটি ভরাট করা হয়েছে। অনেকগুলো বাঁধ অপসারণ করা হলেও কিছু কিছু অংশে বাঁধ ও মাটির স্তুপ প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে রাখতে হয়েছে। এটাই বাস্তবতা। এখানে কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কাউকে দোষারোপ করার কোনো সুযোগ নেই। এ ধরনের কথাবার্তা সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করার শামিল। দুর্যোগ দুর্বিপাক যে কারণেই হোক না কেন আমাদের উচিত যার যার অবস্থান থেকে সমন্বয়ের মাধ্যমে তা মোকাবেলা করা। যারা নগরীর নালা, খাল ও রাস্তায়সহ যত্রতত্র আবর্জনা ফেলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে তাদের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মেয়র বলেন, সরকার ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২১’র মাধ্যমে এক্ষেত্রে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুই বছরের জেল বা দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডের বিধান রেখে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন প্রণয়ন করেছে। ভবিষ্যতে দায়ীদের বিরুদ্ধে এ আইন প্রয়োাগ করতে আমরা বাধ্য হবো।

এখানে যে যত শক্তিধর হোকনা কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে ছাড় দেয়া হবেনা। তিনি নগরবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, মেয়রের দায়িত্ব নেয়ার পর বিনীতভাবে অনেক আবেদন-নিবেদন করেছি। এই বিনীত অনুরোধকে আমার দুর্বলতা ভাববেন না। যেখানে আমার পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে সেক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতে কাউকেই ছাড় দেয়ার অবকাশ নেই। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যাদের বাড়ির সামনে, দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে, ড্রেইনে, খালে ময়লা-আবর্জনার স্তুপ দৃশ্যমান হবে তাদের বিরুদ্ধে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন প্রয়োগ করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। # ২১.০৬.২০২২ চট্টগ্রাম #