চলমান সংবাদ

প্রথমবারের মতো রপ্তানি করা হবে রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আম

হাড়িভাঙ্গা আম
হাড়িভাঙ্গা আম

জাতীয়ভাবে পরিচিতি পাওয়ার পর এখন দেশের বাইরে হাড়িভাঙ্গা আম রপ্তানির প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

এই আমটি মূলত উত্তরের জেলা রংপুরে আবাদ হয়।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে রংপুরে এ বছর ১,৮৮৭ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আম চাষ করা হয়েছে।

ফলন আশা করা হচ্ছে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৬মেট্রিক টন। সেই হিসেবে ৩০ হাজার দুইশ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করছেন কর্মকর্তার।

যেটার বাজার মূল্য ধরা হয়েছে দেড়শ থেকে দুইশো কোটি টাকা।

কোন কোন দেশে রপ্তানি হতে পারে?

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, হাড়িভাঙ্গা আম রপ্তানি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পাঁচটি দেশে- ভারত, ভুটান, শ্রীলংকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াতে।

সরকারিভাবে জুনের ২০ তারিখে এই হাড়িভাঙ্গা আম পাড়ার কথা বলা হয়েছে।

এরপর জুলাই মাস থেকে আম রপ্তানি করা হতে পারে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. মাহবুবার রহমান বলেন ” মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে এই আমটি রপ্তানি হবে প্রথমবারের মত। গত বছর প্রধানমন্ত্রী ভারতে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু এই বছর প্রথম বারের মত রপ্তানি করা হবে”।

হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন হচ্ছে প্রায় ৩০ বছর ধরে। কিন্তু এই আমের তেমন একটা পরিচিতি ছিল না।

হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান
হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান

মি. রহমান বলেন “এই আমটা লোকালি পরিচিত ছিল কিন্তু জাতীয়ভাবে পরিচিত ছিল না। ২০১৫ সালে ঢাকায় ফল মেলা হলে সেখানে এই আমের পরিচিতি পায়। তখন মানুষ জানলো যে হাড়িভাঙ্গা আমটা রংপুরের বিখ্যাত আম”।

হাড়িভাঙ্গা আমের বৈশিষ্ট্য:

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে হাড়িভাঙ্গা আম গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা উর্ধ্বমূখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশী বিস্তৃত হতে দেখা যায় ।

ফলে উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়ে না এবং আমও কম ঝড়ে পড়ে ।

আমটির উপরিভাগ বেশি মোটা ও চওড়া, নিচের অংশ অপেক্ষাকৃত চিকন ।

আমটি দেখতে সুঠাম ও মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা ।

আমের তুলনায় শ্বাস অনেক ছোট, ভিতরে আঁশ নেই ।

আকারের তুলনায় অন্য আমের চেয়ে ওজনে বেশী, গড়ে ৩টি আমে ১ কেজি হয় । কোন কোন ক্ষেত্রে একটি আম ৫০০/৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে । পুষ্ট আম বেশী দিন অটুট থাকে ।

চামড়া কুচকে যায় তবুও পঁচে না । ছোট থেকে পাকা পর্যন্ত একেক স্তরে একেক স্বাদ পাওয়া যায় । তবে আমটি খুব বেশী না পাকানোই ভাল ।

  • ফুল আসার সময়- মাঘ-ফাল্গুন।
  • পাকার সময়- আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে।
  • ফলের গড় ওজন- ২০০-৩৫০ গ্রাম।
  • কর্তনের পর কতদিন মজুদ সম্ভব- প্রাকৃতিকভাবে সংরক্ষণ ২/৩ দিনের বেশী নয়।
  • হেঃ প্রতি উৎপাদন খরচ- ৩৫০০০/- – ৪০০০০/-(স্থাপনা খরচ বাদে)
  • গড় বাজারদর- ৪০ থেকে ৬০টাকা প্রতি কেজি।
  • হেঃ প্রতি আয়- ৫,৫০,০০০/- টাকা।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা