চলমান সংবাদ

বাণিজ্যমন্ত্রী বরাররে বাসদ(মার্কসবাদী)-র স্মারকলিপি পেশ

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ,সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার, রেশনব্যবস্থা চালুর দাবিতে চট্টগ্রাম ডিসির মাধ্যমে বাণিজ্যমন্ত্রী বরাররে বাসদ(মার্কসবাদী) নেতৃবৃন্দের স্মারকলিপি পেশ।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ,সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার,সর্বজনীন রেশনব্যবস্থা চালু ও খাদ্যপণ্যের রাষ্ট্রীয় বাণিজ্য চালুর দাবিতে গতকাল ১২ জুন সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাণিজ্যমন্ত্রী বরাররে স্মারকলিপি পেশ করেছে বাসদ(মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা।স্মারকলিপি পেশের পূর্বে ডিসি অফিস চত্বরে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ (মার্কসবাদী) চট্টগ্রাম জেলা   কমিটির সদস্য আসমা আক্তার, জাহেদুন্নবী কনক,দীপা মজুমদার প্রমুখ।

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়ে  বলেন, “করোনা মহামারীর কারণে আয় ও সঞ্চয় কমে যাওয়াসহ যে আর্থিক ধাক্কা,তা এখনও বেশিরভাগ মানুষ পুরো কাটিয়ে উঠতে পারেনি।এর মধ্যে সমস্ত কিছুর মূল্যবৃদ্ধি এ মানুষের জীবন দুঃসহ করে তুলেছে।আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির চেয়েও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে দাম বাড়িয়েছে আরো বেশি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সয়াবিন তেলের মূল্যবৃদ্ধিতেই তা স্পষ্ট। জনগণ পরিষ্কার বোঝে, এ মূল্যবৃদ্ধি একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং এ সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা আওয়ামীলীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ।  একারণে  সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটে নিলেও, সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা। বাণিজ্যমন্ত্রীর কাজ যেন এ সিন্ডিকেট পাহারা দেওয়া।’’

নেতৃবৃন্দ  রেশনব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তনের দাবি জানিয়ে বলেন,‘‘ মুনাফালোভী ব্যবসায়ীগোষ্ঠী ও অসাধু সিন্ডিকেটের হাত থেকে সীমিত ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষকে বাঁচাতে হলে আজ প্রয়োজন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য বিশেষত চাল, ডাল, আটা,  খাবার তেল, চিনি, পেঁয়াজের মতো খাদ্যদ্রব্যের দাম কমানো বা রেশনব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন। নব্বই দশক পর্যন্ত আমাদের দেশে রেশনিং ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। নব্বই দশক হতে সাম্রাজ্যবাদী সংস্থা বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এর  প্রেসক্রিপশনে তৎকালীন বিএনপি সরকার ১৯৯২ সালে রেশনিং ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়। সাধারণ মানুষের রেশন তুলে দেওয়া হলেও  আর্মি,পুলিশ, বিজিবি, আনসার, কারারক্ষী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মচারীরা  এখনও রেশন সুবিধা পেয়ে থাকে।  প্রতি মাসে পুলিশের সব সদস্য প্রতি কেজি চাল ২ টাকা ১০ পয়সা এবং প্রতি কেজি গম ১ টাকা ৭৭ পয়সা দরে  চার সদস্যের পরিবারের জন্য ৩৫ কেজি চাল, ৩০ কেজি আটা, ৮ কেজি ডাল, ৮ লিটার তেল ও ৫ কেজি চিনি পেয়ে থাকেন। এ কারণেই,আমরা দাবি করেছি,আর্মি,পুলিশের রেটে গরীব,শ্রমজীবি নিম্নআয়ের মানুষের জন্য রেশন চাই। আমাদের দেশে রেশনিং ব্যবস্থা তুলে দেওয়া হলেও ভারতে গণরেশন ব্যবস্থা সফলতার সাথে চালু আছে। ভারতে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ রেশনব্যবস্থার সুবিধা পায়। ভারতে রেশনব্যবস্থা ডিজিলাইজেশন করার ফলে রেশনকার্ড নিয়ে দূর্নীতির সুযোগও কমে এসেছে। ভারত যদি রেশনব্যবস্থা চালু রাখতে পারে,বাংলাদেশ কেন রেশনব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করতে পারবেনা?”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন,‘‘বৃহৎ ব্যবসায়ীগোষ্ঠীর  সমর্থনে রাতের আঁধারে ক্ষমতায় আসা আওয়ামীলীগ সরকার তার গণবিরোধী ফ্যাসিবাদী শাসন টিকিয়ে রেখেছে। এ গোষ্ঠী নাখোশ হবে, তাই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে  সরকার কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা এ পরিস্থিতিতে তীব্র গণআন্দোলন না থাকলে মূল্যবৃদ্ধি লাগামছাড়া হতে বাধ্য। এজন্যই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার যাতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়, সেজন্য চায় ভুক্তভোগী জনগণের সংগঠিত গণআন্দোলন। বাঁচতে হলে সে আন্দোলনে আজ সবাইকে সামিল হতে হবে।’’

# ১৩/০৬/২০২২, প্রেস বিজ্ঞপ্তি #