চলমান সংবাদ

চমেক হাসপাতালে মানবিক বিপর্যয়

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আগুনে পোড়াসহ নানাভাবে আহতদের চিকিৎসায় রক্তের জন্য সাহায্য চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মেডিকেলে বর্তমানে ডিউটি নেই তাদেরকেও দ্রুত মেডিকেলে গিয়ে আহতদের চিকিৎসা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন। মেডিকেল কলেজ এলাকায় যেসব এ্যম্বুলেন্স থাকে তার সবগুলোকেই দুর্ঘটনাস্থল থেকে মেডিকেলে নিয়ে আসার জন্য পাঠানো হয়েছে। মেডিকেলে এক অবর্ননীয় মানবিক বিপর্যয়ের চিত্র দেখা গেছে। চট্টগ্রামে নিকট অতীতে যত অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তাতে এতবড় মানবিক বিপর্যয় ঘটেনি। সীতাকুন্ড থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত এই রাতের নিস্তব্ধতা মধ্যে নিহত- আহতদের স্বজনদের আর্তনাদে উপস্থিত সবাই সমব্যাথী হয়ে পড়েন। শুধু এম্বুলেন্সের চিৎকার, গুরুতর আহতদেরকে নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসক নার্স ও রোগীদের দোড়াদৌড়িতে পুরো হাসপাতাল জুড়ে প্রচন্ড শোকের আবহ বিরাজ করছে। এদিকে ফায়ার সার্ভিস – পুলিশ – শ্রমিক – সাধারণ মানুষ প্রায় তিন শতাধিককে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের কারো হাত নেই, কারো পা নেই, কারো নাড়ী ভূড়ি বের হয়ে গেছে, কারো পুরো শরীর দগ্ধ, কারো মুখ ঝলসে গেছে। অতিরিক্ত আহত আঘাতপ্রাপ্ত রোগীর চাপে অনেককে ওয়ার্ড ছাড়াও হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। চট্টগ্রাম শহরের অন্যান্য হসপিটালগুলোতেও চিকিৎসা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সিভিল সার্জন। আত্নমানবতার সেবায় দ্রুত আহতদের চিকিৎসার জন্য রক্ত লাগবে জানিয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন গণমানুষকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। রাসায়নিক দ্রব্যের কন্টেইনার বিস্ফোরণ ও পানির স্বল্পতাসহ বিরূপ পরিবেশের কারণে যেনো অসহায় হয়ে পড়েছে ফায়ার সার্ভিস ইউনিটগুলো। ফায়ার সার্ভিস এর উদ্ধারকারী ইউনিটের একজন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, যেভাবে বিস্ফোরণ হচ্ছে তাতে আমাদের পক্ষে ভেতরে থাকা সম্ভব হয়নি। ফলে আমরা ডিপোর মেইন গেট এ চলে আসি। ফায়ার সার্ভিস জানায় শনিবার রাত ৯টার দিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন লাগে এবং এ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনবার জন্য কুমিরা ফায়ার সার্ভিস এর তিনটি ইউনিট চেষ্টা করে। কিন্তু রাত প্রায় ১০টা ৫৫ মিনিটে এক কন্টেইনার হতে অন্য কন্টেইনারে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।এ সময় ডিপোতে প্রায় ৫০ হাজার কন্টেইনার ছিল বলে জানা গেছে। একটি কন্টেইনারে রাসায়নিক দ্রব্য থাকায় এবং এটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে এবং আশে পাশে প্রায় ৫-৬ কি.মি. এলাকা জুড়ে প্রকম্পিত হয়। বহু ঘর বাড়ী-স্কুল- কলেজ- মাদ্রাসা-মসজিদের কাঁচের জানালা দরজায় ফাটল ধরে। বহু গাছপালাও ফেটে যায় বলে জানা যায়। বিএম কন্টেইনার ডিপো এলাকার এবং আশে পাশের এক কিলোমিটারে বসবাসরতঃ সকল সাধারণ মানুষ বাড়ী ঘর ছেড়ে পাহাড়ের কিনারায় আশ্রয় গ্রহন করেছে। এ ব্যাপারে ডিপো মালিকদের সংগঠন বিকডার প্রেসিডেন্ট নুরুল কাইয়ুম খান জানান,ওই ডিপোতে কম্বোডিয়া থেকে আসা হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের চালান ছিল একটি।সেখান থেকে আগুন লেগে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহজাহান শিকদার গণমাধ্যমকে বলেন, রাসায়নিক দ্রব্যের কারনে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে বলে দাবী করছে ফায়ার সার্ভিস। থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্ধ আসছে। ভোর রাত অব্ধি প্রায় ২০০ কন্টেইনারে আগুন জ্বলছিল বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস। #০৫/০৬/২০২২ চট্টগ্রাম#