চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে স্ত্রী-মেয়েকে হত্যা করে লাশ গুমের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে লাশ গুমের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদন্ডের আদেশ দেন। রোববার (২৯ মে) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস ওয়াহিদ এই রায় দেন। ২৫ বছরে আগে ঘটনায় দন্ডিত রওশন আলী রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। দন্ডিত রওশন ফটিকছড়ি উপজেলার মতিননগর গ্রামের বাসিন্দা, তিনি ফটিকছড়ির বাগানবাজার এলাকার একটি চা বাগানের শ্রমিক ছিলেন। আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালের জুনে রওশনের স্ত্রী মমতাজ বেগম তার এক বছরেরও কম বয়সী মেয়ে আকলিমাকে টিকা দেওয়ার জন্য ফটিকছড়ির রাঙ্গামাটিয়া এলাকায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যান। ফেরার পথে রওশনের সঙ্গে পথে তাদের দেখা হয়। এসময় মমতাজ মেয়েকে নিয়ে তার বাপের বাড়ি ফটিকছড়ির হলদিয়া গ্রামে যাওয়ার আবদার করেন। রওশন তাকে বাপের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে বাগানবাজার এলাকায় একটি চা বাগানে নিয়ে যান। চা বাগানের ভেতরে একটি নির্জন স্থানে মমতাজ ও আকলিমাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। তাদের লাশ বাগানের ভেতরে ছয় নম্বর কূপে ফেলে দেন রওশন। এরপর তিনি উধাও হয়ে যান। মেয়ে, জামাতা ও নাতনির সন্ধান না পেয়ে মমতাজের বাবা আব্দুর রহিম ফটিকছড়ি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ১৯৯৭ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রওশন ওই চা বাগানে ফিরে আসেন। তখন অন্য শ্রমিকরা মিলে তাকে আটক করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদে রওশন স্ত্রী ও মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করলে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। ফটিকছড়ি থানা পুলিশ তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে রওশন স্ত্রী ও মেয়ের লাশ ফেলে দেওয়ার স্থান ছয় নম্বর কূপ দেখিয়ে দেয়। পুলিশ ওই কূপ থেকে হাড়গোড়, মাথার খুলি এবং মমতাজের স্বর্ণের নাকফুল উদ্ধার করে। ১৯৯৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মমতাজের বাবা আব্দুর রহিম বাদি হয়ে রওশনের বিরুদ্ধে ফটিকছড়ি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, রওশন ও মমতাজের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দাম্পত্য কলহ চলছিল। এর জের ধরে পরিকল্পিতভাবে রওশন তার স্ত্রী ও মেয়েকে খুন করে লাশ গুমের উদ্দেশে কূপে ফেলে দেন। অতিরিক্ত জেলা পিপি লোকমান হোসেন চৌধুরী বলেন, মামলা তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ২০ জুলাই রওশনকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ১৯৯৯ সালের ৬ এপ্রিল আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় আসামিকে সাজা দেন। গ্রেপ্তারের ১৩ বছর পর ২০১০ সালে রওশন জামিনে গিয়ে পলাতক হয়ে যান। # ২৯.০৫.২০২২ চট্টগ্রাম #