চলমান সংবাদ

নানা অজুহাতে দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতাদের অসন্তোষ-ক্ষোভ

নানা অজুহাতে দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্যের দাম। সম্প্রতি সরকারের আমদানি অনুমতি বন্ধ রাখার অজুহাতে কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সে সঙ্গে বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে মসুর ডাল, চিনি, আটা, ময়দা, ডিম ও গুঁড়া দুধের দাম। ডলারের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে পণ্যগুলোতে ৫ থেকে ৭ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ানো হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। নিত্যপণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন নি¤œ ও মধ্য আয়ের মানুষ। ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে আনতে সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। চকবাজারের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে সবকিছু দাম বেশি। অসাধু ব্যবসাযীরা অতিরিক্ত মুনাফা করতে প্রশাসনের তৎপরতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে। আর অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রশাসনের কোন মনিটরিং নেই। অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। তিনি বলেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। ছোট চাকরি করে এমনিতেই সংসার চালানো দায়। এরমধ্যে সবকিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদের মতো মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে পড়বে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১৩ মে) নগরের কাজীর দেউড়ি ও রিয়াজুদ্দীন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হওয়া পেঁয়াজ এখন ১০ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মসুর ডালে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দুই সপ্তাহ আগে ৭৮ টাকায় বিক্রি হওয়া চিনি এখন ৮৫ টাকায়, ৩৮ টাকায় বিক্রি হওয়া খোলা আটা ৪০ থেকে ৪২ টাকা, খোলা ময়দা কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বিভিন্ন কোম্পানির গুঁড়োদুধ কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে এখন সাড়ে ৭শ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া গত সপ্তাহে ১০৫ টাকায় বিক্রি হওয়া ফার্মের মুরগির ডিম ডজন ১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি অনুমতি না পাওয়ায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে পেঁয়াজ আনা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সরবরাহ সংকটে পণ্যটির দাম বেড়ে গেছে। পাশাপাশি ডলারের দাম বৃদ্ধি, আমদানি খরচ বৃদ্ধি ও পরিবহন খরচ বাড়ার কারণে আমদানি করা ডাল, চিনিসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়েছে। কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন জানান, একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা করতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে দেখেছি- তেল মজুদ করে মানুষকে জিম্ম করে বেশি দামে বিক্রি করছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ভোক্তাকে স্বস্তি দিতে হলে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করতে হবে। কেন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে, কারা সিন্ডিকেট করছে- এসব খতিয়ে দেখে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। যারা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়ায় সেসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এদিকে আমদানি করা রসুন প্রতিকেজি ১২০ টাকা ও দেশি রসুন ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা ৮০ ও চায়না আদা ১শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কাঁচাবাজারে প্রতিকেজি বেগুন ৮০ টাকা, টমেটো ৬০, করলা ৮০ টাকা, গাজর ৯০ থেকে ১শ’ টাকা, চাল কুমড়া ৫০, লাউ ৬০, মিষ্টি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা-পটল ৬০, ঢেঁড়স ৫০, কচুর লতি ৮০, পেঁপে ৪০, বরবটি ৬০, ধুন্দুল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে গরুর মাংস প্রতিকেজি ৬৮০ থেকে ৭শ’ টাকা ও খাসির মাংস ৯শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজিতে। # ১৩.০৫.২০২২ চট্টগ্রাম #