মতামত

আমি সিরাজুল আলম খান বলছি –পাঠক প্রতিক্রিয়া – ৪

– অপু সারোয়ার

নিউক্লিয়াস ডুবে আছে সংখ্যার মাঝে, শূন্যের মাঝে

সিরাজুল আলম খান প্রাতিষ্ঠানিক লেখা পড়ায় ঈর্ষণীয় ভাল ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি গণিত শাস্ত্রে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। রাজনীতিকে পাথেয় করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবনের ইতি টেনে ছিলেন জনাব খান। ১৯৬০-১৯৭০ এর দশককের প্রতিবাদী যুব সমাজের  রাজনৈতিকভাবে অগ্রসর চিন্তার মানুষদের অনেকেই পরিবর্তনের আকাঙ্খায়  প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাকে পদাঘাত করে জনতার কাতারে সামিল হয়েছিল। প্রতিবাদী যুবকদের নেতৃত্বের বড় অংশ যত তাড়াতাড়ি বামদিকে ঝুঁকেছিলেন বয়স বাড়ার সাথে ঠিক সমান গতিতে দক্ষিণ পন্থী রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েছে। সিরাজুল আলম খানও দক্ষিণ  দিকে ঝুঁকেছেন।  জনাব খানের দক্ষিণ পন্থার দিকে ঝুঁকে পড়া প্রাক্তন চৈনিক পন্থী কাজী জাফর বা প্ৰাক্তন জাসদ শাহজাহান সিরাজ থেকে পুরোপুরি ভিন্ন। ‘ অদলীয় ‘ ভাবে শেখ মুজিব , জিয়া এরশাদের রাজনৈতিক অভিসারে মিলিত হয়েছন জনাব খান । আমি সিরাজুল আলম খান বলছি বই থেকে জানা যায় শেখ মুজিব ও জিয়াউর রহমানের খুনের সময় জনাব খান দেশের বাইরে ছিলেন। এই হত্যাকাণ্ডগুলির সাথে সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জড়িত থাকার বিষয় স্পষ্ট। তবে ইতিহাসের কাকতলীয় পাদটীকা উল্লেখ থাকবে  বাংলাদেশের দুই রাষ্ট্র প্রধান খুনের সময় সিরাজুল আলম খান বিদেশ -বিভুঁইয়ে ছিলেন। আমি  সিরাজুল আলম খান বলছি বই প্রকাশের আগে জনাব খানের রাজনৈতিক অভিসারের কথা নিয়ে কানাঘুষা ছিল। এই বইয়ের প্রকাশ ও নিজ জবানীতে স্বীকারোক্তির জন্য বইটি রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম দলিল হয়ে থাকবে।

পূর্ব পাকিস্থান ছাত্রলীগ যুদ্ধপূর্ব কালে আন্দোলন সংগ্রামের বাস্তবতা আর নিউক্লিয়াস হচ্ছে ফিকশন। সিরাজুল আলম খানের নিজ বয়ানে এই ফিকশন উঠে এসেছে সাবলীল ভাবে। জনাব খানের বই থেকে নিউক্লিয়াসের সদস্য সংখ্যা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য নিচে দেওয়া হল।

(১) ১৯৬৩ এর মাঝামাঝি আমি ও রাজ্জাক জেলে যাবার আগে পর্যন্ত …………’নিউক্লিয়াস’ এর কাজের বহুগুন বিস্তার ঘটে। ……… আমরা জেলে থাকা সত্বেও ১৯৬৮ সালের আন্দোলন শুরুর আগ মুহূর্ত অবধি ‘ নিউক্লিয়াস’ এর সংখ্যা বেড়ে ১২০০-এ দাঁড়ায়। -পৃষ্টা ৬১.

(২) দফাকে [ ১৯৬৬] কেন্দ্র করে ছাত্র রাজনীতিতেও এক মেরুকরণের সৃষ্টি হয়। ………. এ পর্যায়ে ‘নিউক্লিয়াস’কে সম্প্রসারিত করার সুযোগ বিশেষ ভাবে কাজে লাগানো হয়। ‘নিউক্লিয়াস’ এর সদস্য সংখ্যা এ সময় প্রায় চার হাজার হয়ে যায়। – পৃষ্টা ৬৫

(৩) ১৯৬৬ সালের ৭ জুনের হরতাল পর্যন্ত সারাদেশে নিউক্লিয়াস এর সদস্য সংখ্যা দেড় থেকে দুই হাজার ছিল – পৃষ্ঠা ৭৩।

(৪) ২৩তারিখ [ ১৯৬৯] রাতে আমাদের ‘নিউক্লিয়াস এর সদস্যদের বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে নির্দেশ দেওয়া হলো। ততদিনে নিউক্লিয়াস সদস্যের সংখ্যা ঢাকা শহরে তিন হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঢাকার আশেপাশের এলাকায় (যেমন মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ) এই সংখ্যা হবে আড়াই হাজার। -পৃষ্ঠা ৯৬। অর্থাৎ তৎকালীন ঢাকা জেলা (ঢাকা শহর, বিশ্ববিদ্যালয় ও সব গুলি মহুকুমা) মিলে সদস্য সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার। এই পর্যায়ে সারাদেশের সদস্য সংখ্যার উল্লেখ নেই জনাব খানের জবানীতে।

(৫) ১৯৬৭-৬৯ মধ্যে নিউক্লিয়াস (বিএলএফ) এর সদস্য সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়। -পৃষ্ঠা ১৪৩।

জনাব খান গণিত – পরিসংখান নিয়ে পড়াশুনা করেছেন। তবে উপরের খানের বর্ণিত তথ্য থেকে ‘নিউক্লিয়াস’ এর নির্ভরযোগ্য সদস্য সংখ্যা পাওয়া দুস্কর। ‘নিউক্লিয়াস’ এর সদস্য সংখ্যা নিয়ে জনাব খানের বয়ান রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ শিশুতোষ কবিতার কথা স্মরণ করিয়ে দেয় । “ভোলানাথ লিখেছিল/তিন-চারে নব্বই/গণিতের মার্কায়/কাটা গেল সর্বই। /……. /’লিখেছিনু ঢের বেশি’/এই তার গর্বই। ”

সিরাজুল আলম  খান , আব্দুর রাজ্জাক ,কাজী আরেফ আহমেদ , ডাক্তার মাহফুজর রহমান, মহিউদ্দিন আহমদ সহ অনেকেই  নিউক্লিয়াস নিয়ে লিখেছেন নিয়েছেন। প্রথম  তিন জন নিউক্লিয়াস এর স্রষ্টা আর  মাহফুজর রহমান চট্টগ্রামের সংগঠক। আর মহিউদ্দিন আহমদ ১৯৭২ সালের পূর্ব পর্যন্ত নিউক্লিয়াস এর নাম জানতেন না দাবী করে সংবাদ পত্রে লিখেছিলেন। আবার প্রতিনায়ক বইয়ে নিউক্লিয়াস তত্বকে মহিমান্তিত্ব করেছেন।  এর বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছোট বড় বেশ কিছু লেখা রয়েছে। নিউক্লিয়াস এর কর্মী সংগ্রেহের প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনাব খান লিখছেন ” যিনি রিক্রুট করবেন তিনি তাঁর নিচের সবার পরিচয় জানবেন। তিনি তাঁকে যিনি রিক্রুট করবেন তিনি কেবল তাকেই চিনবেন। “-পৃষ্ঠা ৪৪।  এই বই গুলি ইতিহাসের অংশ। ইতিহাস জানার জন্য দরকারী। তবে এই সব বইয়ে অতি প্রাথমিক তথ্য এড়িয়ে গেছেন নিউক্লিয়াস স্রস্টা ও নিউক্লিয়াস এর প্রথম যুগের বয়াত গ্রহনকারীরা।    নিউক্লিয়াস এর প্রাথমিক পর্যায়ে সিরাজ -রাজ্জাক -আরেফ -আজাদ ছিল নিউক্লিয়াসে স্রষ্টা। এই স্রষ্টার বলতে বা লিপিবদ্ধ করতে অক্ষম হয়েছেন প্রথম করা নিউক্লিয়াস ভুক্ত হয়েছিলেন। নিউক্লিয়াস এর ইতিহাস সম্পর্কে আন্তরিক হলে জনাব খান সর্ব প্রথম  নিজে যাদেরকে দল ভুক্ত করেছিলেন তাদের নাম উল্লেখ্য করতে পারতেন।  জনাব খানের বিক্রুট দের  কাছ থেকে জানা সম্ভব হতো তাদের প্রথম রিক্রুট করা। এই ভাবেই দুই / তিন স্তরের নাম বের করে নিউক্লিয়াসে শুরুতে  করা ছিলেন তা বুঝতে     পারা সম্ভব । কেউ বলতে পারেন এত সব নাম যুক্ত করলে বইয়ের সৌন্দর্য্য হানি হতে পারত। সিরাজুল আলম খান এই বইয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৫০ জনের মত রাজনৈতিক কর্মীর নাম উল্ল্যেখ করেছেন। ইতিহাসের স্পষ্টতার জন্য ধারাবাহিক ভাবে আরো দুই /তিন  ডজন নাম উল্ল্যেখ করলে নিউক্লিয়াস তত্ব  সংহত হতে পারত।  এই বইয়ের অনুলেখক শামসুদ্দিন পেয়ারা উল্ল্যেখ করতে পারেন নাই তাঁকে কে নিউক্লিয়াসের বয়াত দিয়েছেন। আর তার কাছ থেকে বয়াত গ্রহণ কারী করা ছিলেন। এই বইয়ে আ স ম রবের লেখা যুক্ত হয়েছে। জনাব রব উল্ল্যেখ করতে পারেন নাই তাঁকে কে বিক্রুট করেছেন অথবা কোন মানুষকে তিনি রিক্রুট করছিলেন।

১৯৭০ এর নির্বাচন তার পর

শিরোনামটি জনাব খানের আত্মজীবনী থেকে ধার করা। এই শিরোনামে ১২৯ -১৩৬ পৃষ্টা পর্যন্ত লিখেছেন জনাব খান । শুরুতেই বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে শুরু করেছেন। জনাব খান লিখছেন ” মওলানা ভাসানী ও তার সমর্থক ন্যাপ ছাত্র ইউনিয়নের চীনপন্থী অংশ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের বিরোধিতা করে। সিরাজ সিকদারের পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টিও নির্বাচনের বিরোধিতা করলো। “- পৃষ্টা ১৩০। ভাসানী ও অন্য চীনপন্থীরা নির্বাচন বর্জন করেছিল সঠিক তথ্য । ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ভাসানী প্রথমে রাজী ছিলেন। শেষের দিকে   নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে যান। এই বর্জনের পিছিনে ছিল ন্যাপের মধ্যে সক্রিয় চীনপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি গুলি। চীন পন্থী দল গুলি নির্বাচন বর্জনের পিছনে ভারতের নকশাল আন্দোলনের প্রভাব ছিল। মওলানার রাজনীতির বাহক নেতাকর্মীর সংখ্যা ন্যাপের মধ্যে খুব কম ছিল। অকমিউনিস্ট যাঁরা ভাসানীর সাথে ছিলেন তাদের প্রতি রাজনৈতিক ভাবে আস্থাশীল ছিলেন না। যার বহিঃপ্রকাশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ কালে  ভারতে যাওয়ার সময়  রাজনৈতিক সহকারীর হিসেবে সাইফুল ইসলামকে সাথে নেন। সাইফুল ইসলাম ন্যাপ – ভাসানীর সাথে যুক্ত ছিলেন। সাইফুল ইসলাম ন্যাপ-মোজাফফরের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন। ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে জাতীয় নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ সদর আসনে ন্যাপ-মোজাফফরের প্রার্থী ছিলেন। কিন্তু দল হিসেবে সর্বহারা পাটির আত্ম প্রকাশ ১৯৯৭১ সালের জুন মাসে প্রতিরোধ যুদ্ধের মধ্যে। সিরাজ সিকদার ও তার অনুসারীরা ১৯৬৭ সালে ঢাকায়  মাও সেতুং চিন্তাধারা গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলেন। ১৯৬৮ সালে এই গ্রুপটি পূর্ব বাংলার শ্রমিক আন্দোলন গঠন করেন। যে দলের জন্ম হয় নাই ১৯৭০ সালে সেই দলের পক্ষে নির্বাচন বর্জন কি করে সম্ভব তা ব্যাখ্যার দাবী রাখে।

যুদ্ধপূর্ব কালে ভাসানী -ন্যাপের ছাতার নিচে যাঁরা সক্রিয় ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রভাবকের কাজ করেছেন তাদের অনেকেই ১৯৭০ সালের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্তের ভুল সিদ্ধান্তকে লাঘব করার জন্য কলম ধরেছেন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে, ভাসানী যদি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকতেন তাহলে পূর্ব-পাকিস্তানে ভোট ভাগাভাগি হত ।  ভোট ভাগাভাগির কারণে  আওয়ামী লীগের একচেটিয়া সংখ্যা গরিষ্ট আসন পাবার সম্ভবনা থাকতো না। স্মৃতিচারণামূলক ‘শতাব্দী পেরিয়ে’ বইতে বামপন্থী রাজনীতিবিদ হায়দার আকবর খান রনো লিখেছেন- , “আমার মনে হয়, ভাসানী মনে চেয়েছিলেন শেখ মুজিবকে ওয়াকওভার দিতে, যাতে শেখ মুজিবুর এককভাবে বেরিয়ে আসেন। তাতে স্বাধীনতার প্রশ্নটি সহজ হতো বলে তিনি ভেবেছিলেন।” হায়দার আকবর খান রনো মতামত মূল্যবান। তবে পর্যবেক্ষণ / বক্তব্যটি ‘ আমার মনে হয় ‘ এবং  ‘ভাসানী মনে চেয়েছিলেন ‘ এর উপর ভিত্তি করে দাঁড়িয়ে আছে।  যার যুক্তি গ্রাহ্যতা শুন্যের কোঠায়। হায়দার আকবর খান রনোরা ৬ দফা আন্দোলনকে সমর্থন করেন নাই। তবে আওয়ামী লীগ ও ছয়দফার পক্ষে যে জোয়ার উঠেছিল সে সম্পর্কে সঠিক মূল্যায়নে আসতে পড়েছেন।  রনোর বর্ণনায়, ” দক্ষিনপন্থী দলগুলো শেখ মুজিবকে ভারতের হিন্দুদের দালাল হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তা কাজে আসেনি। জনমনে তখন ভারত নয়, পশ্চিম পাকিস্তান বিরোধিতাই প্রবলভাবে কাজ করেছিল।”

১৯৭০ সালের নির্বাচন ছিল অখন্ড পাকিস্থানের প্রথম ও শেষ সার্বজনীন ভোটাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন। ন্যশনাল এ্যাসেম্বলীতে আওয়ামী লীগ প্রত্যক্ষ ভোটে ১৬০ টি আসনে জয়লাভ করে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। সাধারণ নির্বাচনের একই সাথে প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল । এই  নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তান এ্যাসেম্বলীর ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৮৮টিতে জয়লাভ করেছিল । ১৯৭০ সালের নির্বাচনের বছর চারেক আগ  থেকে শেখ মুজিবুর রহমান ছয়দফা দাবী নিয়ে জনমত গঠন করতে থাকেন। নির্বাচনী প্রচারের সময় ছয়দফার বিষয়টি প্রধান  বিষয় হিসেবে সামনে আসে । ছয় দফা আন্দোলনের এক পর্যায়ে আওয়ামীলীগ “সোনার বাংলা শ্মশান কেন?” পোস্টার প্রকাশ করেছিল। ‘সোনার বাংলা’ শ্লোগানের ভিত্তি ছিল ছয়দফা – অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ। এই পোস্টার তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মনে দাগ কেটেছিল। যার প্রতিফলন হয়েছিল ভোটার ফলাফলে।

আমি সিরাজুল আলম খান বইয়ে যে সব বক্তব্য লিপিবদ্ধ করা হয়েছে  তা নিতান্তই জনাব খানের নিজেস্ব । ঘটনার এক পক্ষের বক্তব্য মাত্র। এই সব বক্তব্য অনেক ক্ষেত্রেই ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই , দ্বিতীয় বা তৃতীয় কোন ব্যক্তির বক্তব্যের সাথে জনাব খানের বক্তব্যের আকাশ – পাতাল ফারাক।  ১৯৭০ সালের নির্বাচন নিয়ে সিরাজুল আলম খানের বক্তব্য তৎকালীন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদের বক্তব্য থেকে বেশ ভিন্ন। জনাব খানের বক্তব্য ” সে সময়ে আওয়ামীলীগে যাই ও প্রাদেশিক পরিষদে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার মতো যোগ্যতাসম্পন্ন যথেষ্ট প্রার্থী ছিল না।  আমি মুজিব ভাইকে বললাম চলমান আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বেরিয়ে আসা প্রায় ২০০ জনকে মনোনয়ন দিতে । তিনি [ শেখ মুজিব ] তাই করলেন। ” – পৃষ্ঠা ১৩০। তাজউদ্দীন আহমেদ তখন জানিয়েছিলেন, জাতীয় পরিষদের ১৬২টি আসনের জন্য আবেদনপত্র পাওয়া গেছে ৩৫৯টি। ( সূত্র : বিবিসি বাংলা, ঢাকা। ৭ ডিসেম্বর ২০২০ ) .। তাজউদ্দীন আহমেদের বক্তব্য আমলে নিলে জনাব খানের ‘ যোগ্যতাসম্পন্ন যথেষ্ট প্রার্থী ছিল না” বক্তব্য নাকচ হয়ে  যায়। গড়ে প্রতিটি আসনের বিপরীতে আড়াই জন প্রাথীর কথা বলেছেন তাজউদ্দীন আহমেদ। সমাজে তাজউদ্দীন আহমেদের গ্রহণ যোগ্যতা সিরাজুল আলম খানের চেয়ে ঢের বেশী।

সিরাজুল আলম খান যোগ্যতাসম্পন্ন যথেষ্ট প্রার্থী না থাকার কথা বলেছেন। বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। “জাতীয় পরিষদের জন্য আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে ৪৭.৫৩ শতাংশ ছিলেন আইনজীবী, ১৯.১৩ শতাংশ ব্যাবসায়ী, ৭ শতাংশ জোতদার এবংহ ৬.১৭ শতাংশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। প্রার্থীদের ৮১.৪৩ নূন্যতম ছিলেন স্নাতক ডিগ্রিধারী, যার মধ্যে ৬১ শতাংশ ছিল স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি ধারী। (আওয়ামীলীগ: উত্থান পর্ব ১৯৪৮-১৯৭০- লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ – পৃষ্ঠা) । ‘যোগ্যতাসম্পন্ন ‘ বলতে  কি বুঝতে চেয়েছেন স্পষ্ট করে বলেন নাই জনাব খান ।  অস্পষ্ট বর্ণনার আলোচনা খুব বেশি দূর এগুতে পারে না ! সিরাজুল আলম খানের দাবী  আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বেরিয়ে আসা প্রায় ২০০ জনকে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিতে শেখ মুজিবর রহমানকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যদিয়ে গড়ে উঠা বড় জোর ১০/১৫ জন প্রার্থী হিসেবে মনোয়ন পেয়ে থাকবেন। সিরাজুল আলম খান কথিত ২০০জন মনোনয়ন পাওয়ার ১০/২০ জনের নাম পর্যন্ত উল্লেখ্য করতে অসমর্থ হয়েছেন। ১৯৭০ এর নির্বাচনে  আন্দোলনের মধ্যদিয়ে বেরিয়ে আসা প্রায় ২০০ জন মনোনয়ন পান নাই এর বড় প্রমান হচ্ছে সিরাজুল আলম খানের আত্মজীবনী। এই বইতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রায় তিন ডজন তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সংগঠকদের নাম উল্ল্যেখ করেছেন জনাব খান । খান উল্লেখিত ছাত্রলীগের  সংগঠক – নেতা হিসেবে যুদ্ধ পূর্ব রাজনীতিতে ও মুক্তিযদ্ধের বড় ভূমিকা রেখেছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে এই সংগঠক – নেতাদের  কেউ প্রার্থীর জন্য মনোনীত হন নাই।  সারা দেশে জেলা – মহুকুমা -থানা ছাত্রলীগের সভাপতি- সাধারণ সম্পাদক বা ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কোন নেতাই ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রার্থী ছিলেন না। তা হলে জনাব খানের কথিত ২০০ জন প্রার্থী করা ছিলেন ! গণিতজ্ঞ সিরাজুল আলম খানের সাধারণ হিসেবের গরমিল হচ্ছে খানের অতন্দ্র অতিকথনের ধারাবহিকতা মাত্র। তৎকালীন ছাত্রলীগের অনেকেই নির্বাচনে মনোনীত হওয়ার জন্য যোগ্য ছিল। কিন্তু নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তৎকালীন সময়ে অলিখিত সামাজিক ভাবে স্বীকৃতি বয়সের নিচে অবস্থান করার জন্য এই নেতারা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করেন নাই। আওয়ামীলীগের প্রতিষ্টিত নেতারা যুবকদেরকে পথ ছেড়ে দিতে প্রস্তুত ছিলেন না। এই নতুন পুরাতনের সামাজিক ও রাজনৈতিক ভিন্নতা এবং পুরানো কাঠামে – আওয়ামীলীগের মধ্যে জায়গা না করতে পাড়ার আশংকায় অনেকেই ১৯৭২ সালে জাসদে যোগ দিয়ে থাকবে।

সিরাজুল আলম খান লিখছেন ” প্রতি প্রার্থীর নিবার্চনী এলাকায় তিনজন থেকে পাঁচজন করে বিএলএফ কর্মীকে গণসংযোগ  ও প্রচারণার জন্য নিয়োজিত করলাম। এভাবে নিউক্লিয়াস এর প্রায় দেড় হাজার সদস্য মাঠ পর্যায়ের এ কাজের সাথে যুক্ত হলো। এটি একটি সুক্ষ ধরনের কাজ যার সম্পর্কে আওয়ামীলীগ এমনকি মুজিব ভাইও জানতেন না। এই দুরহ কাজটি নির্ভুলভাবে সম্পাদনা করার দায়িত্ব ছিল মার্শাল মনির ওপর এবং তার সহযোহী ছিল আ ফ ম মাহবুবুল হক। ” – পৃষ্ঠা ১৩০ । নির্বাচনী কর্মকান্ডে যাঁদের অতি সামান্য প্রতক্ষ্য অভিক্ষতা আছে তাঁরা জানেন  নির্বাচনী এলাকায় সমস্ত কিছুই প্রার্থী ও প্রার্থীর দলের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল।  ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ছাত্রলীগের সর্বস্তরের কর্মী সংগঠকরা অংশ নিয়েছিল। আওয়ামীলীগ ও শেখ মুজিবর রহমানকে না জানিয়ে সারা দেশে দেড় হাজার নিউক্লিয়াস এর সদস্যদের  নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত করার গল্প সুক্ষ নয় ধরনের গালগল্প।

১৯৭০ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা নিয়ে খুব বেশি বিস্তারিত প্রকাশনা দেখা যায় না। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বর্ণনার পূর্ব ঘটনা হিসেবে অনেক বইতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনের বিষয়টি ছোট আকারে এসেছে। তবে যা লিপিবদ্ধ হয়েছে তা ছাত্রলীগের ভূমিকা। নিউক্লিয়াসের কোন নাম গন্ধ নেই সেই সব লেখায়। ১৯৬৯-১৯৭০ সালের ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগ ও বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) বইয়ে  ১৯৭০ সালের নির্বাচন সম্পর্কে নিজ অভিজ্ঞতা লিখছেন ” সারাদেশে ছাত্রলীগ কর্মীরাই গণসংযোগ এবং নির্বাচনী পরিচালনায় মুখ্যভূমিকা রাখে। দেশের বিভিন্ন এলাকার দুর্বল এবং সংবেদনশীল আসন গুলো সনাক্ত করে ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সাথে পরামর্শ ক্রমে কেন্দ্রিয় ভাবে সব এলাকায় নির্বাচনী কাজের জন্য ৭০ নভেম্বর মাসের প্রথম থেকেই কর্মী প্রেরণ করেন। আমাকে সে সময় পাবনার উল্লাপাড়ায় মওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ এর নির্বাচনী এলাকায় পাঠানো হয়। ……. আ ফ ম মাহবুবুল হককে পাঠানো হয় সিরাজগঞ্জ সদর আসনে নির্বাচনের কাজে। আমরা দুজন একসাথে ঢাকা থেকে ট্রেনে রওয়না হই। উল্লাপাড়ায় পৌঁছে প্রথমে মওলানা তর্কবাগীশের বাড়িতে উঠি। (পৃষ্ঠা ৪১, প্রকাশ কাল মার্চ ২০০২, অংকুর প্রকাশনী ঢাকা) ।

 

শেখ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছেন। তিনি ছাত্রলীগ ও শেখ মুজিবর রহমানের কথা স্পষ্ট করেছেন। যা সিরাজুল আলম খানের  আওয়ামীলীগ ও শেখ মুজিবর রহমানকে না জানিয়ে নির্বাচনে নিউক্লিয়াস দেড় হাজার কর্মী নিয়োজিত করার তথ্যকে সমূলে নাকচ করে দেয়। শেখ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন নির্বাচনী প্রচারণায় মওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ এর রাড়িতে উঠা ও থাকার কথা উল্ল্যেখ করেছেন। তর্কবাগীশ গাও-গেরামের কোন প্রার্থী ছিলেন না। ১৯৬৭ সালে পর্যন্ত এক যুগের মত তিনি আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। কেন্দ্রীয় রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি না জেনে বুঝে নিজ বাড়ি ও নির্বাচনে সিরাজের দুই অনুপ্রবেশকারীকে  [ জাহিদ ও মাহবুব ] ঠাঁই দিয়েছিলেন সেরকম ভাবার বিলাসিতা অতন্দ্র অতিকথক ছাড়া সাধারণ মানুষ কল্পনাতে আনতে হিমশিম খাবে। তর্কবাগীশ নির্বাচনের কাজে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবেই জাহিদ ও মাহবুবকে গ্রহণ করেছিলেন। তর্কবাগীশকে জনাব খান নিউক্লিয়াস পক্ষ ভুক্ত হিসেবে দাবী করে থাকেন। এই দাবীর পক্ষে প্রতক্ষ্য – পরোক্ষ বা পারিপার্শিক প্রমান নেই। শেখ জাহিদের লেখা থেকে জানা যায় তিনি তর্কবাগীশের নির্বাচনী কাজে টিকতে পারেন নাই। কেন টিকতে পারলেন না সে সম্পর্কে শেখ জাহিদ নীরবতা পালন করেছেন। তবে আ ফ ম মাহবুবুল হক আওয়ামীলীগ ও তর্কবাগীশের সাথে চিন্তার পার্থক্য গোপন রাখেন  নাই। সাইফুল ইসলামের যুদ্ধপূর্ব ও যুদ্ধত্তোর রাজনীতিতে নিয়ে লেখা ” যে জীবন দোয়েলের ” বইতে আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তের বাইরে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কিংবা স্থানীয় নেতাকর্মীদের কিছু করার ছিল না তা উঠে এসেছে। সাইফুল ইসলামের বর্ণনায় জানা যায় আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে মত পার্থক্যের কারণে মাহবুবুল হকের নির্বাচিনী জনসভায় বক্তিতা  দেওয়া থেকে বিরত রেখে ভোটার লিস্ট কপি করার কাজ দেওয়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত ১৯৭০ সালের নির্বাচন কালে সাইফুল ইসলাম পাবনায় ছাত্রলীগের সংগঠক ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ ও জীবন সংগ্রাম বইয়ের লেখক কে বি এম মফিজুর রহমান। যুদ্ধপূর্ব ছাত্রলীগের ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন।  এই বইয়ে ১৯৭০ সালের কালীগঞ্জ – কাপাসিয়া নির্বাচনী প্রচারণায় শেখ মুজিবর রহমান ও তাজউদ্দীন আহমেদের অংশ গ্রহণ। কাপাসিয়া এলাকার একটি বাজারের বঙ্গবন্ধু নামকরণের ইতিহাস সহ ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের নাম উল্লেখ আছে। শুধু অনুপস্থিত জনাব খানের নিউক্লিয়াস এর অনুপ্রবেশের পক্ষে ন্যূনতম বর্ণনা। কে বি এম মফিজুর রহমান , শেখ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন ও সাইফুল ইসলাম তিন জন পৃথক প্রেক্ষাপট থেকে লিখেছেন।  মফিজুর রহমান  ও শেখ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন তৎকালীন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ায় পরস্পর পরিচিত ছিলেন। সাইফুল ইসলাম পাবনায় অবস্থান করার কারণে তৎকালীন সময়ে এঁদের সাথে পরিচয়ের সম্ভবনা কম ছিল। এই তিন জনই ছাত্রলীগের নেতা -সংগঠক  থেকে মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধত্তোর কালে জাসদ রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন। ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের ভাঙ্গনের পর শেখ মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন ছাত্রলীগ ( বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র ) এর সহ সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৩ সালে জাসদ রাজনীতির সাথে ছেদ ঘটিয়েছিলেন।  কে বি এম মফিজুর রহমান সম্ভবতঃ ১৯৮০ দিকে যখন জাসদের ভাঙ্গন  শুরু হয় তখন নিজেকে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন। সাইফুল ইসলাম এখনো খণ্ডিত জাসদের একাংশে পতাকা ধরে আছেন। এই তিন মুক্তিযোদ্ধার মিলের জায়গা হচ্ছে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে ছাত্রলীগের অবস্থানকে স্পষ্ট করা। নির্বাচনী প্রচার প্রোপাগান্ডার কৃতিত্ব সঠিক ভাবে ছাত্রলীগকে দেওয়া। যা সিরাজুল আলম খানের আওয়ামীলীগ ও শেখ মুজিবকে না জানিয়ে নির্বাচনী প্রচারে দেড় হাজার নিউক্লিয়াস তত্বকে কুঠারাঘাত করে।

লেখক সাইফুল ইসলামের যে জীবন দোয়েলের বইয়ে   নিউক্লিয়াসের দাবীকে সামান্য ধাক্কা দিয়েছেন যুদ্ধত্তোর দেশের রাজনৈতিক সংকট কালে । সাইফুল ইসলাম ২১ জুলাই ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের কেন্দ্ৰীয় সম্মেলন ও ভাঙ্গন এর প্রস্তিতি পর্বে পাবনায় অবিভক্ত ছাত্রলীগের কর্মী সম্মেলেনের কথা উল্ল্যেখ করেছেন। এই কর্মী সমাবেশে তৎকালীন ছাত্রলীগের সহ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আ ফ ম মাহবুবুল হক উপস্থিত ছিলেন। মাহবুবুল হক পাবনার   প্রকাশ্য কর্মী সভায় পল্টনের সম্মেলনে  উপস্থিত হওয়ার জন্য রাজনৈতিক যুক্তি তুলে ধরেন। ( পৃষ্টা ৩৪)  ।  নিউক্লিয়াসের কোন মিটিং বা কর্মী সমাবেশ মাহবুবুল হক অংশ নেন নাই। যদি নিউক্লিয়াসের অস্তিত্ব থাকতো তবে ছাত্রলীগ ভাঙনের প্রাক্কালে নিঃসন্দেহে  আ ফ ম মাহবুবুল হক ও  স্থানীয় নিউক্লিয়াস সদস্যরা পৃথক ভাবে  মিলিত হয়ে কিভাবে সংগঠিত হওয়া যায় তা আলোচনা করত। উল্লেখ্য ১৯৭২ সালের ছাত্রলীগের ভাঙ্গনের সময় ছাত্রলীগের ৮০ ভাগের বেশি মুজিববাদী ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত হয়েছিল। জাসদপনি ছাত্রলীগের বিকাশ হয়েছিল যুদ্ধত্তোর ছাত্র-যুবকদের আগমনে।     স্বাধীন দেশে নিউক্লিয়াসকে গোপন রাখার কোন কারণ ছিল না।  আ ফ ম মাহবুবুল হক ২১ জুলাইয়ের  সম্মেলনে  সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর চেয়ে বড় কথা সিরাজুল আলম খান বার দুই মাহবুবুল হকের কথা আত্মজীবনীতে উল্ল্যেখ করেছেন !

আরও পড়ুনঃ আমি সিরাজুল আলম খান বলছি – পাঠক প্রক্রিয়া -৩

অপু সারোয়ার: লেখক ও ফ্রীলান্স সাংবাদিক