চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে কালবৈশাখীর তান্ডব, নিহত ৩

বৈশাখের প্রথম সপ্তাহেই কালবৈশাখীর ঝাপটা লেগেছে চট্টগ্রামে। টানা কয়েকদিনের তাপপ্রবাহের পর প্রথম কালবৈশাখীর বৃষ্টি স্বস্তি এনে দিয়েছে নগরবাসীর মনে। তীব্র কালবৈশাখী ঝড় আর মাঝারি আকারের বজ্রবৃষ্টিতে ভেসে গেছে চট্টগ্রামের পথঘাট। বুধবার (২০ এপ্রিল) সকালে কালবৈশাখীর তান্ডবে চট্টগ্রামের তিন উপজেলায় তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঝড়ে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে বালুবোঝাই একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে, উড়ে গেছে কারও ঘরের ছাউনি, ভেঙেছে গাছপালা। চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার গুপ্তছড়া ঘাটের কাছে ঝড়ের কবলে পড়ে একটি স্পিডবোট ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উপড়ে পড়া গাছের চাপায় ফটিকছড়ি উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ঝরঝরি গ্রামে রীনা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূ এবং লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি ইউনিয়নের নারিশ্চা দক্ষিণ পাড়ায় মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান (৪২) নামে একজন কাঠ ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। কয়েকদিন ধরে তাপদাহের পর বুধবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা ও আশপাশের এলাকায় কালবৈশাখী ঝড় নগরবাসীর মনে স্বস্তি বয়ে আনে। তবে কালবৈশাখীর এ বৃষ্টিভেজা সকালে রাস্তায় বের হওয়া মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হয়। কর্মব্যস্ত দিন হওয়ায় অনেককেই কাকভেজা হয়ে অফিসে যেতে হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙ্গরে বালুবোঝাই একটি নৌযান (বাল্কহেড) ডুবে গেছে। তবে নৌযানটিতে থাকা পাঁচজন মাঝি জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়েই নৌযানটি ডুবে গেছে বলে ধারণা বন্দরের কর্মকর্তাদের। ঘটনাস্থল নিয়ে জাহাজ চলাচলে সতর্কতা জারি করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বুধবার (২০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বন্দরের বর্হিনোঙ্গরের চার্লি অ্যাংকারেজে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, ‘চার্লি অ্যাংকারেজে একটি বাল্কহেড ডুবে গেছে। সেখানে পাঁচজন মাঝি ছিল। তাদের জীবিত উদ্ধার হয়েছে। বাল্কহেড ডুবে যাবার কারণে বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে দুর্ঘটনা এড়াতে বয়া দিয়ে ওই জায়গাটা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে এবং জাহাজ চলাচলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, সকালে চট্টগ্রামে ওপর বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬৫ কিলোমিটার। আধা ঘণ্টার কিছু কম সময় নিয়ে এই কালবৈশাখী চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে চলে। দিনভর থেমে থেমে চট্টগ্রামের দু-এক জায়গায় দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে। পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা মেঘনাদ তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, ‘ভোর থেকে বাতাসের গতিবেগ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করে। তবে সকাল সাড়ে নয়টার পর চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এসময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬৫ কিলোমিটার। কালবৈশাখীর পর চট্টগ্রামে হালকা থেকে মাঝারি আকারের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হয়েছে। এখন যেহেতু কালবৈশাখীর সময় তাই দিনভর থেমে থেমে চট্টগ্রামের দু-এক জায়গায় দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া কোথাও কোথাও শিলা বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।

# ২০.০৪.২০২২ চট্টগ্রাম #