মতামত

ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি আসবেনা

-নূর আলম

মুসলমানদের সর্বোচ্চ উৎসবের দিন ঈদুল ফিতর এসে গেছে। চাঁদ দেখা স্বাপেক্ষে আগামী ২ অথবা ৩ মে বাংলাদেশের মুসলমানরা ঈদ উৎসব উদযাপন করবেন। ঈদের দিন মানুষ তাদের বাসায় ভাল ভাল মজাদার খাবার রান্না করে এবং নতুন জামা কাপড় পরে ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ হোটেল শ্রমিকদের ঘরে ঘরে ঈদের দিন আনন্দ উৎসবের পরিবর্তে থাকে বেদনা আর হাহাকার। কারন রোজা আসলেই শুরু হয়ে যায় শ্রমিক ছাঁটাই এবং হোটেল বন্ধের হিড়িক। ফলে রোজাকে দেশের অধিকাংশ মানুষ স্বাগতম জানালেও আমরা হোটেল শ্রমিকরা আতঙ্কে থাকি। ব্যবসা ভাল হয়না অজুজাতে পুরো রমজান মাস হোটেল শ্রমিকদেরকে  চাকরিহীন থাকতে হয়।  অনেক সময় ব্যবসার স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে ঈদের পরেও ১০/১২ দিন লাগে। ফলে আসলে পুরো বছরে হোটেল শ্রমিকরা প্রায় দেড় মাস আয় শূন্য থাকে। ঈদ বোনাসতো সোনার হরিণের মত। হোটেল শ্রমিকদের প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক বলা হলেও শ্রম আইনের কোন সুযোগ সুবিধাই শ্রমিকেরা পায়না। শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র, সার্ভিস বুক, সবেতন ছুটি কোন কিছুই নেই। এমনকি সাপ্তাহিক ছুটিও নেই। প্রতিদিন ১২/১৪ ঘন্টা কাজ করলেও কোন ওভারটাইম ভাতা পায়না। মা-বাবা কিংবা কোন নিকটাত্মীয় মারা গেলেও একজন বদলি শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে ছুটি পাওয়া যায়। যে কয়দিন বদলি শ্রমিক কাজ করে সেকয়দিন হোটেল শ্রমিক কোন মজুরি পায়না। এক কথায় চরম অমানবিকাতার মধ্য দিয়ে হোটেল শ্রমিকদের জীবন অতিবাহিত হয়। হোটেল শ্রমিকদের এ অবস্থার পরিবর্তন করতে হলে আমাদেরকে আরো সংগঠিত হতে হবে। সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি আসবেনা।

নূর আলমঃ সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট শ্রমিক ইউনিয়ন