চলমান সংবাদ

থানা আক্রমণের পরিকল্পনায় গ্রেনেড মজুদ নব্য জেএমবি’র জঙ্গি সদস্যের কারাদন্ড

চট্টগ্রামে থানা আক্রমণের পরিকল্পনা নিয়ে গ্রেনেড মজুদের মামলায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির এক সদস্যকে সাড়ে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদন্ডও দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার চট্টগ্রামের সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালরের বিচারক মো. আব্দুল হালিম এ রায় দেন। দন্ডিত আশফাকুর রহমান ওরফে আবু মাহির আল বাঙালি ওরফে রাসেলের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। ২০১৮ সালে গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন। ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি রাতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর সদরঘাট এলাকার একটি বাসা থেকে আশফাকুর ও এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছিল সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। এ সময় তাদের কাছ থেকে ১০টি গ্রেনেড এবং দুটি সুইসাইডাল ভেস্ট (আত্মঘাতী বন্ধনি) উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়–য়া বাদি হয়ে নগরীর সদরঘাট থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, একটি নিখোঁজ ডায়েরির সূত্র ধরে নগর ডিবি পুলিশ আবদুল্লাহ নামে এক যুবককে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে পুলিশ জানতে পারে, সে নেত্রকোনার কমলাকান্দায় অবস্থান করছেন। পরে পুলিশ আবদুল্লাহর মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে অন্য কয়েকটি নম্বর পায়। সেই সূত্র ধরেই অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে কর্মকর্তারা কিছু সন্দেহভাজন ব্যক্তির তৎপরতা শনাক্ত করতে সক্ষম হন। অনুসন্ধানে জঙ্গি তৎপরতার বিষয়টি উঠে আসে। তার ভিত্তিতে ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে গ্রেনেড পাওয়া যায়। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গ্রেপ্তার দু’জন নব্য জেএমবির কথিত আমির ডন ভাইয়ের নির্দেশে দুই মাস আগে চট্টগ্রামে আসেন। পুলিশের মনোবল ভাঙতে থানায় জঙ্গি হামলার জন্য তাদের চট্টগ্রামে পাঠানো হয়। তখন সদরঘাট থানার ওসি ছিলেন মর্জিনা আক্তার। একজন নারী ওসির দায়িত্ব পালন করা ধর্মীয় অনুশাসনের বিরোধী বিবেচনায় প্রথমে তারা সদরঘাট থানায় হামলার পরিকল্পনা নিয়েছিল। থানা ভবনে হামলার জন্য কাগজে ছক আঁকে তারা। পরিকল্পনা সফল করতে তারা সদরঘাট থনা এলাকা পর্যবেক্ষণও (রেকি) করেছিল বলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন। ছঁকে সদরঘাট থানার আশপাশের এলাকাসহ সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়ও হামলার পরিকল্পনা করেছিল বলে উল্লেখ রয়েছে। সন্ত্রাস বিরোধী ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মনোরঞ্জন দাশ জানান, এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ২৮ জুলাই দুই আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। তবে একজন আসামি অপ্রাপ্ত বয়সী হওয়ায় তার বিচার কার্যক্রম শিশু আদালতে ন্যস্ত করে ট্রাইব্যুনাল শুধুমাত্র আশরাফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠনের পর ৬ পুলিশ সদস্য ও ভবন মালিকসহ সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন। রায়ে আদালত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২) ধারায় ৫ বছর এবং একই আইনের ৮ ধারায় আরও ছয় মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন। এছাড়া ২০ হাজার টাকা জরিমানারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
# ১২.০৪.২০২২ চট্টগ্রাম #