শিল্প সাহিত্য

এই বসন্তে পিকেল বল  

  – ইকবাল জুয়েল

হঠাৎ পশ্চাদদেশে ব্যাটের বাড়ি পড়তেই ঘুরে তাকালাম। সত্তর এর ওপর বয়স, মুখভর্তি হাসি নিয়ে, ক্যাথি।
– নাইস শট!
– মুখে বললেই তো হতো, আবার।…!? আমিও হেসেই বললাম।
– ঠাট্টা করলাম, নতুন বসন্তের ঠাট্টা!
বসন্ত শব্দের অজস্র ব্যবহার আছে, তাইনা? ঋতুরাজ-বসন্ত, যৌবন, সৌন্দর্য, রকমারি ফুলের বাহার, প্রেম, বসন্ত-উৎসব – গানে কবিতায় গল্পে, সর্বত্র সুন্দরের বর্ণনায় বসন্ত শব্দের রয়েছে রকমারি বিন্যাস। তবে মিল্টন শহরে বসন্ত আসি আসি করছে। পাতায় পাতায় আলোর নাচন শুরু হয়নি এখনো, আরো কিছুদিন বাকি আছে।
এসেছিলাম মিল্টন শহরের একটি টেনিস পার্কে।  এসে দেখি, বসেছে বসন্ত-মেলা। টেনিস নয়, চলছে “Pickleball” এর মেলা। দুটো টেনিস কোর্টকে বদলে করা হয়েছে ৬টি Pickleball কোর্ট আর তাতে খেলছে ২৪ জনা। বেঞ্চে বসে আছে আরো ১০ জনা।  অথচ বাকি ৪টি টেনিস কোর্টে, সর্বসাকুল্যে ২ জন, একাকী!
আমিও এসেছিলাম টেনিস খেলতে কিন্তু Pickleball-এর এই মেলা দেখে যেন হোঁচট খেলাম। এতো আনন্দ! এতো হৈচৈ! কি ব্যাপার!?
বেঞ্চে বসে এই আঁচার-বল খেলা দেখছি, পাশে এসে বসলো ক্যাথি। পরিচয় পর্ব শেষ হবার পরই আমার হাতে একটি Pickleball-এর ব্যাট ধরিয়ে বললো,
– তোমার এই টেনিস-সেট ফেলে দাও।  Pickleball খেলো।
পর পর তিন গেম খেলে আমি হাঁপিয়ে গেলাম। কিন্তু সত্তর-উর্দ্ধ ক্যাথির কোনো বিরাম নেই।  সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারছে না, হাতে বিশাল arm-sleeve, দুই হাঁটুতে knee-brace, মাঝে মাঝেই যেন ব্যাথায় কষ্ট পাচ্ছে। অথচ, গালভরা হাসি নিয়ে,
– নাইস শট!
আমার মনে হলো বসন্ত এসে গেছে, Pickleball-এর এই আনন্দ মেলায়।
মার্চ, ২০২২