চলমান সংবাদ

চাক্তাই ও রাজাখালী খালের অবৈধ ১২৬ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ হাইকোর্টের

চট্টগ্রামের চাক্তাই খাল ও রাজাখালী খালের জায়গায় ১২৬টি অবৈধ স্থাপনা ৩ মাসের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে আদালত উচ্ছেদের আগে নিজ খরচে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিতে বলেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

গতকাল বুধবার (১৬ মার্চ) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। পাশাপাশি দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

আদালতের রায় বাস্তবায়নকারীরা হলেন— পরিবেশ, অর্থ, এলজিআরডি ও পানি সম্পদ সচিব, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সচিব, সিডিএ চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি, জেলা প্রশাসক, এডিসি, চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার, বাকলিয়ার এসিল্যান্ড এবং ওসি।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী থেকে শহরের ভিতরে প্রবাহিত চাক্তাই খাল ও রাজাখালী খালের প্রকৃত সীমানা চিহ্নিত করে খালের জায়গায় মাটি ভরাট, দখল উচ্ছেদ এবং নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৬ সালে জনস্বার্থে হাই কোর্টে রিট আবেদনটি করে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)।

পরে একই বছরের ৬ জুন রুল জারি করে এবং আদালত জেলা প্রশাসনকে চাক্তাই খাল ও রাজাখালী খাল জরিপ করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেয়।

এ নির্দেশের পর জেলা প্রশাসন প্রতিবেদন দাখিল করলে তা রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চট্টগ্রামের বাকলিয়া ও পাঁচলাইশ মৌজায় ১২৬টি অবৈধ দখল রয়েছে, যেখানে ভবন, গুদাম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও টিনশেড ঘর রয়েছে। এরমধ্যে চাক্তাই খাল এলাকায় ৬৫টি ও রাজখালী খাল এলাকায় ৬১ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

সে প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সেসব অবৈধ স্থাপনা ৯০ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দিয়েছে বলে জানান এইচআরপিবির আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

তিনি বলেন, “সংবিধান, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫, জলধার সংরক্ষণ আইন-২০০০ অনুসারে খাল ভরাট করা নিষিদ্ধ থাকলেও চট্টগ্রাম শহরে প্রশাসনের শত শত ব্যক্তিদের চোখের সামনে খালের জায়গা দখল করে পানির প্রবাহ বন্ধ করা হয়েছে। যার কারণে চট্টগ্রাম বসবাসরত লক্ষ লক্ষ মানুষ জলাবদ্ধতার সম্মুখীন হয়।”

আদালতে আবেদনের রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান।

আদালতে বাদীপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ, তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঞা, রিপন বাড়ৈ ও সঞ্চয় মন্ডল। সরকার পক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস কে সাইদুজ্জামান। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম এ হান্নান।

এর আগে, কর্ণফুলী নদীপাড়ের উচ্ছেদ এবং চাকতাই খাল ও রাজাখালী খালের প্রকৃত সীমানা চিহ্নিত করে খালের জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং নির্মাণ কাজ বন্ধে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের হয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১৬ সালের ৬ জুন হাইকোর্ট রুল জারি করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরে জেলা প্রশাসন প্রতিবেদন দাখিল করে জানান, বাকলিয়া এবং পাঁচলাইশ মৌজায় ১২৬টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এর মধ্যে রাজাখালী এলাকায় ৬১ এবং চাকতাই এলাকায় রয়েছে ৬৫টি। বুধবার এ বিষয়ে জারি করা রুল মঞ্জুর করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এছাড়া মামলাটিকে কনটিনিউয়াস ম্যানডামাস হিসেবে রাখা হয়েছে।

# ১৬.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #