চলমান সংবাদ

নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়তি, সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

দফায় দফায় বাড়ছে ভোগ্যপণ্যের দাম। সব ধরনের সবজি, মাছ, মাংসের দাম বেড়েছে আরো এক দফা। বাজারে ৫০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি। ১২০ থেকে ১৫০ টাকার নিচে মাছ নেই। সব ধরনের মাংসের দামও বাড়তি। অন্যদিকে ডাল, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও বেড়েছে। সবমিলিয়ে অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারণ ক্রেতারা। নিত্যপণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। মুরাদপুরের বাসিন্দা মিজানুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, বাজারে সবকিছু দাম বেশি। অসাধু ব্যবসাযীরা অতিরিক্ত মুনাফা করতে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে। আর অন্যদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণের প্রশাসনের কোন মনিটরিং নেই। অসাধু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। তিনি বলেন, বাজারে সব ধরনের সবজির দাম বাড়তি। ছোট চাকরি করে এমনিতেই সংসার চালানো দায়। এরমধ্যে সবকিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে আমাদের মতো মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা খুবই শোচনীয় হয়ে পড়বে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার (১১ মার্চ) নগরের রিয়াজউদ্দীন বাজার ও কাজীর দেউড়ি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে প্রতিকেজি শিম-টমোটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৮০, গোল বেগুন ৬০, লম্বা বেগুন ৫০, চিচিঙ্গা ৬০, পটল ৫০, কচুর লতি ৬০, ঢেঁড়স ৬০, ফুলকপি ৫০, বরবটি ১২০, শসা ৬০ ও গাজর- মিষ্টি কুমড়া-মুলা- শালগম ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সে সঙ্গে কাঁচামরিচ ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। রিয়াজউদ্দীন বাজারের সবজি বিক্রেতা শেখ সিরাজ বলেন, শীতের মৌসুম শেষ, বাজারে শীতের সবজির সরবরাহও কমে গেছে। তাই সবজির দাম বাড়তি। বেশি দামে আমাদেরকে কিনতে হচ্ছে, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। বাজারে খোলা সয়াবিন লিটার প্রতি বেড়ে ১৭০ টাকা ও বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়ে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বেড়েছে চাল, মসুর ডাল, ভোজ্যতেল, শুকনো মরিচ, পেঁয়াজ, চিনির দাম। বাজারে খোলা চিনি ৮০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চায়না রসুন প্রতি কেজি ১২০ টাকা, দেশি রসুন ৬০, দেশি আদা ৬০ ও চায়না আদা ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে স্বস্তি নেই আটা, ময়দা, ডালেও। খুচরা দোকানে খোলা আটার কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৩৮-৪০ টাকা ও প্যাকেটজাত আটা ৫২ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া প্যাকেটজাত ময়দা ৫২ থেকে ৫৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়া কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে মসুর ডাল ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজারেও মিলছে না স্বস্তি। প্রতিকেজি রুই-কাতল মাছ, শিং-টাকি ২৫০ থেকে ৩শ, শোল ৪শ, তেলাপিয়া-পাঙ্গাস ১৭০, চিংড়ি ৬শ, বড় আকারের ইলিশ ১২শ ও ছোট আকারের ইলিশ ৫শ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাজীর দেউড়ি বাজারে মাছ বিক্রেতা জয়দেব বলেন, মাছের খাবার ও চাষের খরচ বেড়ে যাওয়ায় আড়তেই মাছের দাম বেড়ে গেছে। তাই খুচরা বাজারেও মাছের দাম কিছুটা বাড়তি। অপরদিকে দীর্ঘদিন ধরেই অস্থির মাংসের বাজার। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে মুরগির কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০, সোনালী ২৮০ থেকে ৩শ ও বড় লাল মুরগি ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে আগের বাড়তি দরেই প্রতিকেজি গরুর মাংস ৬৫০ ও খাসির মাংস ৯শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নগরীর আন্দরকিল্লা এলাকার বাসিন্দান মোকলেসুর রহমান বলেন, ভোগ্যপণ্যের বাজারে এসে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। দাম কমার তো কোন লক্ষণই দেখছি না। স্বল্প আয়ের মানুষ কিভাবে ঘর চালাবে ? কোন কিছুতেই আমরা সাধারণ মানুষ স্বস্তি খুঁজে পাচ্ছি না। সব পণ্যের দামই আকাশ ছোঁয়া। এক হাজার টাকার বাজারে ব্যাগ ভরে না। আগে যে পরিমান টাকার বাজারে এক সপ্তাহ চালানো যেত, এখন একই পরিমান টাকার বাজারে তিনদিনও চলে না। বাজার মনিটরিং জোরদার করা প্রয়োজন।

# ১১.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম