চলমান সংবাদ

হাইকোর্টের রায়ের আলোকে বাংলা হরফে সাইনবোর্ড পরিলক্ষিত না হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে : মেয়র

স্বাধীনতার এই মাসে চট্টগ্রাম নগরীর ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসমূহে অন্তত ৬০ভাগ বাংলা হরফে সাইনবোর্ড পরিলক্ষিত না হলে হাইকোর্টের রায়ের আলোকে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে হুশিয়ারি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। ‘সর্বত্র বাংলা প্রচলন’ শীর্ষক সমাবেশে তিনি বলেন, রক্ত দিয়ে অর্জিত মাতৃভাষা বাংলা সর্বস্তরে চালু করতে না পারা স্বাধীনতার ৫০বছর পরও আমাদের জন্য লজ্জার বিষয়। মঙ্গলবার (১ মার্চ) সকালে নগরীর এম.এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত বইমেলায় সর্বত্র বাংলা প্রচলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য নঈম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মুক্তিযোদ্ধা ফাহিম উদ্দিনের সঞ্চালনায় এতে আরো বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা গবেষণা ট্রাষ্টের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, বইমেলা কমিটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, মুক্তিযোদ্ধা মো. হারিছ, নূর আলম মন্টু, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রথম কন্ঠদাতা রাখাল চন্দ্র বণিক, আ জ ম সাদেক, ইদ্রিস আলী, আবুল কাশেম, দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, সিরাজুল ইসলাম রাজু, সিদ্দিক আহমেদ, ফারুক আহমেদ, বইমেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, রাজা মিয়া। মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের পক্ষে মশিউর রহমান খান, দিলরুবা খানম, আশেক রসুল চৌধুরী টিপু, ডা. আর.কে রুবেল, জসিম উদ্দিন, হাসিনা আকতার, ডা. আয়াজ, মহিউদ্দিন, সিঞ্চন ভৌমিক, হাসান রুমি প্রমুখ। বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা বিগত দুবছর ধরে বাংলা হরফে সাইনবোর্ড লেখার উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছি এবং এব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য নানা ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। কিন্তু আজ অবধি আমরা সম্পূর্ণভাবে সফল হতে পারিনি। তবে চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আমাদের সাথে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে চসিকের ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে বাংলা হরফে সাইনবোর্ড লেখা না থাকলে আর্থিক জরিমানা করার কাজ পরিচালনা করছেন। তথাপিও সাধারণ ব্যবসায়িদের অনেকেই বিষয়টি আমলে নিচ্ছে না। তিনি নগরীতে এই স্বাধীনতার মাসে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধারা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা ৬০ভাগ বাংলা হরফের অধিক ইংরেজি হরফে লেখা সাইনবোর্ড দেখলে সরিয়ে নিতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন। সভাপতির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৪ সালে হাইকোর্টে আইনজীবী ড. ইউনুস আলী আকন্দের একটি রিট আবেদনের পরিপেক্ষিতে ওই বছরে বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ বাংলা ভাষা প্রচলন আইন ১৯৮৭ অনুযায়ী অফিস-আদালত, গণমাধ্যমসহ সর্বত্র বাংলা ভাষা ব্যবহারের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। পাশাপাশি দূতাবাস ও বিদেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়া দেশের সব সাইনবোর্ড, নামফলক ও গাডির নম্বর প্লেট, বিলবোর্ড এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বিজ্ঞাপন বাংলায় লেখা ও প্রচলনের নির্দেশ দেন। হাইকোর্টের আদেশের তিন মাস পর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডগুলোকে আদেশটি কার্যকর করতে বলা হয়। কিন্তু সে আদেশের বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ দেখা যায়নি। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে এক চিঠির মাধ্যমে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাডিরি নম্বর প্লেটে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করার অনুরোধ জানায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেখানে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার ইংরেজির স্থলে বাংলায় প্রতিস্থাপিত হয়েছে বলে দেখা যায় না’ উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, যা বাংলা ভাষা প্রচলন আইন, হাইকোর্টের রুল ও আদেশের পরিপন্থী। তিনি ইংরেজি হরফে লেখা সাইনবোর্ড সরানোর জন্য চসিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম আরো বেগবান করার জন্য মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে অনুরোধ জানান।

# ০১.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #