চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন

– চাকরি স্থায়ী না হলে নগর ভবনে আত্মহত্যার হুমকি

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে কখনও মেয়রকে ঘেরাও। আবার কখনও দাবির মুখে অবরুদ্ধ চট্টগ্রাম সফরে আসা মন্ত্রী। আন্দোলন- স্লোগানের মুখে আশ্বাস ছিল সহসাই স্থায়ী হবে চাকরি। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে (চসিক) কর্মরত অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে। দাবি আদায়ে নানা পন্থা অবলম্বন শেষে এবার নগর ভবনের সামনেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন চসিকের অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) টাইগার পাস নগর ভবনের সামনে আয়োজিত গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিলে এ হুঁশিয়ারি দেন চসিকের অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিষদের নেতারা। এ সময় পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও চসিকের স্বাস্থ্যবিভাগের পরিদর্শক তাপস দে বলেন, ’আমি এখানে ২০০৫ সালে ঢুকেছি। এখন আমার চুল পেকে গেছে। ১৭ হাজার টাকা বেতন দিয়ে কি করে সংসার চালাবো? আমাদেরও মা-বাবা আছে। ওরা যখন অসুস্থ হয়ে যায় তখন তাদের মেডিকেলে নিয়ে যেতে হয়। আমরা কি পেটে ভাত দিবো নাকি সংসার চালাবো? আজকে আমি এখানে বলে যাচ্ছি। আমাদের চাকরি স্থায়ী না হলে মৃত্যুর পথ বেছে নেওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না। সত্যি করেই বলছি মাননীয় মেয়র মহোদয় যদি এ চাকরি স্থায়ী করতে না পারে তাহলে সবার প্রথমে আমি তাপস আপনার অফিসের সামনে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করবো।’ সংগঠনটির আহ্বায়ক আবু তাহের বলেন, চসিকের বিভিন্ন বিভাগের মোট ১১৫৮টি পদে শূন্য পদ পূরণের জন্য চারবার সময় বৃদ্ধি করা হয়েছে। সবশেষ আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ শে জুন স্থায়ীকরণ করা হবে। মন্ত্রণালয়ের থেকে সময়সীমা বেধে দেওয়ার পর দুই মাস কেটে গেছে। কিন্তু স্থায়ীকরণের কোন দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। তাই বারবার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।’ আগামী সপ্তাহে প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। এদিকে চসিকের অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারী পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে গুমোট পরিবেশ সৃষ্টি হয় নগর ভবনজুড়ে। ‘প্রশাসনিক চাপ’ উপেক্ষা করে বিক্ষোভে যোগ দেন নগর ভবনের কর্মচারীরা। সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সচিব জাহিদুল ইসলাম জোমাদারের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্যে রাখেন সদস্য সচিব সাজু মহাজন, ডা. মুরাদ চৌধুরী, ডা. সুমন তালুকদার, শফিউল আযম, লিটন বড়ুয়া, খাইরুল বশর তসলিম, রবিউল হোসেন, অর্পন চাকমা প্রমুখ। তারা জানান, ১৯৮৯ সালে চট্টগ্রাম পৌর করপোরেশন থেকে রূপান্তরিত হয় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। ৬০ লাখ নগরবাসীকে সেবা প্রদানে বিভিন্ন সময়ে অস্থায়ীভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা হয়। চসিকের কর্মপরিধি বর্তমানে বহুগুণ বৃদ্ধি পেলেও সেবা সংস্থাটি পরিচালিত হচ্ছে ১৯৮৮ সালের জনবল কাঠামো দিয়ে। কাঠামো অনুযায়ী তিন হাজার ১৮০ জনের পদ রয়েছে। অপর দিকে চসিকে স্থায়ী পদে কর্মরত রয়েছেন দুই হাজার ৮৫২ জন। শূন্য পদ রয়েছে ৩২৮টি। কিন্তু অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন প্রায় সাড়ে ছয় হাজার। ডোর-টু-ডোর কার্যক্রমে রয়েছেন দুই হাজারের বেশি। এদের মধ্যে ডাক্তার, শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
# ২৩.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #