চলমান সংবাদ

জমে উঠেছে চট্টগ্রামের একুশে বইমেলা

-একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বের সব মানুষের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন- ড. অনুপম সেন

জমে উঠতে শুরু করেছে চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলা। গত দুবছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বইমেলার আয়োজন করা যায়নি। এবছর সংক্রমণ হার কম থাকায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-চসিক’র উদ্যোগে সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ, চট্টগ্রাম নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় নগরীর এম.এ ষ্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম চত্ত্বরে বইমেলা আয়োজন করা হয়েছে। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের প্রকাশক, সংস্কৃতিসেবী, ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন বয়সের ও শ্রেনী-পেশার বইপ্রেমীদের প্রাণবন্ত উপস্থিতি বইমেলায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিনের অবরুদ্ধতার অবসান ঘটানো এই বইমেলা যেন সকলের মিলনমেলায় পরিনত হচ্ছে। সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) নগরীর এম.এ ষ্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়াম চত্ত্বরে অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজ বিজ্ঞানী একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বের সব মানুষের ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন। আর্ন্তজাতিকভাবে পালিত মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, ১৯০বছর বৃটিশ শাসনামলের পর পাকিস্তান নামক যে রাষ্ট্রের আর্বিভাব হয়েছিলে তাতে ৫৬শতাংশ বাঙালি থাকা স্বত্বেও ঊর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার যে ষড়যন্ত্র হয়েছিলো তা রুখে দাঁড়াতে বাঙালির রক্ত ঝড়েছে। আর এই রক্ত ঝড়ার মধ্য দিয়ে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা পেয়েছি। এই অর্জন আমাদের জন্য বিশাল গৌরবময় অধ্যায়। চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলম, মেলা কমিটির আহ্বায়ক ও শিক্ষা স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক। সভাপতির বক্তব্যে মেয়র রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রামের অমর একুশে বইমেলাকে ঘিরে নানাধরণের অপ্রীতিকর গুজব ছড়ানো হচ্ছে। মেলায় নাকি ইসলাম ধর্মীয় বইকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই ধরণের অপপ্রচারে কেউ যেন কান না দেন- সেই আহ্বান জানিয়ে বলেন, ইসলাম ধর্মীয় বই রাখা যাবে না এধরণের কথা কোথাও বলা হয়নি। অবশ্যই ইসলাম ধর্মী বই রাখা যাবে তবে মৌলবাদী বই বা জঙ্গীবাদকে উৎসাহিত করে এমন বই মেলায় প্রদর্শন বা বিক্রয় করা যাবে না। যারা ইসলামি বই বিক্রয় নিষিদ্ধ বলে মিথ্যে গুজব ছড়াচ্ছে তারা একাত্তরেও এই ধরণের ভূমিকায় ছিলো। এখনো তারা সেই তৎপরতায় আছে। তিনি দৃঢ়তার সাথে বলেন, এদেশ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। আমরা অনেক রক্তের বিনিময়ে এদেশ স্বাধীন করেছি। আমরাই একমাত্র জাতি যারা নিজের মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রক্ত দিয়েছি পৃথিবীতে আর কোন জাতি মায়ের ভাষার জন্য রক্ত দেয় নি। # ২১.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #