জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় জলদস্যু বাহিনীর প্রধানসহ গ্রেপ্তার ৫, উদ্ধার ৪ জেলে
চট্টগ্রাম-হাতিয়া চ্যানেলে জেলেদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়কারী কামাল বাহিনীর প্রধানসহ ৫ জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে র্যাবের চান্দগাঁও ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলন বলা হয়, জলদস্যু বাহিনীটি জেলেদের অপহরণ করে বা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্বজনদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতো। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক ডাকাতি মামলা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালান র্যাব সদস্যরা। তিনদিন প্রায় ৭২ ঘন্টা ধারাবাহিক রুদ্ধশ্বাস অভিযান চালিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি একনালা বন্দুক, দুইটি ওয়ান শুটারগান, তিনটি রামদা, তিনটি চাপাতি, একটি ধারালো চাকু এবং ক্ষুর জব্দ করে। এছাড়া অপহৃত ৪ জেলেকেও উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন- নোয়াখালী সুবর্ণচরের মো. কামাল (৩৫) ও মো. নূর নবী (২৬), লক্ষীপুরের মো. শামীম (২৪), মো. এ্যানি (৩১) ও মো. ফেরদৌস মাঝি (৩৫)। তাদের মধ্যে মো. কামাল জলদস্যুদের মূল সমন্বয়কারী বলে দাবি করেছে র্যাব। র্যাব-৭’র সিনিয়র সহকারি পরিচালক মো. নূরুল আবছার বলেন, গ্রেপ্তার জলদস্যুদের মধ্যে মো. কামাল দলটির প্রধান ছিলো। তার পরিকল্পাতেই বাহিনীর সকল অপকর্ম পরিচালিত হতো। তারা জেলেদের অপহরণ করে ভিকটিমদের আত্বীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা আদায় করত। কামালের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এছাড়াও গ্রেপ্তার জলদস্যু মো. নূরনবী ডাকাত দলের বোট এবং অপহরণের টাকা আদায় সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান ও তাদের খাবার সরবরাহ করত। তার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও ডাকাতিসহ তিনটিরও বেশি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার শামীম, এ্যানি মুক্তিপণের দাবিতে অপহৃত জেলেদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালাত। সর্বশেষ গ্রেপ্তার জলদস্যু ফেরদৌস ভিকটিমদেরকে (জেলেদের) বোট চালিয়ে সাগর পারের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখার ব্যাপারে সহায়তা করত। তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার পাঁচ আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১২টায় অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশিয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে ট্রলারসহ চারজন জেলেকে বঙ্গোপসাগরের চট্টগ্রাম হাতিয়া চ্যানেলে মাছ ধরা অবস্থায় অপহরণ করে। গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
# ১৬.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #
