চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার ম্যাক্সন ভারতে গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ ও কুখ্যাত সন্ত্রাসী শিবির ক্যাডার মো. নুরনবী ম্যাক্সন (৪০) ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বায়োজিদ বোস্তামি, চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ থানায় ১৭টি মামলা আছে। গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) তাকে ভারতে গ্রেপ্তার করা হলেও নগর পুলিশ অবগত হওয়ার পর সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি জানাজানি হয়। মো. নুরনবী ম্যাক্সনকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগণার বারানগর থানার ডানলপ এলাকা থেকে দেশটির সিআইডি গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ওইদিনই স্থানীয় বারানগর থানায় বিদেশি নাগরিকত্ব আইনে মামলা দায়ের হয়। এরপর চট্টগ্রাম নগর পুলিশ তথ্য পেয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের ওমান বিমানবন্দর থেকে ভারতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বারানগর থানা এলাকায় অবস্থান করছিল। উত্তর চব্বিশপরগণার ডানলপের নর্দার্ণ পার্ক এলাকায় ‘তমাল চৌধুরী’ নামে বসবাস করছিল সিএমপির মোস্ট ওয়ান্টেড এই সন্ত্রাসী। ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে, খুন-চাঁদাবাজির অভিযোগে ১৭টি মামলার মধ্যে সাতটি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। পুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের এক সময়ের ত্রাস পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী নূর নবী ওরফে ম্যাক্সন ওমানে পালিয়ে গিয়ে রং মিস্ত্রির কাজ করতেন। সেখানের নিজের পরিচয় ফাঁস হলে পালিয়ে আশ্রয় নেন ভারতের পশ্চিম বাংলার উত্তর চব্বিশ পরগনা এলাকায়। নাম পাল্টে তমাল চৌধুরীর ছদ্মনামে বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় বসবাস করে মাছের ব্যবসা করছিলেন ম্যাক্সন। এমনকি দালাল ধরে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয়পত্র এবং পাসপোর্টও যোগাড় করেছেন। এক ভারতীয় নারীকেও নিজের বন্ধু হিসেবে রাখতেন সাত হাজার টাকার ভাড়া করা ফ্ল্যাটে। নাম ঠিকানা পাল্টালেও সেই ছদ্মবেশ তাকে বেশি দিন রক্ষা করতে পারেনি। দেশ থেকে পালিয়ে কাতার ও ভারতে পালিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হতে হয়েছে চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী নূর নবী ওরফে ম্যাক্সনকে। বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ভারতে ম্যাক্সনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আমরা পুলিশ সদর দফতরের এনসিবি শাখায় চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ ২০০০ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ আটজনকে খুনের ঘটনায় দায়ের আলোচিত এইট মার্ডার মামলার আসামি সাজ্জাদের সহযোগী ম্যাক্সন ও সরওয়ার। ২০১১ সালে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ দু’টি একে ৪৭ রাইফেলসহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে ম্যাক্সনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় সারোয়ারকে। উদ্ধার করা হয় একে-৪৭ সহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। মূলত এর পরই আলোচনায় আসেন এই সন্ত্রাসী জুটি। ওই মামলায় ২০১৭ সালে জামিন পেয়ে কারগার থেকে বেরিয়ে কাতারে পালিয়ে যান সরওয়ার ও ম্যাক্সন। সেখানে বসেই চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি করতেন দুজন। ২০১৯ সালেও অক্সিজেন নয়াহাট এলাকার একজন ব্যবসায়ী চাঁদা দাবি ও হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। চাঁদার টাকার ভাগাভাগি নিয়ে সরোয়ারের সঙ্গে ম্যাক্সনের সংঘর্ষ হওয়ার পর কাতারের পুলিশ সরওয়ারকে গ্রেপ্তার করে দেশে পাঠায়। ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সারোয়ারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তবে ম্যাক্সনের কোনো খোঁজ তখন পাওয়া যায় নি।
# ০৭.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #