চলমান সংবাদ

চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা ৯ ঘন্টা বন্ধ, রোগীদের ভোগান্তি

 বৃহত্তর চট্টগ্রামের অসহায়-দরিদ্র কিডনি রোগীদের স্বল্পমূল্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা দেয়া হয়। বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ডায়ালাইসিস সেবা হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়ায় দিনভর কিডনি রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। তবে রোগী ও তাদের স্বজনদের বিক্ষোভের মুখে প্রায় ৯ ঘন্টা বন্ধ থাকার পর সীমিত আকারে ডায়ালাইসিস সেবা চালু করা হয়েছে। জানা গেছে, চমেক হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা দেয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ। ৩১ শয্যার এ ইউনিটে চার শিফটে প্রতিদিন শতাধিক রোগী সেবা নেন। রোগীপ্রতি ডায়ালাইসিসে ২ হাজার ৫৯৫ টাকা খরচ পড়লেও এতে সরকার ভর্তুকি দেয় ২ হাজার ৮৫ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৫১০ টাকায় কিডনি রোগের এ চিকিৎসা করতে পারেন রোগীরা। বকেয়া পাওনার জন্য কাঁচামাল সংকটের কথা বলে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। সকালে চট্টগ্রাম নগরী এবং আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে কিডনি রোগীরা ডায়ালাইসিসের জন্য এসে ভিড় করে হাসপাতালে। সেখানে ডায়ালাইসিস বন্ধের নোটিশ দেখে তারা বিপাকে পড়েন। এসময় অন্তত ৪০ জন রোগী ও তাদের স্বজনরা ডায়ালাইসিসের নির্ধারিত ইউনিটের সামনে বসে বিক্ষোভ করেন। স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিস বাংলাদেশ’র সহকারী মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) নাজমুল আহসান বলেন, ‘গত পাঁচ বছর ধরে আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুই হাসপাতালে ডায়ালাইসিস সেবা দিচ্ছি। দুই হাসপাতাল মিলিয়ে আমাদের প্রায় ২৩ কোটি টাকা বকেয়া পাওনা জমে গেছে। টাকা পরিশোধ করতে না পারায় গত ডিসেম্বর থেকে কাঁচামালের সংকট শুরু হয়। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কাঁচামাল সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে। প্রতিদিন আমাদের ৬ লাখ টাকা করে দেনা বাড়ছে। আমরা নিরুপায়। টাকা না পেলে আমরা সেবা কিভাবে দেবো? তবে ভোগান্তির কথা চিন্তা করে বিকেল থেকে আবারও সীমিতভাবে ডায়ালাইসিস সেবা চালু করা হয়েছে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রি. জেনারেল মো. শামীম আহ্সান বলেন, তাদের কিছু টাকা বকেয়া থাকায় সাময়িক সেবা বন্ধ রাখে। ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। বকেয়া টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে এ সেবা পুনরায় চালু করা হয়েছে। তাদের ডায়ালাইসিস দেয়ার মেডিসিন (রিএজেন্ট) শেষ হয়ে যাওয়ায় আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকে রিএজেন্ট সংগ্রহ করে বিকল্প ব্যবস্থায় চালু করেছি। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে। চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত বলেন, সীমিতভাবে আবারও ডায়ালাইসিস চালু করা হয়েছে। রোগীদের মধ্যে যারা গুরুতর অসুস্থ, তাদের নেফ্রোলোজি বিভাগে নিয়ে ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করে স্যানডোরসকে কিছু রসদ আমরা সরবরাহ করেছি। তবে ঠিকভাবে রসদের সরবরাহ পাওয়া না গেলে আবারও সমস্যা হতে পারে। হাসপাতালের পক্ষে তো আর প্রতিদিন রসদ সংগ্রহ করে দেওয়া সম্ভব নয়।’
# ০২.০২.২০২২ চট্টগ্রাম