চলমান সংবাদ

১৯ মামলার কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামিকে পান দোকানি সেজে গ্রেপ্তার করল পুলিশ

দীর্ঘদিন ধরে আত্মগোপনে থাকা কোটি টাকা আত্মসাৎকারী ও ১৯ মামলার আসামি কারাদন্ডপ্রাপ্ত শাহ জামালকে (৫৫) পান দোকানি সেজে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নগরের খাতুনগঞ্জের ভোগ্যপণ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎকারী শাহ জামাল তিন বছর ধরে বিভিন্ন কৌশলে নজর এড়িয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। তাকে ধরতে পুলিশ সদস্যদের কখনো চা, কখনো পান বিক্রেতার ছদ্মবেশ নিতে হয়েছিল। অবশেষে মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে নগরের চকবাজার থানাধীন চন্দনপুরার সাফরান ভিলার নিজ বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, ১৯ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহ জামাল দেশের বৃহত্তম ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। মেসার্স শাহ জামাল নামে তার একটি পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও আড়ত ছিল। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে ১৬ টি মামলা হয়। এসব মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর কোতোয়ালী থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু মাসখানেকের মধ্যে জামিনে বের হয়ে আবারও প্রতারণার মাধ্যমে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে তিনি বেশ কিছুদিন ধরে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে থাকেন। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে আরও ৩ টি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ জমা হয়। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তার খোঁজে মাঠে নামে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পান দোকানদারের ছদ্মবেশে মঙ্গলবার রাতে চন্দনপুরা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে চারটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। এছাড়া একটি মামলায় এক বছরের কারাদন্ড দিয়ে আদালত সাজা পরোয়ানা জারি করেছেন। কোতোয়ালী থানার ওসি মো. নেজাম উদ্দীন বলেন, কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে ১৯ মামলার আসামি শাহ জামাল মূলত একজন প্রতারক। সে গ্রেপ্তারি পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তার হলেও জামিনে এসে পুনরায় আত্মগোপনে চলে যায়। তার এক ছেলে অস্ট্রেলিয়া ও আরেক ছেলে কানাডায় থাকে। তিন বছর আগে শাহ জামাল বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন বলে গুজব ছড়িয়ে দেন। কিন্তু সম্প্রতি আমরা তথ্য পাই, শাহ জামাল চট্টগ্রামেই অবস্থান করছে। তবে এই ব্যক্তি এতটাই ধূর্ত যে, আমরা এক বছর ধরে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তাকে ধরতে পারিনি। শেষপর্যন্ত আমাদের দু’জন সদস্য কখনো চা বিক্রেতা, কখনো পান বিক্রেতা সেজে আবার কখনো সেলসম্যান সেজে খাতুনগঞ্জ, আসাদগঞ্জ, চাক্তাই, চন্দনপুরা, আন্দরকিল্লা, চকবাজার এলাকায় ঘোরাফেরা শুরু করে। পান বিক্রেতার ছদ্মবেশে এএসআই সাইফুল ও রণেশ বাসার নিচে অবস্থান নেয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাসার নিচে তাকে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর তিনি বাসায় ওঠেন। পরে পুলিশ টিম তার বাসায় তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামির বিরুদ্ধে নগরীর চকবাজার থানায় ৭টি ও কোতোয়ালী থানায় ১২টি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। গ্রেপ্তারের পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
# ০২.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #