চলমান সংবাদ

দেশে করোনায় প্রাণ গেল আরও ৩৬ জনের, শনাক্ত ১২১৯৩

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর দেশে একদিনে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত পূববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ১৯৩জন। সংক্রমণের হার ২৭ দশমিক ৪৩। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর দেশে প্রথম ওমিক্রন আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এ নিয়ে টানা চারদিন করোনায় মৃত্যু ত্রিশের উপরে রয়েছে। রোববার ৩৪, সোমবার ৩১ ও মঙ্গলবার ৩১ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর আগে সবশেষ ২২ সেপ্টেম্বর করোনায় ৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এর তিন দিন আগে ১৯ সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় ৪৫ জনের। বুধবার অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৮৬৭টি ল্যাবে ৪৪ হাজার ৩০৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ। সে হিসাবে এ নিয়ে টানা ২৬ দিন করোনা শনাক্তের হার ৫ শতাংশের উপরে রয়েছে। দেশে গত ৪ অক্টোবর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর ৭ জানুয়ারির আগ পর্যন্ত শনাক্ত হার পাঁচ শনাক্তের নিচেই ছিল। এই তারিখে সংক্রমণের হার প্রথমবারের মতো ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেলে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা দেখা দেয়। এরপর থেকে সংক্রমণের হার প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ২৮ জানুয়ারি সংক্রমণের হার দাঁড়ায় রেকর্ড ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। তবে পরদিন থেকেই সংক্রমণের হার কমতে থাকে। মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার আরো একটু কমেছে। করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় তৃতীয় ঢেউয়ে মৃত্যু এতদিন বেশ কমই ছিল। তৃতীয় ঢেউয়ে ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২১ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায় শনিবার। রোববার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৪ জন। সোমবার ও মঙ্গলবার মারা যায় ৩১ জন করে। সবশেষ বুধবার ৩৬ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বুধবার বিকেলে অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১২ হাজার ১৯৩ জনের দেহে নতুন করে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। দেশে এ নিয়ে মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৮ লাখ ২৪ হাজার ৯৮৭ জনের শরীরে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৮ হাজার ৪৬১ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়েছেন চার হাজার ২০৩ জন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৫ লাখ ৭৫ হাজার ১৩৭ জন। সুস্থতার হার ৮৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ। গত এক দিনে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে পুরুষ ১৭ ও নারী ১৯জন। বিভাগ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এর পরের অবস্থানেই রয়েছে খুলনা বিভাগ। সেখানে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এছাড়া রাজশাহী ৬, চট্টগ্রাম ৫, বরিশাল ৩ এবং সিলেট ও ময়মনসিংহে একজন করে মারা গেছেন। এদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে ৩০ ও বেসরকারি হাসপাতালে ৫ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। বাকি একজনকে মৃত্যু অবস্থায় হাসপাতালে নেয়া হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এই বিভাগে ২৮ হাজার ৮০১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭ হাজার ৩৭৫টিই পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম ধরা পড়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত তিনটি ঢেউ এসেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের একপর্যায়ে দেশে শাটডাউন নামে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়। ওই সময় বাড়ির বাইরে গেলে জরিমানাও করা হচ্ছিল। এবার বিধিনিষেধ দিলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা প্রতিপালনে তেমন কঠোরতা নেই। করোনা থেকে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষায় ২১ জানুয়ারি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বুধবার সেই ছুটির মেয়াদ আরো দুই সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার।
# ০২.০২.২০২২ #