চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম নগরীতে অবহিতকরণ সভায় বক্তারা

– শিশুকে সুস্থ রাখতে জন্মের পর প্রথম ৬ মাস অবশ্যই বুকের দুধ দিতে হবে

মাতৃদৃগ্ধ বিকল্প আইন ২০১৩ ও এর বিধিমালা ২০১৭, মায়ের দুধের উপকারিতা ও গুড়াঁ দুধের অপকারিতা বিষয়ক অবহিতকরণ সভা আজ ২৯ জানুয়ারী ২০২২ ইংরেজি শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানস্থ চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাবের ককটেল লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. দৃষ্টি শর্মার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ, পরিচালক (এমএনসি এন্ড এইচ) ডা. মোঃ সামসুল হক, জাতীয় পুষ্টিসেবার লাইন ডাইরেক্টর ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ। মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমের মাতৃদৃগ্ধ বিকল্প আইন ২০১৩ ও এর বিধিমালা ২০১৭, মায়ের দুধের অপকারিতা ও গুড়াঁ দুধের অপকারিতা বিষয়ক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতীয় পুষ্টি সেবার ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার (ডিপিএম) ডা. শমসের তিবরিজ মুরাদ খান ও ডিপিএম ডা. নন্দলাল সূত্রধর। উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ হাসান বারী নূর, সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আমিনুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সদস্য রনজিত কুমার শীল। চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক কার্যালয়ের সহযোগিতায় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান অবহিতকরণ সভার আয়োজন করেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জন্মের পরে পরিপূর্ণ সুস্থ সবল শিশুর জন্য মায়ের দুধের কোন বিকল্প নেই। জন্মের সাথে সাথে মায়ের শাল দুধই শিশুর প্রথম টিকা ও খাবার। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সংক্রামক থেকে শিশুকে দ্রæত রক্ষা করে। সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার পর খুব দ্রæত শাল দুধ খাওয়ালে মায়ের রক্তক্ষরণ কম হয় ও গর্ভফুল পড়তে সাহায্য করে। ফলে মা রক্ত স্বল্পতা থেকে রক্ষা পায়। শিশুকে সম্পূর্ণ সুস্থ রাখতে হলে জন্মের পর পর প্রথম ৬ মাস অবশ্যই বুকের দুধ দিতে হবে। এর পর দুই বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি ঘরে তৈরী শিশুর উপযোগী তরল সুষম ও পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার দিতে হবে। তাহলে শারীরিক-মানসিক বিকাশ সাধনসহ শিশুটি বুদ্ধিমান হবে। সন্তান প্রসবের পর কোন মা মারা গেলে শুধুমাত্র ঐ শিশুকে অন্য মায়ের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে বা রেজিষ্ট্রার্ড শিশু চিকিৎসকেরা তাদের ব্যবস্থাপত্রে কারণ উল্লেখ করে বিকল্প হিসেবে ভালোমানের গুঁড়ো দুধ দিতে পারবে।
বক্তারা আরও বলেন, মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে যে সব গুঁড়ো দুধ বাজারে বিক্রি হয় সেগুলো শিশু স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। বুকের দুধের পরির্বতে এগুলো খাওয়ালে শিশুরা অপুষ্টিতে ভূগে ও বিভিন্ন জঠিল রোগে আক্রান্ত হয়। দেশী-বিদেশী এক শ্রেণীর অসাধু কোম্পানী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে শিশুদের জন্য মায়ের দুধের পরির্বতে গুড়োঁ দুধের প্রচার প্রচারণা চালায়। তারা এক শ্রেণির ডাক্তারদের সাথে মাসিক চুিক্ততে শিশুদের জন্য মায়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবস্থাপত্রে গুড়োঁ দুধ লেখানোর জন্য বাধ্য করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাদেরকে হাসপাতাল ও ডাক্তারের চেম্বার বা ক্লিনিক থেকে বয়কট করতে হবে। হাসপাতাল ও কিনিক্লগুলোতে গুড়োঁ দুধের প্রচারণা বন্ধে ডাক্তারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। মা ও শিশুকে সুস্থ রাখতে হলে গুড়োঁ দুধ বর্জন করতে হবে। মায়ের দুধের বিকল্প হিসেবে কোন কোম্পানী তাদের উৎপাদিত গুড়ো দুধের প্রচার-প্রচারণা চালালে তাদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হবে। মাতৃদুগ্ধের বিকল্প গুড়োঁ দুধের বিরুদ্ধে প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে। এ ব্যাপারে পাড়া-মহল্লায় গিয়ে মা-বোনদের জানান দিতে হবে। মাতৃদৃগ্ধ বিকল্প আইন ২০১৩ ও এর বিধিমালা ২০১৭ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকলকে সমন্বয়ের মাধ্যমে এগিয়ে আসতে হবে। সভায় স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত কর্মকর্তা, নার্স, গণমাধ্যম, শিক্ষা অফিস, তথ্য অফিস, এনজিও ওষুধ প্রশাসন ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। ###