চলমান সংবাদ

বিকাশের টেরিটরি ম্যানেজার প্রতারক চক্রের সাথে জড়িত অভিযোগে গ্রেপ্তার

প্রতারকরা নানা উপায়ে বিকাশ গ্রাহকদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা প্রায় ঘটছে। কিন্তু এসব প্রতারণার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করা হলেও ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকতেন বিকাশে কর্মরত কর্মকর্তারা।

এবার তেমনি একজন প্রতারক তানভীর সিরাজী ওরফে সিজারকে (৩৮) গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর সিরিয়াস ক্রাইম বিভাগের একটি টিম। তিনি বিকাশের টেরিটরি ম্যানেজার হিসেবে ঢাকা, গাজীপুর, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জে দীর্ঘ নয় বছর ধরে কর্মরত ছিলেন। তবে গ্রেফতারকৃত প্রতারক তানভীর সিরাজী সরাসরি প্রতারণার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও তিনি বিকাশের এজেন্টদের তালিকা সরবরাহ করতেন প্রতারকদের কাছে। ওই তালিকা ধরেই প্রতারকরা প্রতারণা করতেন। আর প্রতিটি তালিকার বিনিময়ে বিকাশ কর্মকর্তা সিজার পেতেন ১৫-১২ হাজার টাকা।

আজ বুধবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগস্থ সিআইডি কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সিরিয়াস ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার সাইদুর রহমান খান।

bikas

তিনি বলেন, বিকাশ এজেন্টের সাড়ে চার লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একটি ঘটনায় টাঙ্গাইলের সখিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলার বাদী রাসেল ও তার পাশের দোকানদার চিত্ত রঞ্জন টাংগাইল জেলার সখিপুর থানার তক্তারচালা বাজারের বিকাশ ব্যবসায়ী। তাদের বিকাশ এজেন্ট নম্বরে প্রতারকরা ফোন দিয়ে নিজেদের বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয়ে দিয়ে বিভিন্ন অফারের কথা বলে ওটিপি ও পিনকোড নম্বর নিয়ে মোট ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা সেন্ড মানি করে হাতিয়ে নেয়। ওই মামলাটি সিআইডি’র সিরিয়াস ক্রাইম শাখা তদন্তের জন্য অধিগ্রহণ করে এবং তদন্তকালে ঘটনার সহিত জড়িত থাকার অভিযোগে বিকাশ প্রতারক চক্রের ছয় আসামিকে গ্রেফতার পূর্বক আদালতে সোপর্দ করা হয়। তাদের মধ্যে তিন জন আসামি আদালতে ফৌ. কা. বি. আইনের ১৬৪ ধারা মতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন এবং জবানবন্দিতে তাদের সহযোগী বিকাশ প্রতারণার কাজে বিকাশের টেরিটরি ম্যানেজার তানভীর জড়িত আছে বলে স্বীকার করেন।

তিনি আরও বলেন, আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে মো. তানভীর সিরাজী ওরফে সিজারকে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত মো. তানভীর সিরাজী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগ থেকে অনার্স এবং মাস্টার্স পাস করেছেন। তিনি ২০১২ সালে টেরিটরি ম্যানেজার হিসেবে বিকাশে যোগদান করেন। যোগদানের পরবর্তীতে ঢাকা, নেত্রকোনা, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জে কর্মকালীন সময়ে বিকাশ প্রতারকদের টাকার বিনিময়ে বিকাশ এজেন্ট নম্বর সম্বলিত শিট সরবরাহ করতেন। বিকাশ প্রতারকরা তার থেকে প্রাপ্ত এজেন্ট নম্বরের তথ্য সম্বলিত শিট এর নম্বরে ফোন দিয়ে বিকাশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তাদের বিভিন্ন অফারের কথা বলে ওটিপি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে সমূদয় টাকা সেন্ডমানি করে হাতিয়ে নিতেন। তানভীর একজন বিকাশ কর্মকর্তা হয়ে প্রতারকদের এই কাজে টাকার বিনিময়ে তথ্য সহযোগিতা করতেন বলে স্বীকার করেছে। এ ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য প্রতারকদের গ্রেফতারের লক্ষে সিআইডি’র অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান তিনি।