চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে উদীচীর ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

বাংলার চিরায়ত সুর আজ রুদ্ধ। ধর্মান্ধতার মাস্তানির কাছে গুমরে কাঁদছে সম্প্রীতির বাংলাদেশ । তাহলে এ স্বাধীনতা কার? ৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে কারা বিজয় অর্জন করেছিল? বিজয় কি তবে বেহাত হয়ে গেছে? এইসব প্রশ্ন সামনে রেখে উদীচী উদযাপন করছে ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ২৯ অক্টোবর শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টায় চট্টগ্রামের থিয়েটার ইন্সটিটিউটে চট্টগ্রাম জেলা সংসদ উদীচীর ৫৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। উদীচীর শিল্পীদের পরিবেশিত জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরুল আবছার এবং সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করবেন উদীচী, চট্টগ্রাম জেলা সংসদ এর আহবায়ক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী । এর পরপরই পরিবেশিত হবে সংগঠন সঙ্গীত। এরপর শোভাযাত্রা সহকারে শহীদ মিনারে শহীদের উদ্দেশ্যে পুস্পমাল্য অর্পন এবং শহীদ মিনারে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে আলোর মিছিল নিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে আগমন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই উদীচী চট্টগ্রামের শিল্পীকর্মীরা দুটি গান পরিবেশন করে। ডা: অসীম চৌধুরী ও জয়তী ঘোষ এর সঞ্চালনে, উদীচী, চট্টগ্রাম জেলা সংসদ এর আহবায়ক মাহবুবুর রহমান চৌধুরী স্বাগত বক্তব্যে বলেন, যে সাম্প্রদায়িকতাকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা প্রত্যাখান করেছিলাম তা আ আবার জেগে উঠছে। চারপাশে নাগিনীরা বিষাক্ত ফনা তুলছে। কিভাবে তা দমন করা হবে তা রাষ্ট্রযন্ত্র জানে। কিছুদিন আগে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবে হামলা চালানো হয়েছে। এই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছিল জাতীয় চার নীতির ভিত্তিতে। আমরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য যারা মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ দিয়েছিলেন এই দেশ হোক তাদের। সাম্প্রদায়িকতা নিপাত যাক। জয় হোক মানবতার। শুভেচ্ছা বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ কোনো এক ধর্মের মানুষের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেনি। যুদ্ধের সময় সবাই একসঙ্গে লড়াই করেছিলাম। শহীদের রক্তস্রোতে সবার রক্ত মিশে আছে। আমরা চাই সম্প্রীতির বাংলাদেশ হোক। উদীচী রাজপথের সংগঠন। রাজপথে অধিকার আদায়ের সংগ্রামের সাথী হিসেবেই আমরা উদীচীকে চাই সবসময়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হোসাইন কবীর বলেন, এই বাংলাদেশে সব মানুষের মাঝে সাম্য প্রতিষ্ঠার কথা ছিল। ন্যায় বিচার পাবার অঙ্গীকার, গণতন্ত্র ও ধর্মমনিরপেক্ষতার প্রতিশ্রুতিতেই স্বাধীনতার জন্য লড়েছিল বাংলার মানুষ। সমাজে সে সাম্য নেই। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প আশেপাশে। এসব থেকে মুক্তি চাই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ চাই। সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হবে সব অসাম্প্রদায়িক মানুষকে জোটবদ্ধভাবে। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সঙ্গীত ভবনের অধ্যক্ষ কাবেরী সেন গুপ্তা, বিজেসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোদাচ্ছের আলী, নাট্যকর্মী সুজিত চক্রবর্তী, সুচরিত দাশ খোকন, দেবাশীষ রুদ্র, যুব ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আরিফুল্লাহ হাই, বোয়ালখালী শাখা সংসদের সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় দাশ ও সীতাকুণ্ডের সহ-সভাপতি আবুল কাশেম। সঙ্গীত পরিবেশন করেন সৃজামী সাংস্কৃতিক অঙ্গন ও সংগীত ভবন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন শান্তনু মিত্র, দেবাশীষ রুদ্র, শর্মী নন্দী, মৌসূমী চক্রবর্তী, আচরারুল হক , সুজন ধর রাহুল ও হৈমন্তী ধর। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন কথা চন্দ ও সীমা দাশ।

# ২৯.১০.২০২১ চট্টগ্রাম #