‘পাকিস্তানের বোমার জনক’ আব্দুল কাদির খান আর নেই
সাধারণ মানুষের কাছে ‘পাকিস্তানের বোমার জনক’ হিসেবে পরিচিত পরমাণু বিজ্ঞানী আব্দুল কাদির খান আর নেই৷ রবিবার ইসলামাবাদের এক হাসপাতালে মারা যান তিনি৷
৮৫ বছর বয়সি এ বিজ্ঞানী গত আগস্টে কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হন৷ ইসলামাবাদের কেআরএল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ হলে কয়েক সপ্তাহ আগে চিকিৎসকরা তাকে বাসায় ফেরার অনুমতি দেন৷ সম্প্রতি ফুসফুসে জটিলতা দেখা দিলে আবার কেআরএল হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে৷ রবিবার সেখানেই তার জীবনাবসান হয়৷
আব্দুল কাদির খানের মৃত্যুতে পাকিস্তানে শোকের ছায়া নেমে আসে৷ তার প্রশংসা করে, তাকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন অনেকেই৷
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ড. এ কিউ খানের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত৷ তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান পারমাণবিক বোমা তৈরিতে সক্ষম করেছে আমাদের৷ পাকিস্তানের জনগণের কাছে তিনি একজন জাতীয় নায়ক৷’’
পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির প্রতিষ্ঠাতা ড. আব্দুল কাদির খানের জন্ম ১৯৩৬ সালের পহেলা এপ্রিল, ভারতের ভোপালে৷ জীবনের শেষ কয়েকটি বছর প্রায় গৃহবন্দি অবস্থায় কাটাতে হয় তাকে৷
দেশকে পারমাণবিক বোমা তৈরিতে সক্ষম করে ‘চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী’ প্রতিবেশী ভারতের সমকক্ষ করায় পাকিস্তানে ব্যাপক প্রশংসিত ড. খানের বিরুদ্ধে ইরান, লিবিয়া এবং উত্তর কোরিয়ায় পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রযুক্তি পাচারের অভিযোগ ওঠে৷ ২০০৪ সালে অভিযোগ স্বীকারও করেন তিনি৷ পাকিস্তানের সাবেক সেনাশাসক পারভেজ মুশাররফ তাকে ক্ষমা করলেও পাঁচ বছর গৃহবন্দি থাকতে হয় আব্দুল কাদির খানকে৷ এক সময় ঘরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়৷ তবে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই বের হতে হতো৷
পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রযুক্তি পাচারের প্রসঙ্গে ২০০৮ সালে এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. আব্দুল কাদির খান বলেছিলেন, ‘‘পাকিস্তানকে ‘নিউক্লিয়ার নেশন’ বানিয়ে প্রথমবার রক্ষা করেছিলাম আমি, আর তারপর দেশকে আবার বাঁচিয়েছিলাম স্বীকারোক্তি দিয়ে এবং সব দায় নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে৷’’
এসিবি/আরআর (এএফপি)